পঞ্চমীতেই বোধনের ঢাক বেজে গেল লাল-হলুদে। তবে আলো-ঝলমলে কলকাতায় নয়, মেঘালয়ের শিলংয়ে।
ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলীয় কোচ মার্কোস ফালোপা এক ঢিলে দুই পাখি মেরে ফের মনে করিয়ে দিলেন সেই পুরনো স্লোগানটা ‘উলটে দেখুন, পালটে গেছি’। জয়ন্তিয়া পাহাড়ের কোল থেকে দুর্মূল্য তিন পয়েন্ট তো আনলেনই। পাশাপাশি ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের ছায়ার সঙ্গে টক্করে এ বারেও ব্রিটিশ কোচকে টপকে গেলেন তেলে সান্তানার গুণগ্রাহী ফালোপা। শিলংয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফালোপা হঠাৎ বিনয়ী। “ইস্টবেঙ্গলকে শুধু ভারত নয়, এশীয় সেরাও করতে চাই আমার নিজস্ব কোচিং দর্শন দিয়ে। এর মধ্যে বিতর্ক খুঁজবেন না।”
শেষ তিন বছর মর্গ্যান জমানায় লাজংয়ের ঘরের মাঠে জয় পায়নি লাল-হলুদ। কেন? উঠে আসত দুটো কারণ।
এক, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৯০৮ ফুট উঁচুতে খেলার ক্লান্তি।
দুই, গ্যালারি থেকে সমর্থকদের কান ঝালাপালা করে দেওয়া চিৎকার। এ বার সঙ্গে জুড়েছিল এএফসি কাপ সেমিফাইনালের হোম ম্যাচের কথা ভেবে মেহতাব, অর্ণব-সহ প্রথম একাদশের পাঁচ ফুটবলারকে শিলংয়ে না নিয়ে যাওয়া। যেখান থেকে জন্ম নেয় ‘বিশ্রাম বিতর্ক’।
থাংবই সিনতোর ছেলেদের ৪-০ চূর্ণ করে সেই সব বিতর্ক বুধবার তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন ফালোপা। ফোনে কথা বলার সময় এ বার ঈষৎ উত্তেজিত তিনি। “বিশ্রাম তো বলিনি। ওরা কলকাতায় আমেরিকোর কাছে রোজ ট্রেনিং করছে।” আর ‘ওরা’ অর্থাৎ মেহতাবরা বলছেন, “কুয়েতে থাকতেই জানতাম কোচ আমাদের লাজং নিয়ে যাবেন না। আজ উনি দেখিয়ে দিলেন দলে কেউ অপরিহার্য নয়।” যা শুনে লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তাও বলছেন, “লাল-হলুদ জার্সি পরে নামলেই তো সবাই মাঠে সিংহ হয়ে যায়।”
ফালোপার নির্দেশে তাঁর ‘সিংহ’রা এ দিন ৪-৪-২ ছকে নেমে দুটো কাজ করলেন প্রথম থেকেই। এক, ঘর গুছিয়ে আক্রমণ শানালেন। দুই, গতিময় কাউন্টার-অ্যাটাকে গুঁড়িয়ে দিলেন লাজংয়ের রক্ষণ। যা দেখে বিস্মিত শিলংয়ের কোচ সিনতো বলছেন, “গতির সঙ্গে কাউন্টার-অ্যাটাক আমাদের হারিয়ে দিল।” |
ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, অভিষেক, গুরবিন্দর, উগা, রবার্ট, ভাসুম (তুলুঙ্গা), সুবোধ (খাবরা), লালরিন্দিকা, লোবো (জোয়াকিম), চিডি, মোগা। |