|
|
|
|
রেলভাড়া কমাতেই হবে, হুঁশিয়ারি তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বর্ধিত রেলভাড়াকে হাতিয়ার করে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়া করল তৃণমূল। রেলের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার না-করলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
পুজোর সময়ে সাধারণ ভাবে আন্দোলন থেকে দূরে থাকলেও পূর্ব ঘোষণা মতো বৃহস্পতিবার, ষষ্ঠীর দুপুরে বর্ধিত রেল ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে পথে নেমেছিল তৃণমূল। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে পূর্ব রেলের সদর দফতর ফেয়ারলি প্লেস পর্যন্ত মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভা করে তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী সেখানেই জানান, কেন্দ্রের যাতে টনক নড়ে, পুজোর পরে এমন আন্দোলনই তাঁরা করবেন! সরাসরি লোকসভা ভোটের কথা উল্লেখ না করেও সুদীপবাবু বলেছেন, “ইউপিএ-২ সরকারের পরে আর ইউপিএ-৩ সরকারকে দেশের মানুষ আসতে দেবে না। কিন্তু তার আগে বর্ধিত রেল ভাড়া প্রত্যাহারের আন্দোলনের যে ঝড় বাংলা থেকে উঠেছে, তাকে টাইফুনে পরিণত করতে হবে!”
লোকসভা ভোটের আগে রেল ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রদের দাবিকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তৃণমূল যে হাতিয়ার করছে, এ দিন তাদের কর্মসূচিতেই তা স্পষ্ট। দলের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি তো ছিলেনই, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধানসভার সরকারি মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের প্রধানেরাও ছিলেন। সুদীপবাবু বলেন, “পুজোর পরে আমাদের আন্দোলন উত্তাল আকার নেবে।” তাঁর বক্তব্যের সূত্র ধরে শুভেন্দু জানান, দশমী ও ঈদের পরেই রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ আন্দোলন নতুন করে শুরু হবে। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা আন্দোলনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবেন। ছাত্র-যুবদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন শুভেন্দু।
সুদীপবাবুর অভিযোগ, “লোকসভাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার রেল ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। দিল্লির সরকারকে আমরা বুঝিয়ে দেব, তাদের অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারিতা তৃণমূল মেনে নিচ্ছে না!” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মুকুলবাবু রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেল ভাড়া বাড়াতে দেননি বলে উল্লেখ করে সুদীপবাবুর বক্তব্য, “কেন ভাড়া বাড়ানোর দরকার নেই, তা ওঁরা যুক্তি দিয়ে তখন বলেছিলেন। দিল্লির কংগ্রেস সরকার সেই যুক্তি থেকে শিক্ষা নিলে আজ ভাড়া বাড়ানোর দরকার হত না!”
ষষ্ঠীর দুপুরে আবহাওয়া পরিষ্কার থাকায় এ দিন অনেকেই পুজোর শেষ বাজার ও প্রতিমা দর্শনে বেরিয়েছিলেন। তার ফলে যানজট ছিলই। তার সঙ্গে তৃণমূলের মিছিলে মধ্য কলকাতায় যান চলাচল কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিছু ক্ষণ। জনতার হয়রানির জন্য দুঃখপ্রকাশ করে এ দিনের সভায় সুদীপবাবু বলেন, “মানুষের একটু কষ্ট হয়েছে ঠিকই। কিন্তু চির কালের জন্য কংগ্রেস মানুষের বুকে যে পাথর (বর্ধিত রেল ভাড়া) চাপাতে চলেছে, সেই পাথর বুকে নিয়ে পথ চলা খুবই কষ্টের! ফলে বৃহত্তর স্বার্থে আমরা যে আন্দোলন করছি, তাতে মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করছেন!” |
|
|
|
|
|