বাজেটে টানাটানি, আড়ম্বর কমাচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তারা
জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।
সে ভাবে বিজ্ঞাপন মিলছে না।
লগ্নি সংস্থাগুলির সাহায্যের ‘হাত’ও নেই।
সব মিলিয়ে এ বারে পুজোর আড়ম্বর কী ভাবে বজায় রাখা যাবে, তা নিয়ে দিশাহারা আরামবাগের বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তারা। অনেকেই পুজোর আড়ম্বরে কাটছাঁট করছে। কোথাও কমানো হচ্ছে উদ্বোধনের জাঁকজমক। কোথাও আলোকসজ্জার বহর কমছে, কোথাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাট উঠছে।
আরামবাগ শহরে মোট ২৬টি বারোয়ারি পুজো হয়। মহকুমা জুড়ে প্রায় ১৫০টি ক্লাব পুজোর জন্য অনুমতি নেয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তা ছাড়াও রয়েছে আরও অন্তত শ’খানেক পুজো। পাশাপাশি রয়েছে গ্রাম বা পাড়ার পুজো। অনেক পুজোরই এ বার আড়ম্বর কমছে। অর্থনীতির উথাল-পাতাল তো আছেই, আরামবাগে পুজোর আয়োজনে এ বার উদ্যোক্তারা ঘোর সমস্যায় পড়েছেন সারদা-কাণ্ডের জেরে অধিকাংশ লগ্নিসংস্থা ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়ায়। কেননা, ওই সব সংস্থার মোটা অঙ্কের চাঁদাই মূল ভরসা ছিল পুজো-উদ্যোক্তাদের।
পুলিশ এবং পুরসভার হিসেবে, আরামবাগ শহর তথা মহকুমা জুড়ে অন্তত ৮০টি লগ্নি সংস্থা পাঁচ ছ’বছর ধরে রমরমিয়ে চলেছে। পুজোর নিয়ন্ত্রক বা ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে রীতিমতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাও চলত ওই সব সংস্থার মধ্যে।
সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুজোর আগে রাতারাতি ক্লাব গড়ে ওঠারও নজির রয়েছে। মহালয়ার আগে থেকেই শহরের বড় ক্লাবগুলির তোরণ সেজে উঠত লগ্নি সংস্থাগুলির ব্যানার-ফেস্টুনে। চাঁদার বিলের আকার-আয়তনেও নানা বৈচিত্র্য থাকত। কিন্তু সারদা-কাণ্ডের জেরে দু’তিনটি ছাড়া এখন আরামবাগের বাকি লগ্নি সংস্থাগুলি বন্ধ। ফলে, এ বার মোটা অঙ্কের চাঁদা হাতছাড়া হয়েছে পুজোর উদ্যোক্তাদের। তাঁদের আক্ষেপ, প্রশাসনের কড়াকড়িতে এ বার লরি বা বাস থেকে সে ভাবে চাঁদা তোলা হচ্ছে না। এলাকার লোকজনের চাঁদাতে পুজোর আয়োজন বড় ভাবে করা যাচ্ছে না। তা ছাড়া, বাজারে মন্দার জন্য মিলছে না ‘স্পনসর’।
আরামবাগ শহরের বড় পুজোগুলির মধ্যে একটির উদ্যোক্তা লিঙ্ক রোডের রামকৃষ্ণ ক্লাব। গত বার তাদের বাজেট ছিল দু’লক্ষ টাকার উপরে। এ বার বাজেট নেমেছে এক লক্ষ টাকায়।
ওই ক্লাবের কর্তা শ্রীকান্ত দাস বলেন, “লগ্নি সংস্থাগুলির কাছ থেকেই আমরা চাঁদা পেতাম লক্ষাধিক টাকা। সেই টাকা না মেলায় এ বার কলকাতার শিল্পীদের এনে জলসা হচ্ছে না। আলো এবং মণ্ডপ সাদামাটা থাকছে। তবে, পর্দায় সিনেমা চলবে।”
ব্লকপাড়া যুবগোষ্ঠীর কর্তা শেখ আলাউদ্দিন বলেন, “গত বার লগ্নি সংস্থাগুলি থাকায় এক লক্ষ টাকারও বেশি চাঁদা পেয়েছিলাম। এ বার সেই সব সংস্থা বন্ধ। তা ছাড়া স্পনসরও মেলেনি। তাই এ বার পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকছে। এলাকার লোকজনের চাঁদাতেই পুজো হচ্ছে।” কয়েক মাস আগে থেকেই মহারুদ্র ক্লাব পরিকল্পনা করেছিল পুজোয় থিম হবে ‘তপোবন’। কিন্তু টাকার অভাবে তা হচ্ছে না। ক্লাবকর্তা সুশান্ত মেদ্যা বলেন, “থিমের পুজো করতে গেলে অনেক খরচ হত। সেই টাকা নেই। তাই থিম হচ্ছে না।” অমরসঙ্গী ক্লাবের কর্তারাও জানিয়েছেন, এ বার বিষ্ণুপুরের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তা হল না।
প্রায় একই রকম আক্ষেপ শোনা যাচ্ছে মহকুমার নানা প্রান্তে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.