উলুবেড়িয়ার বাসন্তী মণ্ডলের পরে ডোমজুড়ের দেবশ্রী দেব। উচ্চ আদালতের মধ্যস্থতায় বিমুখ স্বামীর কাছ থেকে পণের টাকা আগেই ফেরত পেয়ে গিয়েছেন বাসন্তী। আর ছেড়ে চলে যাওয়া স্বামীর কাছ থেকে পণের টাকা এবং গয়না ফেরত পেতে চলেছেন ক্যানসারে আক্রান্ত দেবশ্রী। সেই কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপেই।
মামলা তো চলবে বছরের পর। এক আদালত থেকে অন্য আদালতে। কবে বিবাহ-বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক পর্ব শেষ হবে, তবে মিলবে ক্ষতিপূরণ বা পাওয়া যাবে খোরপোষ! যখন হয়তো ক্ষতিপূরণের আর কোনও প্রয়োজনই থাকবে না। তার অপেক্ষায় না-থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় আইনের মধ্যে থেকেই নতুন একটি রাস্তা খুলে দিলেন। স্বামী-পরিত্যক্ত হয়ে পড়ার ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে দুরারোগ্য ব্যাধির যন্ত্রণায় কাতর একটি অসহায় মেয়ে যাতে টিকে থাকতে পারেন, এমন রাস্তা। বিরূপ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে যাতে লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন, এমন রাস্তা।
হাইকোর্টের নির্দেশ, ক্যানসারে আক্রান্ত দেবশ্রীকে পণের এক লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে ১৩ নভেম্বর। হাইকোর্টে হাজির থেকে ওই তরুণীর হাতে সেই টাকা তুলে দিতে হবে তাঁর স্বামী সোমনাথ দেবকেই। ফেরত দিতে হবে দেবশ্রীর গয়নাও। ডোমজুড় থানার ওসি ছ’ভরি সোনার গয়না নিয়ে আসবেন সোমনাথের কাছ থেকে। গয়না নকল কি না, কয়েক জন স্বর্ণকারকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেবেন ওসি। তার পরে তিনিই তা পৌঁছে দেবেন দেবশ্রীর বাড়িতে।
দেবশ্রী এ দিন হাইকোর্টে এলেও সোমনাথ হাজির হননি। এসেছিলেন ওই তরুণীর শ্বশুর। দেবশ্রীর উপরে কী ধরনের অত্যাচার হয়েছে, তা জানতে চান বিচারপতি। সেই অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে এজলাসেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তরুণী। বিচারপতি তাঁকে হাইকোর্টের মেডিক্যাল ইউনিটে পাঠিয়ে দেন। সেখানে দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁর চিকিৎসা হয়।
পণের ৫০ হাজার টাকা ফেরত পেয়ে উলুবেড়িয়ার বাসন্তী বলেছিলেন, তিনি আবার বিয়ে করতে চান। পড়তে চান। দেবশ্রীও জানান, তিনি পড়তে চান। ফের চাকরি করতে চান। সুখের সংসার করেও দেখাতে চান। ক্যানসারের কাছে হার মানবেন না। |