|
|
|
|
অনেকে ভাবে টুইটারে লিখলেই ছবি হিট হবে
তাঁর ছবি ‘রংবাজ’ সুপারহিট। তিনি নিজেও টি২০ মেজাজে। তাই একাদশীর দিন সকালে
তাঁর সাউথ সিটির ফ্ল্যাটে নন-স্ট্রাইকার এন্ড থেকে প্রত্যেক বলে দেব-কে স্টেপ আউট করতে দেখলেন ইন্দ্রনীল রায় |
শুভ বিজয়া।
শুভ বিজয়া আপনাকে। শুভ বিজয়া বাংলার প্রত্যেকটি মানুষকে। সবার জীবন যেন দারুণ ভাল কাটে, এটাই প্রার্থনা করছি।
বাকিদের জীবন কেমন কাটবে জানি না, কিন্তু আপনার জীবন তো দারুণ কাটছে।
টাচউড, সত্যিই দারুণ কাটছে। এই পুজোটা ওয়াজ ওয়ান অব মাই বেস্ট। ‘রংবাজ’ সুপারহিট, চারিদিকে হাউজফুল। সত্যি স্পেশাল ফিল করছি।
‘রংবাজ’ তো শুনলাম সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
হ্যাঁ, ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড, ফোর্থ ডে-র সব কালেকশন ভেঙে দিয়েছে ‘রংবাজ’। আজকাল দেখছি নিজেই নিজের রেকর্ড ভাঙি।
তা হলে ফাইনাল ইক্যুয়েশন কী দাঁড়ালো? বক্স অফিসের আসল বস কে?
হা হা হা। আসল ‘বস’ কী ‘রংবাজ’ সব সময় আমাদের পাবলিক। কেউ যদি মনে করে সে ‘বস’ কী ‘রংবাজ’ হয়ে গিয়েছে তা হলে ভুল ভাবছে।
তবে এটা ভেবে ভাল লাগছে, মানুষকে বোঝাতে পেরেছি কোনটা সত্যি হিট, কোনটা মিথ্যে প্রচার করা হিট।
এত বড় হিটই যদি হয় তা হলে টুইটারে কালেকশনের ফিগারটা লিখে টুইট করলেন না তো?
আমি পছন্দ করি না এই টুইট গেমটা। পুরো ব্যাপারটা ভীষণ নোংরা। অনেকে ভাবে টুইটারে লিখলেই ছবি হিট হবে। মুম্বইতে এমন লোকেদের দিয়েও টুইট করানো হচ্ছে যারা ছবিটা দেখেও না। আর টুইট দেখে কেউ ছবি দেখতে আসে নাকি। ওই ফালতু সব টুইটের থেকে অশোক ধানুকা কী রানা সরকারের কনগ্র্যাচুলেটরি ফোন কলগুলো আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর কী বলব বলুন তো, নিজের রেকর্ড নিজেই ব্রেক করছি। এটা নিয়ে কী টুইট করব!
একাদশীর দিন সকালে আপনি তো বেশ স্টেপ আউট করছেন।
তা একটু করছি, কারণ সত্যি কথাগুলো মানুষকে একটু জানানো দরকার। বহু লোক বড্ড বেশি কথা বলছিল। তাদের একটা জবাব দেওয়া দরকার ছিল। এই রকম সাইক্লোন, বৃষ্টির মধ্যেও সব শো হাউজফুল ইজ আ গ্রেট ফিলিং। আর তা ছাড়াও আর একটা কারণে ছবিটা আমার কাছে স্পেশাল... |
|
ছবি: দেবাশিস মিত্র |
কী সেটা?
আমি কোয়েল আর রানের বিয়েতে কোনও গিফ্ট দিইনি। গিফ্টের কথা বললেই রানে বলত, “শুধু ‘রংবাজ’টা হিট করিয়ে দে। আমাদের গিফ্ট ওটা হবে।” খুব ভাল লাগছে এটা ভেবে ফাইনালি কোয়েল আর রানেকে গিফ্টটা দিতে পারলাম।
‘রংবাজ’ সুপারহিট হওয়ার পরে জিৎ ফোন করেছিলেন আপনাকে?
