হোম থেকে কিশোরীর দেহ উদ্ধার
রকারি হোমের শৌচাগার থেকে এক মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে সমাজ কল্যাণ দফতরের অধীন রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার ‘সূর্যোদয়’ মূক ও বধির আবাসিক হোমে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম তালমণি কিস্কু (১৫)। তার বাড়ি রায়গঞ্জ থানার ভাটোল জিনাতপুর এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই কিশোরী আত্মঘাতী হয়েছে। যে হেতু শৌচাগারের দরজা ভেতর তেকে বন্ধ ছিল না না তাই অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হয়েছে কি না তাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক বলেন, “হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই কিশোরী বাড়িতে যেতে চাইছিল। পরিবারের লোকজন ওকে নিয়ে যাননি। সে জন্য কিশোরীটি অবসাদে ভুগছিল। অবসাদ থেকেই সে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। তবে শৌচাগারের দরজা খোলা থাকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। হোম কর্তৃপক্ষ ও জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির কর্তাদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।” হোমের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সুপ্তি সরকারেরও ধারনা, তালমণি আত্মঘাতী হয়েছে। তিনি বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরে তালমণি বাড়িতে যেতে চাইছিল। আমরা সে কথা শিশু কল্যাণ সমিতিকে জানিয়েছিলাম। মনে হচ্ছে, বাড়ি যেতে না-পারায় হতাশায় ভেঙে পড়েছিল তালমণি।” কিন্তু, মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরী দীর্ঘ সময় শৌচাগারে থাকলেও হোমের কর্মীরা খেয়াল করেননি কেন? সুপারের জবাব, “মহিলা হস্টেলের দুজন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে ওি দুটি পদে লোক নিয়োগ হয়নি। ফলে, ঠিকঠাক নজরদারি হচ্ছে না।”
হোম সূত্রের খবর, তালমণির বাবা ভাঙ্গিয়াবাবু ও মা ফুলমণিদেবী দিল্লিতে দিনমজুরি কাজ করেন। বাড়িতে আর কেউ নেই। গত ১০ মে কর্ণজোড়া এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তালমণিকে উদ্ধার করে জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেয় পুলিশ। সেই থেকে সে ওই হোমেই রয়েছে। বর্তমানে হোমের মহিলা আবাসিকের সংখ্যা ৩৩ জন। তাদের মধ্যে ১৭ জন মূক ও বধির কিশোরী। বাকিরা ভারসাম্যহীন ও নানা ঘটনায় উদ্ধারের পরে আশ্রয় পেয়েছে। তাদের দেখাশোনার জন্য একজন মেট্রন ও একজন অস্থায়ী মহিলা কর্মী রয়েছেন।
এদিন সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ ডাল, ভাত ও সব্জি খেয়ে শৌচাগারে ঢোকে তালমণি। প্রায় ১ ঘন্টার মাথায় হোমের কয়েকজন মূক ও বধির আবাসিক কিশোরী শৌচাগারে গিয়ে ঠেলে দরজা খুলে তালমণির দেহ দেখে। হোমের কর্মীকে ইঙ্গিতে বিষয়টি জানায়। হোমের তরফে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। বিকালে উত্তর দিনাজপুরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট অমৃত কুমার বিশ্বাসের উপস্থিতিতে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানায়, শৌচাগারের শিক থেকে গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তালমণির মৃতদেহটি ঝুলছিল। মালদহ মডিক্যাল কলেজের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ নিখিলেশ মন্ডল বলেন, “মানসিক ভারসাম্যহীন সকলে বুদ্ধিভ্রষ্ট হয় না। তাঁদের অনেকেরই বোধ ও বিচার বুদ্ধি থাকে। মানসিক ভারসাম্যহীনরা হতাশা, অবসাদে বেশি ভোগেন। এ সব কারণে কোনও ভারসাম্যহীন ব্যক্তির আত্মহত্যা করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।”
উত্তর দিনাজপুরের শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুনীলকুমার ভৌমিকও ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “যতদূর জানি, তালমণিকে ওর বাবা-মা মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল্লিতে চলে যান। কিছুদিন আগে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন মেয়েকে তাঁরা আর ফেরত নেবেন না। যাই হোক আমরা ওই প্রতিবেশীর মাধ্যমে দিল্লিতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.