|
|
|
|
ফুটবল, দৌড়ে জমজমাট নন্দীগ্রামের দুর্গাপুজো
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
ঠাকুর দেখার পাশাপাশি যাত্রাপালা, গান-বাজনা, হরেক জিনিসের দোকান, নাগরদোলাএ সব তো রয়েছেই। কিন্তু নন্দীগ্রামের অন্যতম পুরনো দুই পুজোর আকর্ষণটা জমজমাট খেলার আসর ঘিরে। নন্দীগ্রাম -২ ব্লকের খোদামবাড়ি ইউনিয়ন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর মূল আকর্ষণ ফুটবল প্রতিযোগিতা। আর রেয়াপাড়া সর্বজনীন পুজোর অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠেছে ১০ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়, ক্রিকেট ও সাঁতার প্রতিযোগিতা।
খোদামবাড়ি হাইস্কুলের সংলগ্ন মাঠে মণ্ডপের সামনে প্রতি বছর পুজো শুরুর আগেই চালু হয়ে যায় ষোলো দলীয় শুভ্রাংশু স্মৃতি শিল্ড ফুটবল প্রতিযোগিতা। নন্দীগ্রামের কৃষ্ণনগর যোগেশ্বর বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন শিক্ষক প্রয়াত শুভ্রাংশু প্রধানের উদ্যোগে পুজার সময় এই ফুটবল প্রতিযোগিতা চালু হয়েছিল। ১৯৭৬ সাল থেকে তাঁর স্মৃতিতেই ফুটবল প্রতিযোগিতার নামকরণ করা হয়েছে। এই ফুটবল প্রতিযোগিতায় যোগ দেয় পূর্ব, পশ্চিম মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার ফুটবল দল। এ বছরও ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে গত ১৬ সেপ্টেম্বর। নকআউট পদ্ধতিতে খেলা চলছে। শুভ্রাংশুবাবুর ছেলে পূজাকমিটির ক্রীড়া সম্পাদক দীপঙ্কর প্রধান জানান, “এই পুজোর প্রথম দু’বছর হাডুডু প্রতিযোগিতা হয়েছিল। বাবার উদ্যোগে ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়।”
পুজোকমিটির সম্পাদক স্বপন পাত্র বলেন, “শুভ্রাংশুবাবু নিজে ফুটবলার হিসেবে এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। তাই তাঁর স্মৃতিতেই ফুটবল প্রতিযোগিতা উৎসর্গ করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এ বারও বিজয়া দশমীর দিন ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা হবে।” এই ফুটবল প্রতিযোগিতা নিয়ে এলাকাতেও ব্যাপক উন্মাদনা রয়েছে। এক সময় টানা প্রায় ১৫ বছর ধরে এই নকআউট টুর্নামেন্টে খেলেছেন নন্দীগ্রামের প্রবীণ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব সুকুমার পাহাড়ি। তিনি বলেন, “নন্দীগ্রামের ডগলাস ক্লাবের হয়ে আমরা খোদামবাড়ি দুর্গোৎসব কমিটির ওই ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলতে যেতাম। বেশ কয়েকবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলাম। প্রতি বছর ওই প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য মুখিয়ে থাকতাম।”
নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আর এক পুজো রেয়াপাড়া সর্বজনীন শারদীয়া দুর্গোৎসব কমিটি এ বার পা দিয়েছে ৪৯ বছরে। রেয়াপাড়ার প্রাচীন শিবমন্দিরের কাছে এ বার পূজার মণ্ডপসজ্জা হচ্ছে রাজস্থানের একটি মন্দিরের আদলে। হোগলাপাতার কারুকাজ। ভিতরে সাবেক রূপের প্রতিমা। এই পুজোরও অন্যতম অঙ্গ নানা খেলাধূলা। বিভিন্ন দিনে থাকছে ক্রিকেট, দৌড় ও সাঁতার প্রতিযোগিতা দেখার সুযোগ। পুজোকমিটির অন্যতম সদস্য অঞ্জন ভারতী জানান, ‘‘বছর কুড়ি আগে পুজোর সময় খেলাধূলার আয়োজন শুরু করি। প্রতি বছর ১০ কিমি ম্যারাথন দৌড়, ক্রিকেট ও সাঁতার প্রতিযোগিতা হয়। তা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন।” এ বারও ষষ্ঠীর দিনে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের টেঙ্গুয়াবাজার থেকে চণ্ডীপুরগামী সড়কে রেয়াপাড়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতা হবে। সপ্তমীর দিন হবে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। আর দশমীর দিন সাঁতার। অঞ্জনবাবু জানান, গত বছর ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মিলিয়ে ৫২ জন পুরুষ ও ১৮ জন মহিলা প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন।
পুজোয় এ বারও দৌড়-ঝাঁপে তাতিয়ে নেবে নন্দীগ্রাম। |
|
|
|
|
|