অতিবৃষ্টিতে সরবরাহ কম, ফুলবাজার আগুন
মে উঠেছে পুজো। কিন্তু সেই চেনা সুরটা যেন কেটে গিয়েছে মল্লিকঘাট ফুলবাজারে। ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের যে সব জায়গায় ফুলের চাষ সব থেকে বেশি হয়, যেমন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সে সব জায়গায় অতিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফুলচাষ। এ দিকে, পুজোর মুখে ফুলের চাহিদা তুঙ্গে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এখন মল্লিকঘাট ফুলবাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান কম। যার জেরে ফুলের দাম অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার বেশ বেশি।
মল্লিকঘাটে এক-একটা পদ্ম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়, রজনীগন্ধার দাম কেজি প্রতি ২৫০ টাকা, গাঁদা ফুল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, কুচো রজনীগন্ধা কেজি প্রতি ২৫০ টাকা, তিন ফুটের লাল গাঁদার মালা ১০ টাকা, দোপাটি ৮০ টাকা কেজি, ১০০টা গোলাপের দাম ৩০০ টাকা। এমনকী, মণ্ডপ সাজানোর জন্য ফুলের সঙ্গে যে সব বাহারি পাতা ব্যবহার হয়, যেমন ভিক্টোরিয়া, বটলগ্লাস, অ্যাসফোরাসের দামও অন্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। ফুল-বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, অন্য বার পঞ্চমী বা ষষ্ঠীর দিনে পদ্ম বড়জোর ৬ থেকে ৭ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে এ বার পদ্মের দাম একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। গোলাপ বা রজনীগন্ধাও দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
একই অবস্থা নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট বা মানিকতলা বাজারের ফুলের দোকানগুলিরও। পুজোর কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ফুলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মণ্ডপ সাজানোর বাজেটও অন্যান্য বারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। দমদম পার্কের এক পুজো কমিটির কর্মকর্তা জানালেন, বেশি দাম দিয়েও ভাল মানের ফুল পাওয়া যাচ্ছে না। বেশ খারাপ মানের পদ্মের দামও দশ টাকা।
মল্লিকঘাট ফুলবাজার উন্নয়ন সমিতির সদস্যেরা জানালেন, চাহিদার তুলনায় জোগান এ বার প্রায় ৪০ শতাংশ কম। তাঁরা এখন আশায় রয়েছেন কোল্ড স্টোরেজের ফুলের জন্য। মল্লিকঘাট ফুল বাজার উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক অশোক গিরি বললেন, “সপ্তমী ও অষ্টমীতে ফুলের চাহিদা সব থেকে বেশি থাকে। ওই দিনগুলিতে কোল্ড স্টোরেজ থেকে ফুল এলে হয়তো ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে। দামটাও কিছুটা কমতে পারে।”
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল-ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বললেন, “অতিবর্ষণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। সেখানে বন্যা হওয়ায় বেশির ভাগ ফুলগাছের গোড়া পচে গিয়েছে। বন্যায় ৫৫০ হেক্টর ফুলচাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে প্রায় ৮ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার ফুল। আমরা উদ্যানপালন বিভাগের মন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে চাষিদের সাহায্য করার জন্য স্মারকলিপি দিয়েছি।”
মল্লিকঘাটের ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, এ বার বর্ষায় দফায় দফায় নিম্নচাপ হওয়ায় ফুলগাছের গোড়া বারবার পচে গিয়েছে। নারায়ণবাবু জানান, দোপাটি, গাঁদার মতো কিছু ফুলগাছ আছে, যেগুলো এক বার পচে গেলে ফের লাগানো যায়। দেড় মাসের মধ্যে আবার ফুল ফোটে। অতিবর্ষণে ওই গাছগুলো পচে যাওয়ার পরে আরেক বার লাগানো হয়েছে। সেই গাছ অতিবর্ষণে ফের পচে গিয়েছে। ফলে ফলন হয়েছে খুব কম।
আবার গোলাপ বা রজনীগন্ধার মতো ফুলগাছ নির্দিষ্ট সময়েই লাগাতে হয়। অতিবর্ষণে পচে গেলে আর সেই গাছ লাগানো যায় না। ফলে পাওয়া যাচ্ছে না সেই সব ফুলও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.