সম্প্রীতির পুজো বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে |
অভিষেক চট্টোপাধ্যায় • জগৎবল্লভপুর |
‘জাতের নামে বজ্জাতি’র বিরুদ্ধে বাড়ির পুজোকেই ১০৭ বছর আগে হাতিয়ার করেছিলেন হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের মাজু গ্রামের বন্দ্যোপাধায় পরিবার। সেই ঐতিহ্য এখনও অমলিন। বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির এই পুজোয় যোগ দেন মুসলিমরাও। আর হবে নাই বা কেন, গ্রামের অধিকাংশই যে মুসলিম সম্প্রদায়ের। আর বাড়ির পুজো যে কবে গাঁয়ের পুজো হয়ে গিয়েছে, মনে পড়ে না গ্রামবাসীর।
বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের বেশির ভাগই এখন কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। তবে পুজোয় একত্র হন। ওই পরিবারের সদস্য তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পুজো বাড়ির হলেও গ্রামের সকলেই যোগ দেয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও আসেন।”
এই পুজোয় প্রায় প্রতিবারই গান করতে আসেন পেশায় চিকিৎসক আন্দুলের সৈয়দ আসগর নওয়াজ। তাঁর কথায়, “বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যেরা যথেষ্ট উদার মনের মানুষ। আমাদের সঙ্গে এই পরিবারের একটা পারিবারিক সর্ম্পক রয়েছে। এলাকার অনেক মুসলমানকেও এই পুজোর সঙ্গে এক হয়ে যেতে দেখেছি।”
বাড়ির সদস্য আশিস, অমলকুমারেরা জানান, বিশ শতকের গোড়ায় স্থানীয় জমিদার বাড়িতে পুজো করতেন কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা কারণে জমিদারের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য শুরু হয়। সেই সময়ে তিনি দুর্গাপুজোর স্বপ্নাদেশ পান। প্রায় নিঃসম্বল অবস্থায় পুজো শুরু করেন তিনি। ক্রমে পরিবারের হাল ফেরে।
এই পুজো প্রকৃতই পারিবারিক। পুজোর পুরোহিত থেকে তন্ত্রধারক সবাই পরিবারের। যিনি চন্ডীপাঠ করেন তিনিও পরিবারের সদস্য। পরিবারের সদস্য গোপালচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের প্রতিমা বাড়ির ঠাকুর দালানেই তৈরি হয়। প্রতিমা সাবেকি একচালার। সাজ ডাকের। পুজো হয় কালিকাপুরাণ মতে।” |