গ্রামে প্রথমবার বিদ্যুৎ সংযোগ আসার পর প্রতিটি বিদ্যুতের খুঁটিতে লাগানো হয়েছিল আলো। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই ছিল বিদ্যুতের সংযোগ। নিয়ম করে রোজ টিভিও দেখতেন সবাই। কিন্তু দু’বছর আগে বাজ পড়ে বিকল হয়ে যায় ট্রান্সফর্মার। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি এখনও। গ্রামবাসীদের দাবি, বহু বার বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েও লাভ হয়নি। ফলে বুদবুদের দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীনারায়ণপুর চক গ্রাম এখনও আঁধারেই।
আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামে প্রায় ১৭টি পরিবার থাকে। গ্রামবাসীরা জানান, গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছিল বহু বছর আগেই। গ্রামের প্রতিটি পরিবার বিপিএল তালিকাভুক্ত। ফলে গ্রামের সকলেই বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছিলেন বিনামূল্যে। গ্রামবাসীরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে চাঁদা তুলে প্রত্যেকটি বিদ্যুতের খুঁটিতে আলো লাগিয়েছিলেন। কিন্তু দু’বছর আগে বাজ পড়ে ট্রান্সফর্মার খারাপ হয়ে যাওয়ার পর থেকে অন্ধকারেই রয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণপুর চক গ্রাম। গ্রামবাসী লখীরাম টুডু, সোমনাথ সোরেনদের দাবি, ট্রান্সফর্মার খারাপ হয়ে যাওয়ার পর থেকে বহু বার বিদ্যুৎ দফতরের কাছে সমস্যার কথা বলা হয়েছিল। এমনকী লিখিত ভাবেও আবেদন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরিবর্তন হয়নি পরিস্থিতির। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনেক সময় তাঁদের সঙ্গে দফতরের কেউ কথা বলতে চাননি। |
বিকল পড়ে ট্রান্সফর্মার।—নিজস্ব চিত্র। |
কী বলছে বিদ্যুৎ দফতর? পানাগড় বিদ্যুৎ দফতরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের স্টেশন ম্যানেজার তাপসকুমার মণ্ডল বলেন, “লক্ষ্মীনারায়পুর চক গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকার খবর আমার জানা নেই। আমাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেওয়া হলে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।” সমস্যার কথা জানাতে গেলে অনেক বার গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলা হয়নি, এমন অভিযোগ উঠেছে। তাপসকুমারবাবু এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমার অফিসের দরজা সব সময় খোলা আছে। কেউ এলে দেখা করতেই পারেন।”
বিদ্যুৎ নেই। ফলে কেরোসিন তেলে হ্যারিকেন অথবা লণ্ঠনের আলোয় পড়তে হচ্ছে পড়ুয়াদের। মানকর কলেজের বি এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মঙ্গল সোরেন জানান, একবার বিদ্যুৎ দফতর থেকে কিছু টাকা চাওয়া হয়। গ্রামবাসীরা সে ব্যবস্থা করে দফতরে টাকাও দিয়ে আসে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তিনি আরও জানান, গ্রামে বিদ্যুৎ আসার পর বহু বাড়িতে টিভি, ফ্যান-সহ নানা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছিল। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার জন্য পড়েই নষ্ট হচ্ছে সেগুলি।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নষ্ট হয়ে গিয়েছে এলাকার বহু বিদ্যুৎপরিবাহী তার। বিদ্যুৎ এলে ফের নতুন করে বানাতে হবে ওই তারগুলি। বাসিন্দাদের অভিযোগ কতটা সত্যি তা গ্রামে গেলেই বোঝা যায়। পুরনো ট্রান্সফর্মারটি এখনও লাগানো আছে। তার চারিদিকে নানা লতা, গুল্ম গজিয়ে উঠেছে। মরচে পড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের তারগুলিতে।
|
খোয়া যাওয়া মোবাইলের আইএমইআই নম্বর অনুসন্ধান করে ছিনতাইবাজদের ধরে ফেলল দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার পুলিশ। ৭ অগস্ট স্টেশন রোডে রাতে গাছে বেঁধে রেখে পরপর ছ’টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। মারধরও করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ চারজন ছিনতাইবাজকে গ্রেফতার করেছে। একজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, সে দিন মোট পাঁচটি মোবাইল ছিনতাই হয়। তারই দু’টি আইএমইআই নম্বর অনুসন্ধান করে দু’টি মোবাইলের সন্ধান হয়। ডিভিসি মোড়ের কাছে নজরুলপল্লী থেকে গ্রেফতার করা হয় দলের পান্ডা কৃষ্ণা বাদ্যকরকে। দুর্গাপুরের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৫টি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে কাদা রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় জিতেন্দ্র যাদব, কৃপন রাম এবং গোলাই শেখকে। পুলিশ জানিয়েছে, রাজেশ রাজভর নামের আর এক দুষ্কৃতীর খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জেনেছে, গোলাই শেখের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার মজলিশপুরে। বছর তিনেক ধরে সে দুর্গাপুরে আছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোহার সামগ্রী কিনে বেনাচিতির এলাকার একটি কাঁটায় সরবরাহ করে। মাস তিনেক আগে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ দুর্গাপুর থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় সে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কৃষ্ণা বাদ্যকর এদের সবাইকে নিয়ে সে দিন রাতে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। ইতিমধ্যেই সেদিনের ঘটনার অভিযোগকারীরা দুর্গাপুর সংশোধনাগারে কৃষ্ণা বাদ্যকরকে শনাক্ত করেছেন। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “দলে আরও এক দুষ্কৃতী ছিল। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। দ্রুত তাকে ধরে ফেলা হবে।” |