খড়দহের রাসখোলা ঘাটে এ বার প্রতিমা বিসর্জন হবে কি না তা নিয়ে নানা মহলে সংশয়। কারণ, বিসর্জনের জন্য সম্প্রতি নির্মিত ঢালটি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে।
খড়দহের এক মাত্র ভাসান ঘাট রাসখোলা। প্রায় তিন বছর আগে গঙ্গার ঘাট সংস্কার করে কেএমডব্লিউএসএ। তৎকালীন বামবোর্ডের অনুরোধে ঘাট সংস্কারের সঙ্গে বিসর্জনের জন্য কংক্রিটের ঢাল তৈরি করা হয়। বছর ঘুরতেই বানের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে ঢালের অংশ। ঢালের অনেকটাই এখন গঙ্গায়।
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় শ’খানেক পুজোর ভাসান হয় এই ঘাটে। টিটাগড়ের কিছু পুজোর ভাসানও হয়। খড়দহের ‘সূর্য সেন সর্বজনীন দুর্গোৎসব’ কমিটি’র সদস্য স্বপন সাহার কথায়, “ভাসান সরানো সম্ভব নয়। পুরসভাকে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।” অন্য পুজো কমিটির সদস্য সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় জানান, রাসখোলার আশপাশে অনেকটা জায়গা থাকায় প্রতিমা নিয়ে আসা বড় লরি ঘোরাতে বিশেষ সমস্যা হয় না।
বাসিন্দারা জানান, দেওয়াল তুলে ঢাল তৈরির সময়ে চর ছিল। পরে গঙ্গা সরে আসে। খড়দহ পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের তাপস পাল বলেন, “জলের ধাক্কায় দেওয়াল ভাঙতে শুরু করে। ষাঁড়াষাঁড়ির বানের সময়ে দেওয়ালটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” উপপ্রধান তৃণমূলের শ্যামলকুমার দেবের কথায়, “ঘাট থেকে কিছু দূরে কাঠের পিলারের উপরে ১৫ বছরের পুরনো কাঠের জেটি অক্ষত। মনে হয় ঢালটির প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল।”
ত্রুটির কথা স্বীকার করে কেএমডব্লিউএসএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার আশিস মজুমদার বলেন, “ঢালটি খুব বিপজ্জনক। কাঠের পিলার দিয়ে ঢালটি করলে তা লরির ভার বইতে পারত না। কংক্রিটের পিলারে করলে ভাঙত না। কিন্তু ৪০ ফুট দীর্ঘ ওই ঢাল তৈরি করতে পাঁচ-ছয় কোটি টাকা খরচ পড়ত। তখন অত টাকা বরাদ্দ সম্ভব ছিল না।” প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের ব্রজগোপাল সাহার যুক্তি, “টাকা কম থাকায় দেওয়াল তুলে ঢালটি তৈরি করা হয়েছিল।”
আশিসবাবুর কথায়, “পুরসভাকে সতর্ক করেছিলাম। গঙ্গার দিক পরিবর্তন হলে ঢালটি যে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাও জানিয়েছিলাম। এখন পাশ দিয়ে বালির বস্তা ফেলে বিকল্প কোন ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হবে।” |