রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল প্রায় দেড় বছর আগে। কিন্তু বারাবনির রুনাকুড়া ঘাট থেকে আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়ক পর্যন্ত রাস্তার সংস্কারের কাজ আজও শেষ হল না। এ দিকে রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ, তাতে বৃষ্টির জল জমে পথ চলা দায় হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে তাঁদের দাবি।
পূর্ত দফতরের কাছে সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারের উপরে দায় চাপিয়েছে পূর্ত দফতর। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাসের দাবি, দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য পূর্ত দফতরকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। রাস্তার বেহাল দশা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে পূর্ত দফতরকে চিঠি দিয়েছেন বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সড়ক ও ভূতল পরিবহণ দফতরকে চিঠি পাঠিয়েছেন আসানসোলের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী।
পূর্ত দফতরের আসানসোল শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, রুনাকুড়া ঘাট থেকে আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সেন র্যালে মোড় পর্যন্ত এই রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ কিলোমিটার। দেড় বছর আগেই রাস্তাটিকে ২৩ ফুট চওড়া করে তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা অনুমোদনও করে কেন্দ্রীয় সড়ক ও ভূতল পরিবহণ দফতর। বারাবনির বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে আসানসোলের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রাস্তা এটি। |
রুনাকুড়া ঘাট থেকে জাতীয় সড়কগামী রাস্তায় উঠে গিয়েছে পিচ।—নিজস্ব চিত্র। |
রাস্তাটি সংস্কার হলে ঝাড়খণ্ড ও দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সঙ্গেও এই রাস্তাটির সংযোগ থাকবে। ফলে শিল্পাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অন্যতম প্রধান সহায়ক হয়ে উঠবে এই রাস্তা। পূর্ত দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে,ওই রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের সরকারি আদেশ বেরোয় ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর। দিন কয়েকের মধ্যে কাজ শুরু করার কথা ছিল। জানানো হয়েছিল, ২০১৩ সালের মাঝামাঝি কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বছর শেষ হতে চললেও কাজ শেষ হয়নি। পূর্ত দফতরের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে অর্থাৎ ২০১২ সালের অগস্ট মাসে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাটি নতুন করে চওড়া করার কাজ শুরু হওয়ায় যত্রতত্র বিশাল খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির জলে গর্তগুলি ভরে থাকায় সমস্যা হচ্ছে যান চলাচলে। এমনকী জল জমে থাকায় গর্ত কতটা গভীর তা আন্দাজ করতে না পেরে প্রায়ই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। বিধায়ক বিধানবাবু জানান, বারাবনি বিধানসভা অঞ্চলটির আর্থ সামাজিক পরিকাঠামো বিশেষ উন্নত নয়। এই সড়কটি নির্মাণ করা হলে এলাকার সঙ্গে আন্তঃরাজ্য সম্পর্ক গড়ে উঠবে। উন্নতি হবে আর্থ সামাজিক পরিকাঠামোর। বিধানবাবুর অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে হচ্ছে। তিনি বলেন, “পূর্ত দফতর ও মহকুমাশাসকের কাছে যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার দাবি করেছি।” একই মত সাংসদ বংশগোপালবাবুরও। তাঁর দাবি, দ্রুত কাজ শেষ করার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক ও ভূতল পরিবহণ দফতরকে চিঠি দিয়েছেন তিনি।
পূর্ত দফতরের অবশ্য দাবি, ২০১৪ সালের মাঝামাঝি রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এই কাজে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতিতেই রাস্তার কাজ ঢিমেতালে হচ্ছে।” ঠিকাদার সংস্থার আবার পাল্টা দাবি, বৃষ্টির জন্য কাজ ব্যাহত হচ্ছে। |