না। ও বোধহয় দেশে নেই।
এটা তো মানেন যে, দেব-জিৎ যুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রিতে সব চেয়ে বড় ওপেন সিক্রেট।
(হেসে) কেউ যদি পায়ে পা লাগিয়ে যুদ্ধ করতে চায়, আমি বসে থাকব না কি? দেখুন এই বছরে দু’টো ছবি করেছি, ‘খোকা ৪২০’ আর ‘রংবাজ’। দু’টোই সুপারহিট। ডিসেম্বরে আমার জীবনের সব চেয়ে বড় ছবি ‘চাঁদের পাহাড়’ মুক্তি পাচ্ছে। তাই ও সব ‘যুদ্ধ’ নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না। আর যুদ্ধর উত্তর তো কথা দিয়ে হয় না, ছবি দিয়ে হয়। জিৎ আমার সিনিয়র। ওকে আমি সম্মান করি। আর আমি মনে করি আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তো ছোট। সেখানে কম্পিটিশন থাকলেও তার মধ্যেও যেন একটা রেসপনসিবিলিটি থাকে।
‘রংবাজ’ এত বড় হিট হল, জিৎকে কোনও মেসেজ দেবেন না?
জীবনে হার-জিত লেগেই আছে এই কথাটাই বলব।
পরশু তো আবার ব্যাংকক চলে যাচ্ছেন?
হ্যাঁ, পরশু ব্যাংকক যাচ্ছি টোনিদা-র ‘বুনো হাঁস’য়ের জন্য। আমি খুব এক্সাইটেড ছবিটা নিয়ে।
অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীও খুব এক্সাইটেড।
হ্যাঁ, টোনিদা খুব এক্সাইটেড। আমার চরিত্রের নাম অমল। সে কলকাতা-ব্যাংককের স্মাগলিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সে কী ভাবে জড়িয়ে পড়ে, কী ভাবে পালিয়ে বেড়ায় তা নিয়ে ছবিটা।
আপনাকে দিয়ে কি টোনি, বালতিগুড়ি, হাওড়ার দর্শককে পেতে চাইছেন?
হ্যাঁ, আর আমিও তো টোনিদাকে ধরে বালিগঞ্জের দর্শককে পেতে চাইছি। এই ম্যারেজটাই বাংলা ছবির ফিউচার।
‘মিশর রহস্য’ দেখুন। বুম্বাদার একটা হিউজ অ্যাপিল আছে। শহুরে দর্শকদের কাছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের একটা অ্যাপিল আছে। দু’টো ক্লিক করে গেছে বলেই তো ‘মিশর রহস্য’ এত ভাল চলছে।
আর টোনিদা এমন একটা মানুষ যার সঙ্গে আমি বহু দিন কাজ করতে চেয়েছি। তার পর আমার প্রতিবেশী, দিনের পর দিন টোনিদার সঙ্গে কাটিয়েছি, খুব পজিটিভ একটা ভাইব পাই আমি।
বাংলাদেশেও তো যাচ্ছেন নভেম্বরে।
হ্যাঁ, এই প্রথমবার যাব। আমি বাংলাদেশ থেকে প্রচুর ফ্যানের মেসেজ পাই সারাদিনে। তাঁদের সঙ্গে দেখা হবে এটা ভেবেই দারুণ লাগছে।
একটু ‘চাঁদের পাহাড়’য়ে ফিরি?
অফ কোর্স।
সিংহের সঙ্গে আপনার ছবি দেখে অনেকে ভেবেছেন ওটা নাকি কম্পিউটার গ্রাফিক্সে করা...
হ্যাঁ, জানি। দাঁড়ান না। আর তো দু’ মাস। তার পর আর কেউ বলবে না।
সিংহের মুখোমুখি যখন ছিলেন, অনেস্টলি কী ভাবছিলেন, বলুন তো?
আমি পুরো ‘জোন’এ ছিলাম। যখন সিংহটা দু’ ফুট দূরে আমি শুনতে পাচ্ছিলাম কমলেশ্বরদা চেঁচাচ্ছিলেন, “দেব, স্টপ ইট। আর না।” আমি শুনিনি কমলদার কথা। আমি তখন শুধু সৌমিক (হালদার)কে বলছি সৌমিক আমি না বলা পর্যন্ত কিন্তু ক্যামেরা বন্ধ করবে না তুমি।” আজকে কমলদাকে সরি বলছি। কিন্তু তখন ফুল অব অ্যাড্রিনালিন রাশ ছিল। |
চাঁদের পাহাড়: বাইরে সিংহ ভেতরে দেব |
ভয় লাগেনি?
সেই মুহূর্তে লাগেনি। কিন্তু মনিটরে শটটা দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। আমার জীবনের ওটাই সবচেয়ে ইমপর্ট্যান্ট শট। আমি শুধু এইটুকুই এনশিওর করছি আজ থেকে তিরিশ বছর বাদেও এই সিনটা নিয়ে মানুষ কথা বলবে। এই সিনটা দেখে লোকে এটা অন্তত বলবে, “এটা দেব ছাড়া কেউ করতে পারত না।”
এ ছাড়াও বহু কিছু শিখলাম চাঁদের পাহাড় করতে গিয়ে।
কী রকম?
