কোর্টের নির্দেশে সঙ্কট
বিদায়ের পথ রেখে নিয়োগ প্রাথমিকে
বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সঙ্কট বাড়ল রাজ্য সরকারের।
বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার চাইলে প্রাথমিক শিক্ষক-পদে নিয়োগ করতেই পারে। তবে শর্তসাপেক্ষে। শর্তটি হল, যাঁরা নিযুক্ত হবেন, তাঁদের পরিষ্কার জানিয়ে দিতে হবে, মামলার চূড়ান্ত রায় বিপক্ষে গেলে নিয়োগপত্র বাতিল হয়ে যাবে। আদালতের নির্দেশের পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, পুজোর পরে সরকার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দেবে।
শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৩১ মার্চ টিচার্স এলিজিবিটি টেস্ট (টেট) নেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ৩৫ হাজার শিক্ষক-পদের জন্য প্রায় ৫৫ লক্ষ প্রার্থী পরীক্ষা দেন। সেই পরীক্ষার অধিকাংশ প্রশ্নই পাঠ্যক্রম-বহির্ভূত বলে অভিযোগ তুলে শতাধিক প্রার্থী হাইকোর্টে মামলা করেন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য পাঠ্যক্রম তৈরি করে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)। বিচারপতি ওই সংস্থার কাছে জানতে চান, এ বারের প্রশ্ন সত্যিই পাঠ্যক্রম-বহির্ভূত ছিল কি না। অঙ্ক, ইংরেজি ও পরিবেশবিদ্যার প্রশ্নপত্র খতিয়ে দেখে এনসিটিই রিপোর্ট জমা দিয়েছে হাইকোর্টে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছিল, নিয়োগ পরীক্ষা হবে এনসিটিই-র নির্দেশিকা মেনে। আর এনসিটিই-র নির্দেশিকায় বলা রয়েছে, ওই পরীক্ষায় প্রশ্নের মান হবে পঞ্চম শ্রেণির উপযুক্ত। অথচ হাইকোর্টে পেশ করা রিপোর্টে এনসিটিই বলেছে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় ক্যালকুলাস, ত্রিকোণমিতির প্রশ্নও দেওয়া হয়েছে। ইংরেজিতেও এমন সব প্রশ্ন করা হয়েছে, যা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও করা হয় না। এনসিটিই জানিয়ে দিয়েছে, প্রশ্নপত্র পাঠ্যক্রম মেনে তৈরি করা হয়নি। বস্তুত, প্রশ্ন দেখে বোঝার উপায়ই নেই যে, এই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য!
কী বলছেন শিক্ষামন্ত্রী?
ব্রাত্যবাবু বলেছেন, “এনসিটিই-র এই ধরনের রিপোর্টের কথা শুনছি সংবাদমাধ্যমের কাছেই। আমরা তো জানি, এনসিটিই বলেছে, এই ব্যাপারে তারা কোনও মন্তব্য করবে না।”
এই মামলায় যুক্ত সব পক্ষকেই পুজোর ছুটির পরে ১৫ দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে হাইকোর্ট। পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলপ্রকাশ এবং নিয়োগপত্র দেওয়ার ব্যাপারে সরকার তা হলে এখন কী সিদ্ধান্ত নেবে?
শিক্ষামন্ত্রী কয়েক দিন আগে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে পুজোর ছুটির পরেই। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বক্তব্যেও তারই প্রতিধ্বনি। মানিকবাবু এ দিন বলেন, “আইনজীবীদের কাছ থেকে আদালতের নির্দেশ জেনেছি। ওঁরা জানিয়েছেন, ফলপ্রকাশের উপরে কোনও স্থগিতাদেশ জারি হয়নি। তাই আমরা কাজ চালিয়ে যাব।”
কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট যে-শর্ত দিয়েছে, তার পরে সরকার সফল প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেবে কি? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আদালত নিয়োগ করতে বলেছে। আমরা এই রায়ে খুবই খুশি।”
কিন্তু হাইকোর্ট তো শর্তসাপেক্ষে নিয়োগের কথা বলেছে। চূড়ান্ত রায় সরকারের বিপক্ষে গেলে সব নিয়োগপত্রই তো বাতিল হয়ে যাবে! তখন কী হবে?
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এই ব্যাপারে এখনও কিছু জানি না। নির্দেশ না-দেখে কিছু বলতে পারব না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.