|
|
|
|
বোধনেই বাংলো বরাদ্দ তিন কর্তার
সুপ্রকাশ চক্রবর্তী • কলকাতা |
চিন্তাভাবনা চলছিল অনেক দিন ধরেই। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের তিন শীর্ষ আধিকারিকের বাসস্থান হিসেবে আলিপুরে তিনটি পৃথক সরকারি বাংলোকে চিহ্নিত করল সরকার। ওই তিন কর্তা হলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল। তবে আপাতত কোনও ‘মুখ্যমন্ত্রী নিবাস’ নির্দিষ্ট করতে রাজি হননি মমতা।
তিন প্রশাসনিক কর্তার জন্য একেবারে কাছাকাছি আবাসের ব্যবস্থা করার পিছনে জরুরি প্রয়োজনের তাগিদটাও কাজ করেছে। এক সরকারি মুখপাত্রের কথায়, রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের ওই তিন শীর্ষ আধিকারিক কাছাকাছি বাংলোয় থাকলে জরুরি প্রয়োজনে কাজের সমন্বয় করতে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে বলেই মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব বা ডিজি কবে থেকে তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট বাংলোয় থাকতে শুরু করবেন, বৃহস্পতিবার সেই বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
অনেক রাজ্যেই প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের পদমর্যাদার সঙ্গে মানানসই পৃথক সরকারি আবাসন বরাদ্দ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীদের জন্যও নির্দিষ্ট সরকারি আবাসগৃহ আছে বহু রাজ্যে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এত দিন শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিক, এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর জন্যও পৃথক কোনও সরকারি আবাসগৃহ বরাদ্দ ছিল না। তাঁদের বেশির ভাগই নিজের নিজের বাড়িতে থাকতেন। কেউ কেউ সরকারি ফ্ল্যাটে। এখনকার মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবও তার ব্যতিক্রম নন। |
|
|
|
সঞ্জয় মিত্র |
বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় |
জি এম পি রেড্ডি |
|
প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু সল্টলেকের ইন্দিরা ভবনে দীর্ঘদিন কাটালেও সেটি কখনওই মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি আবাস হিসেবে চিহ্নিত হয়নি। আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের পুরো সময়টা কাজ করেছেন বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ে নিজস্ব ফ্ল্যাটে থেকেই।
রাজ্য পুলিশের ডিজি-র জন্য পৃথক সরকারি আবাসন থাকলেও মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের জন্য এত দিন আলাদা কোনও সরকারি বাংলো ছিল না। তাঁরা থাকতেন নিজের নিজের বাড়িতে বা সরকারি ফ্ল্যাটে। অবশেষে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার অন্তত রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের জন্য পৃথক সরকারি নিবাস বরাদ্দ করার কথা ভাবল। দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের মতো অভিজাত এলাকায় ওই প্রশাসনিক কর্তাদের জন্য বাংলোগুলি চিহ্নিত করে সরকারি নির্দেশও বেরিয়েছে। এখনকার মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি তো বটেই, ভবিষ্যতে যে-সব আধিকারিক ওই তিন শীর্ষ পদে বসবেন, তাঁরা নির্দিষ্ট সরকারি বাংলোতেই থাকবেন।
নতুন সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে আলিপুরে ভবানী ভবনের পাশের একটি সরকারি বাংলো। সেটি এত দিন রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সরকারি আবাস হিসেবে নির্দিষ্ট ছিল। রাজ্য পুলিশের পূর্বতন ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় অবশ্য কখনওই তাঁর জন্য বরাদ্দ সেই সরকারি আবাসনে থাকেননি। তিনি থাকতেন উত্তর কলকাতায় তাঁর পৈতৃক বাড়িতে। ডিজি-র বাংলোয় থাকতেন আর এক পুলিশকর্তা, বর্তমানে স্বরাষ্ট্র দফতরের অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওএসডি) ভি ভি থাম্বি।
রাজ্য পুলিশের বর্তমান ডিজি জি এম পি রেড্ডির নতুন সরকারি আবাস হিসেবে গোপালনগরের দিক থেকে ভবানী ভবনে যাওয়ার পথে আলিপুরের বেকার রোডের একটি বাংলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেটি এখন কারা দফতরের আইজি-র জন্য বরাদ্দ রয়েছে।
তার পাশেই আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সুপারের জন্য বরাদ্দ বাংলোটি নির্দিষ্ট হয়েছে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। আইজি (কারা) এবং আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সুপারিনটেন্ডেন্টের জন্য নতুন আবাস বরাদ্দ করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|