যজ্ঞের ফোঁটা না পেয়ে শুরু পুজো
কোথাও পুজো পাঁচশো বছরের পুরানো। আবার কোথাও তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো। আগের মতো না হলেও বনেদি বাড়ির পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন সদস্যেরা।
বুদবুদের মানকরের বড় কবিরাজ বাড়ির পুজো প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের। বর্তমান সদস্য সুজিত দাশগুপ্ত জানান, বর্ধমান রাজার কাছে জমিদারি পাওয়ার পরে এখানে বাস শুরু করেন পূর্বপুরুষেরা। তখন থেকেই পুজো চলছে। আগে এখানে জাঁকজমকের সঙ্গে পুজো হত। এলাকার মানুষজন এখানে পুজোর চার দিন খাওয়াদাওয়া করত। কিন্তু এখন আপ সে সব হয় না। মানকরের বিশ্বাস বাড়ির পুজো এ বার ৩১২ বছরে পড়ল। বাড়ির সদস্য তপনকুমার বিশ্বাস জানান, তাঁদের পুজো হয় শাক্ত মতে। প্রতিমা হয় একচালার।
কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরের মণ্ডলবাড়ির পুজো প্রায় তিনশো বছর পুরনো। বাড়ির সদস্য গুরুদাস মণ্ডল জানান, পূর্বপুরুষ রামধন মণ্ডলকে একবার শ্বশুরবাড়িতে দুর্গাপুজো না করার জন্য ব্যঙ্গ করা হয়েছিল। গুরুদাসবাবু বলেন, “এর পরেই রামধনবাবু পুরী গিয়েছিলেন দুর্গা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এমনকী ঠাকুর প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত তিনি উপবাসে ছিলেন। সেখানে সমুদ্রে স্নান করিয়ে দুর্গা নিয়ে এসেছিলেন।” বংশের প্রবীণ সদস্য সাধনকুমার মণ্ডলের দাবি, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে এখনও রামধনবাবুর নামে একটি স্বর্ণকলস রাখা আছে। নবমীর দিন গ্রামের বাইরে তিলুইচণ্ডী তলায় পুজো হয়। কথিত রয়েছে, সেই তিলুইচণ্ডী লক্ষ্মণ সেনের আমলের। নবমীর দিন কুমারীপুজো দেখতে আশপাশের গ্রামের মানুষ ভিড় জমান।
আসানসোল কোর্ট মোড়ের একটি মণ্ডপের প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
কাঁকসার গোপালপুরে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো প্রায় তিনশো বছরের। এলাকায় তা হাকিমবাড়ির পুজো নামে পরিচিত। পরিবারের বর্তমান সদস্য প্রিয়নাথবাবু জানান, নিয়ম মেনে আজও শরিকি ভাগ না করে ভোগ রান্না করা হয় এক হাঁড়িতে। বৈষ্ণব মতে পুজো। একশো আট পদ্ম এবং অষ্টমীতে নীলপদ্ম লাগে।
রানিগঞ্জের সিহারসোল গ্রামে কাঞ্জিলাল বাড়ির পুজো প্রায় পাঁচশো বছরের পুরনো। নিমচা গ্রামে অষ্টমীর দিন যজ্ঞের ফোঁটা না পেয়ে সেই দিন গ্রামে ফিরে এসেছিলেন এই বাড়ির এক আত্মীয়। অষ্টমীর দিন থেকে শুরু করা হয় পুজো। এখানে অষ্টমীর দিন থেকে সিঁদুর খেলা হয়। সিহারসোলেই হাজরা বাড়ির পুজো প্রায় তিনশো বছরের। রানিগঞ্জ শহরে রক্ষিত ও দাসমোদক বাড়ির পুজোও দু’শতকের পুরনো। দেবীকে গয়না পরানো দেখতেই এলাকাবাসী ভিড় জমান এখানে। রানিগঞ্জ কুমারবাজারে কুণ্ডু ও পাল বাড়ির পুজোও বহু বছরের। রানিগঞ্জ শহরে যমজয়ী মন্দিরে ভট্টাচার্য ও পাল বাড়ির পুজোয় অষ্টমীর দিনে সকলে এক লাইনে দাঁড়িয়ে পুজো দেন মানুষ। রানিগঞ্জে রতিবাটি গ্রামে দাঁ ও রায় বাড়ির পুজোও আড়াইশো বছরের পুরনো।
জামুড়িয়ার ধাসনা গ্রামে মিশ্র বাড়ির পুজোয় অষ্টমীতে সন্ধিপুজোর সময়ে থালার উপরে রাখা চিনির মণ্ড ফেটে যাওয়াই মূল আকর্ষণ। চাঁদা গ্রামে পালবাড়ির পুজো ১৮০ বছরের। বীজপুর গ্রামে তফাদার বাড়ির পুজোও প্রায় দু’শো বছরের। চার দিন নানা অনুষ্ঠান হয় সেখানে। বীজপুরেই আচার্য বাড়ির দু’শতকের পুরনো পুজোয় ১৯৯৬ সাল থেকে বৈষ্ণব মতে পুজো হচ্ছে। বালানপুরে সিংহ বাড়িতে স্থায়ী মন্দিরে পুজো হয়। নবমীতে এলাকার লোকজনকে নিয়েই অনুষ্ঠান হয়। বালানপুরে বাউরি পরিবারে আগে ঘট পুজো হলেও এখন মূর্তি পুজো করা হয়। অন্ডালে দাস সরকার বাড়ির পুজো ৪৮২ বছরের। জামুড়িয়ায় আকলপুর গ্রামে দত্তবাড়ি, জামুড়িয়া গ্রামে কবিবাড়ি, শ্রীপুর গ্রামে রায় বাড়ি, পরিহারপুরে গঙ্গোপাধ্যায়-ঘটক বাড়ির পুজোও বেশ প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী। পাণ্ডবেশ্বরে কুমারডি গ্রামে রায়চৌধুরী বাড়ি, পাণ্ডবেশ্বর গ্রামে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোও তিন শতকের বেশি প্রাচীন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.