পিলিন নিয়ে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে। সেই একই দক্ষতায় আর্থিক বৃদ্ধি নিয়েও পূর্বাভাস অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম মেলাতে পারলে ভাল। নইলে অর্থবর্ষের শেষে তার দৌড় থামবে পাঁচ শতাংশের নীচেই। অন্তত তেমনটাই মনে করছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। এই বিশ্বাসে অনড় থেকেই এ দিন চলতি আর্থিক বছরের জন্য ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের ৬.১% থেকে ছাঁটাই করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। জানিয়েছে, আগামী এপ্রিলের শেষে তা দাঁড়াবে ৪.৭%। ঠিক যে ভাবে সম্প্রতি বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশের নীচে থাকবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ), এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের মতো বিভিন্ন সংস্থা।
কিন্তু এই সংস্থাগুলি যা-ই বলুক, অর্থমন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটি ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ক্রমাগত দাবি করে চলেছে যে, চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি থাকবে পাঁচ শতাংশের উপরেই। এমনকী তা সাড়ে পাঁচ শতাংশের আশেপাশে পৌঁছে যেতে পারে বলেও তারা আশাবাদী।
বিশেষত গত এক মাসে এই বিশ্বাসের কথা বার বার বলেছেন অথর্মন্ত্রী পি চিদম্বরম। একই মতের শরিক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজন প্রমুখ।
এঁদের সকলেরই মতে, রফতানি কিছুটা মুখ তুলেছে। বৃদ্ধির মুখ দেখেছে পরিকাঠামো। বাড়ছে শিল্পোৎপাদন। কমছে ঘাটতি। বর্ষা পর্যাপ্ত হওয়ায় কৃষি উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনাও প্রবল। ফলে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। আর এ সবের মিলিত ফল হিসেবেই ৫% টপকানোর পথ খুঁজে পাবে বৃদ্ধি।
যদিও সরকারি মহলের এই আশ্বাসকে এ দিন সমর্থন করেনি বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট। সেখানে তারা জানিয়েছে, ভারতে বৃদ্ধির পথে কাঁটা মন্থর উৎপাদন, ঝিমিয়ে পড়া বিনিয়োগ এবং দেশ জুড়ে ব্যবসার পরিবেশে আস্থার অভাব। সেই সঙ্গে চড়া মূল্যবৃদ্ধি, চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন ঘাটতি বেড়ে যাওয়া বা টাকার পড়তি দামের মতো বিষয়ও অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি কেড়ে নিচ্ছে। যার জেরে এই অর্থবর্ষে মাত্র ৪.৭% বৃদ্ধির মুখই দেখার সম্ভাবনা। পরের বছর তা হতে পারে ৬.২%। অথচ এর আগে তারাই পূর্বাভাস দিয়েছিল এই অর্থবর্ষে ৬.১% এবং পরেরটিতে ৬.৭% বৃদ্ধির।
তবে একটা জায়গায় বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্টের সঙ্গে খানিকটা মিল পাওয়া গিয়েছে রঘুরাম রাজনের বক্তব্যের। এ দিনই তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা পরিপূর্ণ গতি পাবে চলতি অর্থবর্ষের শেষের দিকে। একই কথা বলেছে বিশ্বব্যাঙ্কও। |