শিক্ষক অপ্রতুল, ছাড়পত্র পেল না বাড়তি আসন |
সোমা মুখোপাধ্যায় • কলকাতা |
শিক্ষক-চিকিৎসকের অভাবে রাজ্যে মেডিক্যাল শিক্ষার মান নিয়ে আকছার অভিযোগ ওঠে। এ বার সেই যুক্তিতেই পিজি-র সার্জারি বিভাগের চারটি আসনকে ছাড়পত্র দিল না মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)। এমসিআই পরিদর্শকেরা স্পষ্টই জানিয়ে গিয়েছেন, এই পরিকাঠামোয় স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা হয় না। বিষয়টি নিয়ে ঘোরতর অস্বস্তিতে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা এমসিআই-এর কাছে খানিকটা সময় চেয়ে নেবেন। তিনি বলেন, “শিক্ষক-চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক জায়গাতেই কম। কিন্তু আমরা কী করব? রাতারাতি তো সংখ্যাটা বাড়ানো যাবে না। নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ খোলা হচ্ছে।
পিজি-র সার্জারি বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরে আসন সংখ্যা ১৫। ২০১০ সালে ১১ থেকে বেড়ে সংখ্যাটা ১৫ হয়েছিল। এমসিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী, কোনও মেডিক্যাল কলেজের আসন বাড়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে আসনগুলিকে অস্থায়ী অনুমোদন দেওয়া হয়। তিন বছরের পঠনপাঠন শেষে যখন পরীক্ষা হয়, তখনই চূড়ান্ত অনুমোদনের প্রশ্ন আসে। যথাযথ পরিকাঠামো রয়েছে কি না খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। দিন কয়েক আগে এমএস পরীক্ষা চলাকালীন পরিদর্শন হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তখনই শিক্ষক-চিকিৎসকের সংখ্যা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পরিদর্শকেরা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক-চিকিৎসক ছাড়াই কী ভাবে পঠানপাঠন চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ভাবে পড়ালে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের শিক্ষা অসম্পূর্ণ থাকবে বলেও মন্তব্য করেন এক পরিদর্শক। এর পরে ফিরে গিয়েই পিজি কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে তাঁরা জানিয়ে দেন, এই পরিকাঠামোয় ওই বর্ধিত আসনগুলিকে ছাড়পত্র দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
পিজি তথা ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রের অবশ্য দাবি, এটা নিছক ‘টেকনিক্যাল ভুল’-এর কারণে হয়েছে।
তিনি বলেন, “সার্জারির অর্থ শুধু জেনারেল সার্জারি নয়। এর সঙ্গে পেডিয়াট্রিক সার্জারিও আছে। শিক্ষক-চিকিৎসকের হিসেব পাঠানোর সময়ে পেডিয়াট্রিক সার্জারির চিকিৎসক সংখ্যাটা লেখা হয়নি। তাই এমসিআই ভুল বুঝেছে। নতুন করে হিসেব পাঠাচ্ছি।”
তবে কি সার্জারি বিভাগে শিক্ষক-চিকিৎসকের সংখ্যা নিয়ে সমস্যাই নেই? প্রদীপবাবুর জবাব, “সহকারী প্রোফেসর পদে প্রয়োজনের তুলনায় কম চিকিৎসক। পদোন্নতির পরে ওই সংখ্যাটা দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।” |