|
|
|
|
কয়লা কেলেঙ্কারি |
বিড়লার নামে এফআইআরে উদ্বিগ্ন মন্ত্রীরাও |
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি |
এক দিকে কয়লা কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুললেন প্রাক্তন কয়লাসচিব পি সি পারেখ। যা হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। আবার অন্য দিকে, কুমারমঙ্গলম বিড়লার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ায় উদ্বিগ্ন শিল্পমহল ও রাজনৈতিক নেতারা।
গত কালই দায়ের করা এফআইআর-এ সিবিআই বলেছে, ওড়িশায় কয়লাখনি বণ্টনের সময়ে আদিত্য বিড়লা গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান কুমারমঙ্গলম বিড়লার সংস্থা হিন্দালকোকে বিশেষ সুবিধা করে দিয়েছিলেন পারেখ। কিন্তু পারেখ আজ বলছেন, কয়লা বণ্টনে কোনও দুর্নীতি তিনি করেননি। তা ছাড়া, তিনি কোনও সংস্থাকে অতিরিক্ত সুবিধা দিয়েছেন বলে মনে হলে প্রধানমন্ত্রীই সে প্রস্তাব খারিজ করে দিতে পারতেন। কারণ তখন কয়লা মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন মনমোহন সিংহই।
পারেখের কথায়, “বিড়লার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিড়লার প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছিল। আমাকে বলা হয়েছিল, প্রস্তাব আর এক বার খতিয়ে দেখতে। তবে কয়লাখনি বণ্টনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পাওয়ার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।” তাই পারেখ দাবি করেছেন, এ ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার দায় মূলত বর্তায় প্রধানমন্ত্রীর উপরেই। তাঁর মন্তব্য, “আমি বলছি না যে উনিই প্রধান ষড়যন্ত্রী। তবে উনি অন্য অভিযুক্তদের চেয়ে অনেক বেশি দোষী।”
পারেখ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় লোকসভা ভোটের আগে নয়া অস্ত্র পেয়ে গিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা যশবন্ত সিন্হা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীই এক নম্বর অভিযুক্ত। পারেখকে বলছি, নির্ভয়ে সব বলুন।” আর এক নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর বক্তব্য, “কয়লা মন্ত্রকের অন্য মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরকেও তদন্তের আওতায় আনা উচিত।”
অবশ্য পাল্টা সরব হয়েছে কংগ্রেসও। দলের নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বলেছেন, “উনি এক জন স্বাধীন ব্যক্তি। যা খুশি বলতে পারেন। তবে সিবিআইয়ের সামনে বললেই পারতেন। বিজেপি বোধহয় ভুলে গিয়েছে, এনডিএ জমানায় একই ভাবে কয়লাখনি বণ্টন করা হত।”
এ দিকে, কয়লা কেলেঙ্কারিতে যে ভাবে কুমারমঙ্গলম বিড়লার নাম জড়িয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সচিন পায়লট ও আনন্দ শর্মা। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন বলেও শিল্পমন্ত্রী আনন্দ শর্মার মন্তব্য, “যথেষ্ট তথ্য হাতে নিয়ে এই ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে কিনা, সেটা দেখতে হবে। নইলে ভয় এবং অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” সরাসরি সিবিআই-এর নাম না-করলেও শর্মার মতে, লোক দেখানো এমন কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়, যাতে লগ্নিকারীদের আস্থা ধাক্কা খায়। কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রী সচিন পায়লটেরও বক্তব্য, এই ঘটনা লগ্নিকারীদের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতকে কার্যত সমর্থন করছে শিল্প মহলও। কুমারমঙ্গলম বিড়লার বিরুদ্ধে সিবিআই এফআইআর দায়ের করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একাধিক শিল্পপতি। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন, অজয় পিরামল, টি ভি মোহনদাস পাই, দীপক পারেখ। ইনফোসিসের বোর্ড মেম্বার পাইয়ের কথায়, “মনে হচ্ছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি যা খুশি তাই করেছে। যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ না-থাকলে শিল্পপতিদের এ ভাবে নিশানা করাটা অর্থনীতির পক্ষে খারাপ হবে।”
সিবিআই-এর অবশ্য দাবি, স্ক্রিনিং কমিটির সিদ্ধান্ত বদল করে পারেখ বিড়লাদের সুবিধা করে দিয়েছিলেন। পারেখের দাবি, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হয় সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে, নয়তো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সাহস ওদের নেই।” |
|
|
|
|
|