|
|
|
|
প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করার দাবিতে হোর্ডিং, ঘোর অস্বস্তি কংগ্রেসে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাস্তার ধারে লাগানো একটা হোর্ডিংকে ঘিরে অস্বস্তির চোরাস্রোত বইছে কংগ্রেসের অন্দরমহলে।
লখনউয়ের সিভিল লাইন্স এলাকায় মঙ্গলবার একটি হোর্ডিং টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তাতে লোকসভা ভোটে ফুলপুর কেন্দ্র থেকে প্রিয়ঙ্কা বঢ়রাকে প্রার্থী করা ও দলের প্রচারের দায়িত্ব দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। পোস্টারে লেখা, ‘মাইয়া অব রহতি বিমার, ভাইয়া পর বড় গয়া ভার, প্রিয়ঙ্কা ফুলপুর সে বনো উম্মিদবার, পার্টি কা করো প্রচার, কংগ্রেস কি সরকার বনাও তিসরি বার’ (মা এখন অসুস্থ, ভাইয়ের কাঁধে বড় বোঝা, প্রিয়ঙ্কা ফুলপুর থেকে প্রার্থী হোন, দলের হয়ে প্রচার করুন, তৃতীয় বার কংগ্রেসের সরকার বানান)। আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ এই হোর্ডিংকে ঘিরেই এখন সমস্যায় কংগ্রেস নেতৃত্ব।
লোকসভা ভোটে প্রিয়ঙ্কা বঢ়রাকে প্রার্থী করা ও দলের প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে জল্পনাটা শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন ধরেই। কিন্তু এই জল্পনা গোড়াতেই থামিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে দু’দিন আগে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করা হয় কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে। কিন্তু তার পরেও এই জল্পনায় হাওয়া দেওয়া এবং কংগ্রেস সভানেত্রীর অসুস্থতার কথা এ ভাবে হোর্ডিঙে লেখায় ইলাহাবাদের দুই নেতাকে সাসপেন্ড করেছে কংগ্রেস। ওই হোর্ডিং রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। |
|
ইলাহাবাদের পথে প্রিয়ঙ্কার ছবি-সহ সেই হোর্ডিং। পিটিআইয়ের ছবি। |
কিন্তু তাতেও অস্বস্তি কমছে কই! কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, হোর্ডিঙের বিষয়টি ক্ষুদ্র ঘটনা। আসল সমস্যা হল প্রিয়ঙ্কাকে কেন্দ্র করে দলের অন্দরেই সাম্প্রতিক নানা ঘটনা। জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের পর থেকে কংগ্রেসের অন্দরে অনেকেরই ধারণা হয়েছে যে, এ বার রায়বরেলী কেন্দ্র থেকে সনিয়ার পরিবর্তে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হবেন প্রিয়ঙ্কা। কেন না সনিয়া সম্প্রতি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে প্রিয়ঙ্কাই রায়বরেলী কেন্দ্রের কাজ দেখভাল করেন। প্রতি সপ্তাহে সেখানকার ব্লক কংগ্রেসের নেতাদের নিয়ে তিনি কখনও দিল্লিতে কখনও বা রায়বরেলীর ফুরসতগঞ্জের বাগানবাড়িতে বৈঠক করেন। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রিয়ঙ্কার প্রার্থী হওয়া নিয়ে অসুবিধা নেই। কিন্তু যে ভাবে তাঁকে গোটা দেশে লোকসভা ভোটের প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে নামানোর প্রস্তাব উঠছে কোনও কোনও মহল থেকে, তাতে দল বড় সমস্যায় পড়তে পারে। কারণ, প্রিয়ঙ্কা এমনিতেই বেশ জনপ্রিয়। তার উপর, তিনি দেশ জুড়ে কংগ্রেসের হয়ে প্রচারে নামলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে। তা শুধু দলের মধ্যে সীমিত থাকবে না। মানুষের মনেও তখন প্রশ্ন জাগবে, লোকসভা ভোটে কাকে সামনে রেখে লড়ছে কংগ্রেস। এই অবস্থায় ওই দুই নেতাকে সাসপেন্ড করে কিছুটা কড়া বার্তাই দিতে চেয়েছেন নেতারা।
রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতাদের সন্দেহ, প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে এই জল্পনা তৈরির নেপথ্যে কংগ্রেসেরই কিছু প্রবীণ নেতার হাত রয়েছে। এঁদের কারও রাহুলের কাজের ধারা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। কেউ আবার মনে করছেন, রাহুল একা নরেন্দ্র মোদীর মোকাবিলা করতে পারবেন না। কেউ কেউ আবার এর পিছনে বিজেপি-র হাত থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন।
প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে জল্পনা ঠেকাতে দলের প্রধান মুখপাত্র অজয় মাকেন আজ বিবৃতিতে বলেন, “এটা নিতান্তই অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র।” ওই বিবৃতির পরেই দলের দুই নেতাকে সাসপেন্ড করা হয়। কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর, হোর্ডিং-কাণ্ডের পরে এমন সম্ভাবনাও থাকছে যে, এ বার রায়বরেলী সফরে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা নিজেই তাঁকে ঘিরে যাবতীয় জল্পনা খারিজ করে দেবেন। |
|
|
|
|
|