দামোদরের জলে গৃহহীন বহু, খোলা হল ত্রাণশিবির
ডিভিসি ও কংসাবতী জলাধারের ছাড়া জলে ভাসল বাঁকুড়ার উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের বেশ কিছু গ্রাম ও রাস্তাঘাট। ঘর ছাড়তে হয়েছে শতাধিক পরিবারকে। বিভিন্ন স্কুল ও উঁচু বাড়ির ত্রাণ শিবিরে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “কয়েকটি জায়গায় ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। গৃহহীনদের সেখানে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর আমাদের নজর রয়েছে।”
পুজোর ক’দিন ধরে বাঁকুড়া জেলার প্রায় সর্বত্রই বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় এ জন্য কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর বেশি এসেছে। অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ড থেকে নেমে আসা জলে দামোদর নদ লাগোয়া বড়জোড়া, সোনামুখী প্রভৃতি ব্লকের কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার রাত থেকেই ডিভিসি-র দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়। যার জেরে ফুলে ফেঁপে ওঠে বড়জোড়া, সোনামুখী, পাত্রসায়র, ইন্দাসের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দামোদর নদ। জল ঢুকে পড়ে সোনামুখী ও বড়জোড়া ব্লকের কিছু এলাকায়।
টানা বৃষ্টিতে সারেঙ্গার বানপুরে ভেঙে পড়েছে ঘর।— নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনামুখীর লালবাবা চর ও উত্তর চর জলমগ্ন হয়েছে। সোনামুখীর বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “লালবাবা চর, উত্তর চর ও উত্তর বেশিয়া গ্রামের প্রায় ৪০০ বাসিন্দাকে উদ্ধার করে স্থানীয় শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও উঁচু বাড়িগুলিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” সোনামুখীর মতো বড়জোড়া ব্লকের সীতারামপুর ও পখন্না মানাচর প্রভৃতি এলাকা থেকেও মানুষ জনকে সরিয়ে স্থানীয় স্কুল ও পাকাবাড়িতে রাখা হয়েছে। পখন্না মানাচর থেকে প্রায় ১০০টি ও সীতারামপুর গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। বড়জোড়া ব্লকের বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান বলেন, “সোমবার রাত থেকেই উপকূলবর্তী গ্রামগুলির লোকজনকে আমরা নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি। তাঁদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”
কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ক’দিন ধরেই জল ছাড়া হচ্ছে। ফলে খাতড়া থেকে সাহেববাঁধ হয়ে রানিবাঁধ ও রাইপুর যাওয়ার রাস্তায় কেচন্দা ঘাটের কজওয়েটি অধিকাংশ দিন জলমগ্ন ছিল। টানা বৃষ্টিতে ওই কজওয়ের উপর জল বেড়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ। খাতড়া থেকে ঘুরপথে মুকুটমণিপুর হয়ে রানিবাঁধ, রাইপুর যাচ্ছে গাড়ি।
বৃষ্টির জলের তোড়ে সারেঙ্গা ব্লকের খয়েরপাহাড়ি, বড়্গাড়রা, কৃষ্ণপুর, গাংনালা, মাজুরিয়া, বেলেপালের মতো কয়েকটি গ্রামে কয়েশো কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশ কিছু কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়েছে। গৃহহীন পরিবারগুলিকে স্থানীয় স্কুলে ও পঞ্চায়েত অফিসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মঙ্গলবার পর্যন্ত ১১৫টি পরিবারকে খয়েরপাহাড়ি, বড়গাড়রা, গাংনালা, কৃষ্ণপুর হাইস্কুল ও সারেঙ্গা পঞ্চায়েতের হল ঘরে রাখা হয়েছে। খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।” বিকেলে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সারেঙ্গার ত্রাণশিবিরগুলি পরিদর্শন করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.