সংখ্যা নয়, বরং গঙ্গার ঘাটের ব্যবহার বাড়িয়েই দুর্গাপুজোর বিসর্জনকে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল করতে চায় রাজ্য সরকার।
বিসর্জনের পরে গঙ্গার ঘাটে প্রতিমার কাঠামো, সাজ-সরঞ্জাম, ফুল পড়ে থাকাটাই ছিল চেনা ছবি। সরকারি উদ্যোগেই তা বদলে গিয়েছে। তবে বাজে কদমতলা ঘাট, বাগবাজার বা জাজেস ঘাটে বেশি সংখ্যায় প্রতিমা বিসর্জন হওয়ায় কিছুটা সমস্যা থেকেই গিয়েছিল। অতিরিক্ত পরিমাণে বিসর্জন হওয়ার কারণে যেমন বর্জ্য জড়ো হয়, তেমনই যান চলাচল সামলাতেও হিমশিম খায় পুলিশ। প্রশাসন সূত্রের খবর, এই সমস্যা মেটাতেই গঙ্গার ঘাটের ব্যবহার বাড়াতে চায় সরকার।
ঘটনাচক্রে এ বছর পুজোর আগে সমন্বয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই দইঘাট-সহ কয়েকটি গঙ্গার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের সংখ্যা বেড়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলছেন, বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বিসর্জন দেওয়ার জন্য শহরের পুজো কমিটিগুলিকে গঙ্গার ঘাট নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নেওয়া হবে। বস্তুত, এ বছরই তার কিছু নির্দশন মিলেছে। দেবাশিসবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনেই দইঘাটে বিসর্জনের সংখ্যা বেড়েছে।” |
শুধু অনুরোধই নয়, গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটের ব্যবহার বাড়াতে পরিকাঠামোগত উন্নয়নও করা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, কাঠামো ও অন্যান্য বর্জ্য রাখার জায়গা কম থাকায় গত কয়েক বছর ধরে নিমতলা ঘাটে কম বিসর্জন হচ্ছিল। এ বছর ওই ঘাটে ক্রেন ও জলপথ পরিবহণের একটি বার্জ রাখা হয়েছে। বিসর্জনের পর কাঠামো ও বর্জ্য ক্রেন দিয়ে তুলে ওই বার্জে রাখা হচ্ছে। এর ফলেই ওই ঘাটে তুলনায় বেশি সংখ্যক বিসর্জন হয়েছে।
নির্দিষ্ট ভাবে বিসর্জনের ব্যবস্থা করার পক্ষপাতী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও। ঘটনাচক্রে, তাঁর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতেই বিসর্জনে গঙ্গা-দূষণ নিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। বলা হয়েছিল, প্রতিমা বিসর্জনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গঙ্গা থেকে যাবতীয় কাঠামো ও সাজ-সরঞ্জাম তুলে ফেলতে হবে। তার পর থেকেই এই ব্যবস্থা শুরু হয়। দেবাশিসবাবু বলেন, “এ বছর বাবুঘাটের পাশাপাশি নিমতলায় বার্জ ও ক্রেন ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের বছর আরও কিছু ঘাটে তা ব্যবহার করা হতে পারে।” |