পঞ্চমীর সকালে বেলেঘাটার চাউলপট্টি রোডে এক মৃৎশিল্পীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শিল্পীর পরিজনেদের অভিযোগ, চতুর্থীর রাতে প্রতিমার গড়ন নিয়ে পুজো-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়েছিল। তাঁরা শিল্পীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সে কারণে আত্মহত্যা করেন শিল্পী। পুলিশের কাছে পুজো কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে। পুজো উদ্যোক্তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে চাউলপট্টি রোডের খালের ধারে অস্থায়ী ছাউনিতে সুশীল পাল (৬৭) নামে ওই শিল্পীর গামছার ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, সুশীলবাবুর বাড়ি স্থানীয় বারোয়ারিতলা রোডে। তিনি খালের ধারে ছাউনি গড়ে কারিগর লাগিয়ে প্রতিমা গড়তেন। পুজো উদ্যোক্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ বলেছে, ওই শিল্পী আর্থিক সঙ্কটে ছিলেন। সেটিই মৃত্যুর কারণ কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।
যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্থানীয় পাগলাডাঙা রোডের সেই পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, সুশীলবাবুর সঙ্গে তাঁদের মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। বুধবার সকালে প্রতিশ্রুতিমতো তিনি অগ্রিম নেওয়া টাকা ফেরতও দিয়েছিলেন। উদ্যোক্তাদের তরফে সুনীল হাতি জানান, এর আগেও তাঁরা সুশীলবাবুর কাছ থেকে প্রতিমা নিয়েছেন। এ বার প্রতিমার গড়ন ঠিকমতো না হওয়ায় তাঁরা অন্য জায়গা থেকে প্রতিমা আনতে চান। সুনীলবাবু বলেন, “অগ্রিমের ৬০০০ টাকা শিল্পীর থেকে ফেরত চাওয়া হয়েছিল। পরে শুনি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।”
সুশীলবাবুর ভাই মনোতোষবাবু জানান, উদ্যোক্তারা রাতে প্রতিমা নিতে এসে প্রতিমার গড়নে খুঁত আছে বলে চিৎকার শুরু করেন। শিল্পী তাঁদের জানান, সময় দিলে ষষ্ঠীর মধ্যে প্রতিমা ঠিক করে দেবেন। কিন্তু উদ্যোক্তাদের কয়েক জন রাজি হননি। বচসা চলতে থাকে। শেষে অগ্রিম টাকা ও গাড়ি ভাড়া বাবদ ৭ হাজার টাকা ফেরত দিতে রাজি হন সুশীলবাবু। বুধবার সকালে তা দিয়েও দেন। তার পর থেকেই অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন তাঁর দাদা। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সুশীলবাবুর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। |