শিখলাম কী করে ভয়কে জয় করা যায়।
আর একটু ডিটেলে বলবেন?
আমার ভীষণ ভার্টিগো ছিল। ‘চাঁদের পাহাড়’ করতে গিয়ে হেন কোনও পাহাড় নেই যার ধারে গিয়ে আমাকে দাঁড়াতে হয়নি। পুরো ভার্টিগোটাই চলে গেল আমার। এ ছাড়া অনেক কিছু নিয়ে ইনসিকিওরিটি ছিল। সেগুলো জানি না কী অদ্ভূত ভাবে কেটে গেল। অনেক কিছু নিয়ে কমপ্লেক্স ছিল। সেগুলো এই ছবিটা করতে করতেই মুছে গেল মন থেকে। বলছি না এই ছবিটা আমার জীবন সম্পর্কে মূল্যবোধটা পালটে দিয়েছে।
এটা কি খুব কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখে হল?
এক্স্যাক্টলি তাই। রোজ একবার দেখা হত মৃত্যুর সঙ্গে। হোটেল থেকে রোজ সকালে বেরোনোর সময় প্রণাম করে ঠাকুরকে বলতাম, “ভগবান আজকের দিনটা দেখো যেন বেঁচে ফিরতে পারি।”
মৃত্যুকে নয় রোজ দেখলেন, কিন্তু কলকাতায় যে প্রায় থাকেননি, আপনার গার্লফ্রেন্ডদের তো দেখতে পাচ্ছিলেন না।
(হেসে) গার্লফ্রেন্ডই নেই। কাকে দেখব?
ঠিক বলছেন?
সত্যি বলছি।
তা হলে সাউথ আফ্রিকাতে যে দেখলাম সমানে বিবিএম আর হোয়াটসঅ্যাপ করছেন...
দূর ওগুলো এমনি। আর বিবিএম হোয়াটসঅ্যাপে প্রেম করা যায় না। ওগুলো মিথ। প্রেম করতে হলে সময় দরকার।
রাইমা সেন তো সাউথ আফ্রিকার জঙ্গল থেকে পাঠানো প্রচুর বিবিএম পেয়েছেন।
(হেসে) হা হা হা। রাইমা আমার খুব ভাল বন্ধু। তাই পেত। আর দেখুন আমাকে ভাল দেখতে। আমি সিঙ্গল। অনেকেই হয়তো আমার সঙ্গে প্রেম করতে চায়। জোকস অ্যাপার্ট। এই সবই বাজে কথা। রাইমা ইজ এ ভেরি গুড ফ্রেন্ড।
এটা আপনার আগে আরও এক লক্ষ সাতষট্টি হাজার বার অন্য স্টারেরা বলে ফেলেছেন।
আরে সত্যি বলছি। এখন প্রেম নিয়ে ভাবছি না। শুধু কাজ নিয়ে ভাবছি। দু’টো সুপারহিট দিয়েছি এই বছর। আর বাকি ‘চাঁদের পাহাড়’।
‘চাঁদের পাহাড়’ নিয়ে মানুষের এক্সপেকটেশন কিন্তু স্কাই হাই।
জানি আমি। আমাকে পুলিশের টপ অফিসার থেকে বড় বড় আই এ এস অফিসার থেকে ডাক্তার সবাই বলেছেন আমার এই একটা ছবি তাঁরা প্রথম দিন দেখতে চান। আই অ্যাডমিট, ‘চাঁদের পাহাড়’ ইজ এ হিউজ প্রেশার অন মি। এত প্রেশার আমার আগে কোনও দিন হয়নি। ‘চাঁদের পাহাড়’ আমার অ্যাসিড টেস্ট।
শেষ প্রশ্ন। এত কিছু তো বললেন জিৎকে। কালকে সকালে টুইটারে গালাগালি শুরু হতে পারে এটা জানেন তো?
হ্যাঁ, হ্যাঁ জানি। তবে টুইটারে গালাগালি দেব বলে তো ছবি করতে আসিনি।
টুইটারে আমি আমার ফ্যান, আমার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারি, গল্প করি, ইন্টার্যাক্ট করি। আর আগেই বলেছিলাম না আপনাকে, টুইটারে লিখলে যেমন ছবি হিট হয় না, সেই রকমই টুইটারে গালি দিলেও আমি বা আমার ফ্যানদের কিছু আসে যায় না। |
|
|
|
|
|