বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজায় গাড়ির ভিড় হলে শুধু কাউন্টার থেকে নয়, হাতে হাতে স্লিপ দিয়ে গাড়ি বার করা হবে। মঙ্গলবার টোলপ্লাজা ঘুরে দেখে এই নির্দেশ দেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। সোমবারই টোলপ্লাজায় গাড়ির লম্বা লাইন দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে পরিবহণমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন তিনি। তার পরে ২৪ ঘণ্টা কাটতেই পরিবহণমন্ত্রীর তৎপরতায় সমস্যার সমাধান হয়। আজ, বুধবার থেকেই হাতে হাতে স্লিপ দেওয়া শুরু হবে টোলপ্লাজায়।
পাশাপাশি নবান্ন থেকে বিদ্যাসাগর সেতুর টোলপ্লাজা পর্যন্ত অংশে হোর্ডিং বসানোর ব্যাপারে এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগেই মমতা বলেছিলেন, নবান্ন থেকে টোলপ্লাজা পর্যন্ত অংশ গ্রিন জোন করতে হবে। এ দিন তিনি নির্দেশ দেন ওই অংশে একমাত্র সরকারি হোর্ডিং ছাড়া কোনও ধরনের হোর্ডিং বসানোর অনুমতি দেওয়া যাবে না। তাঁর ছবি দেওয়া হোর্ডিংও সরিয়ে ফেলতে বলেছেন মমতা।
এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ পরিবহণমন্ত্রী নিজেই যান টোলপ্লাজায়। আপ-ডাউন মিলে মোট ১৮টি লেনের কাউন্টারগুলির অবস্থা ঘুরে দেখে সব কাউন্টার সচল রাখতে নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষকে। কত জন কর্মী টোলপ্লাজায় কাজ করছেন, তার হিসেব নেন মন্ত্রী। মিনিটে ক’টি গাড়ি যাতায়াত করছে, পরিসংখ্যান চান তারও। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রী জানতে পারেন, হাওড়া এবং হুগলির দিক থেকে আসা বহু যাত্রী টোলপ্লাজায় নামেন। সেতুর উপরে যাত্রী নামান বাসচালকেরা। যার জেরে অফিসের ব্যস্ত সময়ে এবং সন্ধ্যায় গাড়ির লাইন পড়ে যায়। এ কথা শুনে সেতুর উপর যাত্রী না নামাতে নির্দেশ দিয়েছেন মদনবাবু।
এ দিন মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “সেতুর উপর যাত্রী নামানোয় গাড়ির লাইন পড়ছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ও নবান্নর মাঝে একটি বাসস্ট্যান্ড করা হবে। সরকারি সব ক’টি পরিবহণের মধ্যে থেকে সিএসটিসি-র এমডি নীলাঞ্জন শান্ডিল্যকে নোডাল অফিসার করা হয়েছে। তিনিই বিষয়টি দেখবেন। বুধবার থেকে সেতুতে গাড়ির লাইন পড়লেই কাউন্টার ছাড়াও কর্মীদের নামিয়ে হাতে স্লিপ কেটে দেওয়া হবে।”
এ দিন গিয়ে দেখা যায়, টোলপ্লাজার অধিকাংশ কাউন্টারই খোলা। কোনও লেনেই গাড়ির লাইন ছিল না। যদিও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, অফিসের ব্যস্ত সময়ে এবং সন্ধ্যার পরে টোলপ্লাজার প্রতিটি লেনে গাড়ির দীর্ঘ লাইন রোজকার ঘটনা। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ করেও সুরাহা হয়নি। যদিও টোলপ্লাজার কর্মীদের বক্তব্য, দিনের ব্যস্ত সময়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে মূলত তিনটি কারণে। প্রথমত, সেতু থেকে নামা-ওঠার আগে বাসগুলির টোলপ্লাজার সামনে যাত্রী নামানো এবং সেখানে দাঁড়িয়েই টিকিট কাটার অভ্যাস। দ্বিতীয়ত, খুচরো পয়সার সমস্যা এবং তৃতীয়ত, কম্পিউটারগুলি প্রায়ই খারাপ থাকে। পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “যাত্রীরা সচেতন হলে আমাদের সুবিধা হবে। আগে টিকিট কাটা থাকলে সেতুর কাছে তাড়াতাড়ি নামতে পারবেন। ভিড় এড়ানো যাবে সহজে। এ ছাড়া, তিন মাস থেকে এক বছর মেয়াদী স্মার্ট কার্ড চালুর কথা ভাবা হয়েছে। ওই কার্ড থাকলে সেতু পারাপার হওয়ার সময়ে টোলট্যাক্স নেওয়া সহজ হবে। যানজট হবে না।”
|