|
|
|
|
বোধনেও বিষণ্ণ ঘাটাল, সাজছে দাসপুর |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • ঘাটাল |
মহকুমার একটা অংশ যখন মেতেছে পুজো প্রস্তুতিতে, অন্য অংশে তখন বিষাদের করুণ সুর। বৃষ্টির জমা জল নামা ও না নামায় দেবী দুর্গার বোধনের মাত্র দু’দিন আগে মঙ্গলবার ঘাটাল মহকুমায় দাসপুর ও ঘাটাল ব্লকে এই দুই চিত্রই সামনে এসেছে।
ঘাটাল মহকুমার সদর শহর ঘাটালের বারোটি ওয়ার্ড-সহ বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে যান চলাচলও বন্ধ। যাতায়াতের এক মাত্র মাধ্যম নৌকা। ঘাটালে প্রকৃতি বিরূপ হলেও মহকুমার দাসপুরে ব্লকে পা রাখলেই চোখে পড়বে অন্য ছবি। সেখানে পুজোর আনন্দে মেতেছেন বাসিন্দারা।
নিম্নচাপের জেরে চলা টানা কয়েক’দিনের বৃষ্টিতে ঘাটালের প্রায় অর্ধেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। অনেক জায়গাতেই সেই জল এখনও নামেনি। এ দিকে মঙ্গলবারও বৃষ্টি হয়েছে। ফলে অনেক জায়গায় নতুন করে জল জমে মণ্ডপ তৈরির কাজ ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে অনেক পুজো উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা এ বার হয়ত নমো নমো করে পুজো সারতে হবে। শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতিও। কোথাও স্কুলের ছাদে আবার কোথাও একটু উঁচু জায়গায় পুজো করার উদ্যোগ নিতে শুরু করেছেন পুজো-উদ্যোক্তরা। অন্য দিকে, এখনও একাধিক গ্রামের রাস্তায় জল জমে থাকায় পুজো দেখতে বেড়িয়ে দুর্ভোগের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। অনেক জায়গাতেই পুজো-পরিক্রমার একমাত্র উপায় হতে চলেছে নৌকা। |
|
দুই ছবি। জল ঢুকে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে ঘাটালের রামচন্দ্রপুরের পুজো
মণ্ডপ তৈরির কাজ (বাঁ দিকে), সেজেছে দাসপুরের এক মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র। |
এমন অবস্থায় উদ্যম হারিয়েছেন উদ্যোক্তারা। যেমন ঘাটালের চাউলির যুব দুর্গোৎসব কমিটির পক্ষে শ্রীমন্ত জানা আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, “আমাদের মণ্ডপ জলের তলায়। তাই এ বার স্থানীয় চাউলি প্রাথমিক স্কুলের ছাদে পুজো হবে।” রামচন্দ্রপুর পুজো কমিটি এ বার লক্ষাধিক টাকার বাজেটে পাট কাঠি দিয়ে গির্জার আদলে মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু করেছিল। কমিটির পক্ষে নিহার চৌধুরী বলেন, “পুজো মণ্ডপের সামনে জল। এখনও কী হবে বুঝে উঠতে পারছি না। প্রতিমাকে অন্যত্র সরাব কিনা ভাবছি।” ঘাটালেরই শিতলপুর আমরা সবাই পুজো কমিটির পক্ষে সঞ্জীব ঘোড়ুই বলেন, “মণ্ডপে জল না থাকলেও সামনের রাস্তায় তো জল রয়েছে। সেই জল না নামলে মানুষ পুজো দেখতে আসবেন কী করে? ফলে পুজো করলেও অন্য অনুষ্ঠান সব বাতিল করে দিচ্ছি।” একই অবস্থা ঘাটাল শহর-সহ ব্লকের একাধিক গ্রামের একাধিক মণ্ডপে।
অন্য দিকে, দাসপুর পুরোপুরি পুজোর মেজাজে। কোথাও ১০ লক্ষ, কোথাও তারও বেশি বাজেটে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে। অধিকাংশ মণ্ডপে চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। কোথাও কোথাও প্রতিমাও চলে এসেছে মণ্ডপে। যেমন পাঁচবেড়িয়া সানরাইজ পুজো কমিটি এ বার রাংতা, সিন্থেটিক, প্লাই, থার্মোকল দিয়ে লুম্বিনী পার্কের আদলে বড় মণ্ডপ তৈরি করেছে। কমিটির পক্ষে নির্মল পালোধী বলেন, “আমাদের পুজোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ।” সুলতাননগরে হচ্ছে ‘শষ্য ভান্ডার’। সেখানে বাঁশ, বেত, কুলো, খড় দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। আলোয় ফুটে উঠেছে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম গঞ্জের চিত্র। পুজো কমিটির পক্ষে জয়দেব সেনাপতি বলেন, “পুজোর ক’দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-সহ নানা আয়োজন করেছি।” |
|
|
|
|
|