জমিদারি নেই, একচালায় দুর্গা রয়েছে
কারও পুজোয় নীলকণ্ঠ পাখি উড়ত। কোথাও পাত পেড়ে খেত বিশ গ্রামের লোক। সব অতীত। রয়ে গিয়েছে স্মৃতি।
দুর্গাপুরের ইছাপুর সামন্তবাড়ির পুজো আড়াইশো বছরের পুরানো। পরিবারের সদস্য প্রদীপ সামন্ত জানান, তাঁদের পুজো শাক্ত মতে হলেও গত তিন বছর বলি দেওয়া বন্ধ রয়েছে। নবমীর মহাভোজে আশপাশের গ্রামের মানুষও যোগ দেন।
গোপালমাঠের ঘটকবাড়িতে প্রায় আড়াইশো বছর আগে পুজোর সূচনা করেছিলেন মেজেডিহি গ্রামের জমিদার জগৎতারণ ঘটক। এখন জমিদারি নেই। কিন্তু একচালায় পুজো চলছে। আমরাই গ্রামে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির ৩৫০ বছরের পুরনো পুজোর প্রতিষ্ঠাতা জমিদার হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। দেবোত্তর সম্পত্তির আয়ে এখন পুজো চলছে।
সগড়ভাঙায় চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোও প্রায় পৌনে তিনশো বছরের। পূর্বপুরুষ গোপীনাথ চট্টোপাধ্যায় পুব বাংলা থেকে এসেছিলেন। বর্ধমানের মহারাজার কাছ থেকে জঙ্গলমহলের জায়গির নিয়ে চলে আসেন এখনকার সগড়ভাঙায়। তাঁর নামেই গোপীনাথপুর মৌজা। পুজোর পত্তন তখনই।
দুর্গাপুরের নব ওয়ারিয়ার ধাড়া পরিবারের পুজোও শতাব্দী প্রাচীন। পুজো চালু করেছিলেন কাশীনাথ ধাড়া। ডিএসপি তৈরির সময়ে গ্রামটি উঠে যায়। সিটি সেন্টারের অদূরে নতুন বসতির নাম হয় নব-ওয়ারিয়া। ১৯৮৯ সাল থেকে সেখানেই পুজো হচ্ছে।
মিঠানি চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর বয়স ৪০৮ বছর। পরিবারের প্রবীণ সদস্য গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় জানান, পুরুলিয়ার কাশীপুরের রাজা প্রথম গরুড়নারায়ণ রায় ৪১২ বছর আগে কাটোয়ার শিবলুন গ্রামের নীলাম্বর চট্টোপাধ্যায়কে ১৫টি মৌজার নায়েব করে মিঠানিতে নিয়ে আসেন। তখন থেকেই পুজো শুরু। ঘটপুজো হয়।
বারাবনির মাজিয়ারায় সাহানা পরিবারের পুজো কত বছরের, তা কোনও কাগজপত্র দেখে বোঝার জো নেই। তবে পরিবারের প্রবীণ সদস্য হারাধন সাহানার দাবি, তাঁদের পুজোর বয়স অন্তত সাড়ে চারশো বছর। পরিবারে কথিত, পূর্বপুরুষ পণ্ডিত হরিহর সাহানা এক রাতে স্বপ্নাদেশ পান যে রানিগঞ্জের কাছে মেজিয়ায় দামোদরে পাটা ভেসে এসেছে। তা এনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সত্যিই ওই ঘাটে পাটা পান তিনি। পরে তা তান্ত্রিক দণ্ডী গোঁসাই পঞ্চমুন্ডির আসনে প্রতিষ্ঠা করেন। দেবীর প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে আজও গোঁসাইয়ের পুজো হয়। মন্দিরে প্রথমে তালপাতার ছাউনি ছিল। এখন পাকা দালান।
আসানসোল গ্রামের রায় বাড়ির পুজো আড়াইশো বছরের পুরনো। অছি সংস্থার সভাপতি শচীন রায় জানান, পুজোর প্রতিষ্ঠা করেন নকড়ি রায় ও জামাতা রামকৃষ্ণ রায়। কথিত আছে, এলাকাটি পুরুলিয়ার কাশীপুর রাজার অধীনে ছিল। বর্গীদের হাত থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষার দায়িত্ব পড়ে নকড়ি রায়ের উপরে। তাতে সফল হয়ে তিনি পুজোর প্রবর্তন করেন।
আরও কত গল্প রয়ে গেল...।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.