মানুষের চাহিদা মেনে মাস খানেক আগেই চালু হয়েছিল দু’টি বাস। ঘটা করে তার উদ্বোধনও করেছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, চালু হওয়ার কয়েক মাস যেতে না যেতেই সিউড়ি-শিলিগুড়ি রুটের ওই বাস দু’টির আর দেখা মিলছে না। বর্তমানে একটি মাত্র বাস (সপ্তাহে তিন দিন), তা-ও কেবল মালদহ পর্যন্ত যাতায়াত করছে।
তবে শুধু শিলিগুড়ি রুটটিই নয়, গত চার মাস আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে সিউড়ি-কৃষ্ণনগর এবং সিউড়ি-কলকাতা রুটের দু’টি এসি বাসও। তারও বহু আগে থেকেই বন্ধ হয়ে আছে বোলপুর-সিউড়ি-দুমকা, সিউড়ি-দুর্গাপুর, সিউড়ি-বিষ্ণপুর, সিউড়ি-মুকুটমণিপুর, সিউড়ি-দিঘা রুটের বাসগুলিও। অথচ সেই ১৯৮৭ সালে ঢাক ঢোল পিটিয়ে সিউড়ি শহরে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ওই ডিপোটির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। তখন মাত্র ৯টি বাস দিয়ে চালু হলেও দু’ বছরের মধ্যেই বিভিন্ন রুটে ৪২টি বাস চলতে শুরু করে। ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে এগারোটিতে। যদিও ওই ডিপোর অফিসার ইনচার্জ মৃত্যুঞ্জয় ভট্টাচার্যের দাবি, ওই সংখ্যা বর্তমানে ১৪টি। তার মধ্যে ৭টিই চলে সিউড়ি-কলকাতা রুটে। তিনি বলেন, “বেহাল রাস্তার কারণেই কলকাতা রুটের এসি বাস দু’টি চালানো হয় না। তা ছাড়া তেমন যাত্রীও হয় না। একই কারণে বন্ধ হয়ে রয়েছে শিলিগুড়ি ও কৃষ্ণনগর রুটের বাসও।”
পর্যাপ্ত বাস নেই। এ দিকে কর্মী বাড়ন্ত। ওই ডিপোয় চালকই আছেন ৫১ জন! অফিসার ২৬ জন। সব মিলিয়ে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ১১৬। এ ছাড়া রয়েছেন ১৭ জন ঠিকাকর্মীও। ডিপো সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে বার্ষিক ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয় হলেও আয় হয় তার মাত্র অর্ধেক টাকা। কর্মীদের আয়ের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বেতনের ৬৯-৭১ শতাংশ দেয়। বাকিটা আসার কথা ডিপোর আয় থেকেই। কিন্তু তেমন আয় না হওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে কর্মীদের বেতন মেটানো যায়নি। এ নিয়ে মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “বেতন সংক্রান্ত ব্যাপারে যা বলার কোচবিহার হেড অফিস বলবে।”
এ সবের উপরে যুক্ত হয়েছে সমাজবিরোধীদের উৎপাত। উপযুক্ত গেট না থাকায় ডিপোর ভেতরে রাতে সমাজবিরোধীরা আড্ডা বসান বলে অভিযোগ। এমনকী, দিনের বেলা সরকারি ডিপোয় ব্যক্তিগত মালিকাধীন গাড়িকেও বেআইনি ভাবে পার্ক করতে দেখা যায়। সব মিলিয়ে নানা দিক থেকেই সিউড়ির ওই ডিপো যে কার্যত ধুঁকছে, নিত্যযাত্রী থেকে স্থানীয় বাসিন্দা এ অভিযোগ সকলের। কর্তৃপক্ষের কেউই যা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |