|
|
|
|
হিসাব মেলেনি সর্বশিক্ষা মিশনের প্রায় একশো কোটির |
খরচের শংসাপত্র চেয়ে কড়া বার্তা প্রশাসনের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
সর্বশিক্ষা মিশনের বরাদ্দ টাকার হিসাব দেয়নি পূর্ব মেদিনীপুরের বহু স্কুল। হিসেব না দেওয়া টাকার পরিমাণ নয়-নয় করে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। সম্প্রতি এই সব স্কুলের তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন।
টাকা বরাদ্দ সত্বেও কেন বিদ্যালয়গুলি খরচের হিসেব দিতে গড়িমসি করেছে তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার বৈঠক হয় জেলা প্রশাসনিক ভবনে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যেসব বিদ্যালয় ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা দেয়নি তাদের চিঠি দিয়ে অবিলম্বে তা দিতে বলা হবে। না হলে ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করা হবে। শো-কজের যথাযথ জবাব না পেলে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, ‘‘সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে সম্প্রতি সতর্ক করে জানানো হয়েছে আগে বরাদ্দ অর্থ খরচের হিসেব জমা না পেলে নতুন করে বরাদ্দ হবে না। গত ২০০৫-০৬ আর্থিক বছর থেকে চলতি বছর পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে জেলার প্রায় ৬৫০টি বিদ্যালয় সর্বশিক্ষা মিশন থেকে বরাদ্দ অর্থ ব্যবহারের শংসাপত্র জমা দেয়নি। সব মিলিয়ে বকেয়া হিসেবের পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা। বরাদ্দ ওই অর্থ খরচের বিষয়ে দ্রুত হিসেব জমা দিতে বলা হয়েছে।” জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য মামুদ হোসেন জানান, হিসাব না দেওয়া স্কুলের সংখ্যাটা আরও বেশি ছিল৬২২টি প্রাথমিক ও ৪৭৮টি মাধ্যমিক। সম্প্রতি এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার পর বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ অর্থ খরচের হিসেব সংক্রান্ত শংসাপত্র জমা দেয়। তারপরও প্রায় ১০০ কোটি টাকার হিসেবের শংসাপত্র বকেয়া রয়েছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, শৌচাগার তৈরি, তফসিলি জাতি-উপজাতি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি ও পোশাক কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ করে সর্বশিক্ষা মিশন। ওই টাকা খরচের শংসাপত্র নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়ার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষের। বেশ কিছু স্কুল তা জমা না দেওয়ায় সর্বশিক্ষা মিশন থেকে বরাদ্দ অর্থ খরচের হিসেব দিতে বিপাকে পড়ছে জেলা প্রশাসন। এর ফলে পরবর্তী আর্থিক বছরগুলিতে জেলার জন্য বরাদ্দ পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সতর্ক করে জানানো হয়েছে, আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে বরাদ্দ অর্থের বকেয়া হিসেব জমা দিতে না পারলে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে। না হলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সর্বশিক্ষা মিশনের অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই হুঁশিয়ারির পরই বিদ্যালয়গুলির কাছ থেকে বরাদ্দ অর্থের হিসেব পেতে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক ভবনের বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য, জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ও জেলার সমস্ত সার্কেলের প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিদর্শকরা ছিলেন। |
|
|
|
|
|