বৃষ্টিতে শেষ হয়নি মণ্ডপ, কপালে ভাঁজ উদ্যোক্তাদের
কাশের মুখ ভার। আজ, বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠীতে বেশির ভাগ পুজোর উদ্বোধন হবে। কিন্তু, বৃষ্টিতে মণ্ডপের কাজই শেষ হয়নি! যে সব কাজ ইতিমধ্যে হয়েছে, তা-ও বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। ফলে, মাথায় হাত পুজো কর্তাদের। বৃষ্টির জন্য বুধবার হাতেগোনা কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হয়েছে।
সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, ঠিক কবে আকাশ ঝলমলে হবে?
মেদিনীপুর কলেজের এন সি রাণা আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের অধিকর্তা সত্যব্রত রায় বলেন, “এখন আবহাওয়া এমনই থাকবে। সপ্তমী-অষ্টমীর দিনও বৃষ্টি হতে পারে।” আগের দু’দিন মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। বুধবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি চলে। দুপুরের দিকে আকাশ খানিক পরিষ্কার হয়। পরে ফের দুর্যোগ। সপ্তমী-অষ্টমীর দিনও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা শুনে খড়্গপুর শহরের বাবুলাইন সর্বজনীন দুর্গোৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা প্রশান্ত ঘোষ বলছেন, “বৃষ্টিতে এ বার পুজোর আনন্দটাই না মাটি হয়ে যায়!” তাঁর কথায়, “বুধবার পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। বৃষ্টিতে মণ্ডপের আশপাশের পরিবেশ সাজানো-গোছানোর কাজ তো সে ভাবে করাই যাচ্ছে না।” গুজরাতের অক্ষরধাম মন্দিরের আদলে মণ্ডপ হচ্ছে রেল শহরের এই দুর্গোৎসবে।
খড়্গপুরে প্রেমবাজারের পুজো মণ্ডপে কাজ চলছে এখনও।—নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর-খড়্গপুর, দুই শহর এবং শহরতলিতে বেশ কিছু বিগ বাজেটের পুজো হয়। পুজো কমিটিগুলো নানা থিম তুলে সকলেই চায় একে অপরকে টক্কর দিতে। কিন্তু, এখন কে কাকে ছাপিয়ে গেল, তা দেখার আগে নিজেদের মণ্ডপের কাজ শেষ করতেই ব্যস্ত পুজো উদ্যোক্তারা। যে সব পুজো কমিটি থিম করছে, এই দুর্যোগে সমস্যা বেশি তাদেরই। কারণ, বৃষ্টিতে বিভিন্ন কারুকার্য নষ্ট হচ্ছে। এ দিন মেদিনীপুর-খড়্গপুরের কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধন করেন মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ সাংসদ। শুভেন্দুবাবু যেমন মেদিনীপুরের রাঙামাটির পুজোর উদ্বোধন করেন। মুকুলবাবু খড়্গপুরের সুভাষপল্লির। এই দুই এলাকাতেই বড় মাঠ রয়েছে। সেই মাঠেই পুজোর আয়োজন করা হয়। টানা বৃষ্টিতে দুই শহরের বড় মাঠগুলোয় জল জমেছে। পরিস্থিতি কীভাবে সামলানো যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় উদ্যোক্তারা।
প্রতিকূলতার মধ্যেই চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। কোলাঘাটে পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।
মেদিনীপুর শহরের নজরকাড়া পুজোগুলোর মধ্যে অরবিন্দনগর সর্বজনীন, রবীন্দ্রনগর সর্বজনীন অন্যতম। অরবিন্দনগরের এ বারের থিম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত কেদারনাথ। এখানে পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা থাকছে। রবীন্দ্রনগরের থিম ‘এ বার পুজো ফুল ফিল্মি’। ভারতীয় চলচ্চিত্রের একশো বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বার। চলচ্চিত্রকার, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সিনেমা জগতের সঙ্গে যুক্ত সকলকে শ্রদ্ধা জানাতেই এই আয়োজন। মণ্ডপে থাকবে শু্যটিং স্পট থেকে শুরু করে গুহা, পাহাড়, স্টেশন, রাজবাড়ি সবকিছু। কিন্তু, দুর্যোগে মুখ ভার পুজোর কর্তাদের। কাজ এগোতে যে নানা সমস্যা হচ্ছে। রাঙামাটি সর্বজনীনের মণ্ডপ হচ্ছে পুরনো দিনের নাটমন্দিরের আদলে। আধুনিক চিন্তায় নাটমন্দিরকে এখানে একটু অন্যরূপে দেখানো হবে। বাঁশের ঝুড়ি, কুলো, পুতুল প্রভৃতি ব্যবহৃত হচ্ছে মণ্ডপ তৈরির কাজে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা শিবশঙ্কর দাস বলেন, “এ ভাবে বৃষ্টি চললে সমস্যা তো হবেই। মাঠে জল জমছে। কাজ করতেও সমস্যা হচ্ছে।” একই বক্তব্য শহরের বাড়মানিকপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা রাজনারায়ণ দত্ত’র। তাঁর কথায়, “বৃষ্টির ফলে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। দুর্গাপুজো বাঙালির সব উৎসবের থেকে আলাদা। আর সেই পুজোর আকাশেই কি না দুর্যোগের মেঘ!”
একটা সময়ে পুজো উদ্যোক্তারা চিন্তায় ছিলেন বাজেট নিয়ে। বাজেট কম হলে যদি জাঁকজমক কমে যায়। তখন অন্য পুজোগুলো জৌলুসে এগিয়ে যাবে! আর তা- হলে তো ষোলোআনাই লোকসান! পাড়ার মুখরক্ষা করাই দায়! আর এখন উদ্যোক্তাদের চিন্তায় শুধুই দুর্যোগ। সব মিলিয়ে, পুজোর আকাশে যেন দুর্যোগেরই মেঘ এ বার!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.