অধিকাংশ নদী বাঁধ এখনও অটুট। নদীর কূল ছাপানো জলে বহু এলাকা ডুবলেও এ বার তাই আরামবাগ মহকুমার কুখ্যাত বানভাসি চেহারা প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে না স্থানীয় মানুষকে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বুধবার দিনভর নেতা-নেত্রীদের আনাগোনা ছিল আরামবাগে। বহু ত্রাণ সামগ্রী এনেছেন তাঁরা সঙ্গে করে। যদিও ত্রাণ বিলির মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি বলে জানালেন প্রশাসনের কর্তারা। ত্রাণের দাবিও ওঠেনি। তবে বন্যা দেখা দিলে তাঁরা সব রকম ভাবে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা। জল নেমে যাওয়ার পরে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের মধ্যে থাকে, সে জন্য স্বাস্থ্য দফতরও তৎপর বলে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা। ওআরএস, ব্লিচিং পাউডার বিলি করা হয়েছে।
এ দিন খানাকুল ১ ব্লকের পোল এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অরোরা খাল উপচে মায়াপুর-গড়েরঘাট রাস্তার বেশ কিছু অংশের উপর দিয়ে জল বইছে। তবে বাস চলছে গড়েরঘাট থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জগদীশতলা পর্যন্ত। তারপর রাস্তার উপর দিয়ে প্রায় ফুট তিনেক জল বইছে প্রবল তোড়ে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেল ‘হেলিকপ্টার জাল’ তৈরির ধুম পড়ে গিয়েছে গাঁয়ের লোকের মধ্যে। এই জাল ব্যবহার করে বন্যার জলে ফি বছর মাছ ধরতে অভ্যস্থ এলাকার মানুষ। বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হলেও পরিস্থিতি যেহেতু অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, ফলে মাছ ধরার ইচ্ছেটাও প্রবল। |
জলমগ্ন আরামবাগ থেকে গড়েরঘাট যাওয়ার রাস্তা। ছবি: মোহন দাস। |
খানাকুল ২ ব্লকের মাড়োখানা এখনও পর্যন্ত সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত। বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের তলায়। রূপনারায়ণ, মুণ্ডেশ্বরী এবং দ্বারকেশ্বর নদীর জল বাঁধ ছাপিয়ে ঢুকেছে। তবে ডিভিসি এ দিন জল ছাড়ার পরিমাণ কমানোয় নতুন করে জল বাড়েনি কোথাও। দিনভর কড়া রোদের তেজও আশা জুগিয়েছে মানুষের মনে।
আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “পরিস্থিতি সর্বত্রই নিয়ন্ত্রণে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে। প্রয়োজনে কোথায় কোথায় মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে, সে সবও দেখে রাখা হয়েছে।” পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা খানাকুলে দফায় দফায় ঘুরে গিয়েছেন।
সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক অসীমা পাত্র, ইকবাল আহমেদ, পারভেজ রহমান, তপন দাশগুপ্ত, হুগলি জেলা সভাধিপতি শেখ মেহবুব রহমান, তৃণমূলের জেলা নেতা দিলীপ যাদব-সহ অনেকে এসেছিলেন খানাকুলে। মঙ্গলবার রাতে ঘুরে যান মন্ত্রী বেচারাম মান্নাও। |