প্রতিবাদী অটোচালক খুন
নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যান্ডেল |
রাতের অন্ধকারে ব্যান্ডেলের এক প্রতিবাদী অটো-চালককে অটোর মধ্যেই গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। রবিবার ব্যান্ডেলের জলট্যাঙ্ক এলাকার স্টেশন রোডে ওই ঘটনায় নিহতের নাম রাজকুমার পাল (৩০)। তাঁর বাড়ি ব্যান্ডেলের ১ নম্বর গাঁধী
|
রাজকুমার পাল। |
কলোনিতে। পাশের বিক্রমনগরে প্রোমোটারদের একটি খেলার মাঠ দখলের চেষ্টার প্রতিবাদ করার জন্যই রাজকুমারকে খুন হতে হল বলে তাঁর পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীদের সন্দেহ।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বিক্রমনগরের ৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। ওই খুনের পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্তদের এক জনকে সোমবার সকালে গাঁধী কলোনির লোকজন মারধর করেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর মোটরবাইক। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। ওই যুবক-সহ অভিযুক্ত পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, “খুনের কারণ পরিষ্কার নয়। তদন্ত চলছে। রবিবার কিছু পথচারী কয়েক জন যুবককে নিহতের অটোতে উঠতে দেখেছিলেন। মনে হয় যাত্রী সেজে অটোতে উঠে খুন করা হয় তাঁকে।”
পুলিশের খবর, ব্যন্ডেল স্টেশন-চুঁচুড়া কোর্ট রুটে অটো চালাতেন রাজকুমার। রাত ১০টা নাগাদ কাজ মিটিয়ে প্রতিদিন বিক্রমনগরে শ্বশুরবাড়িতে খেতে যেতেন। গত মাসে তাঁর রেজিস্ট্রি হয়। চলতি বছরের শেষের দিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি বিক্রমনগর থেকে বেরোন। কিছু ক্ষণ পরে জলট্যাঙ্ক এলাকায় অফিস-ফেরত কিছু লোকজন দেখেন, রাজকুমারের অটো রাস্তায় কাত হয়ে পড়ে রয়েছে। ভিতরে তাঁর নিথর দেহ। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও পরিরবারের লোকজন আসে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা রাজকুমারকে মৃত ঘোষণা করেন। একটি গুলি তাঁর পিঠ দিয়ে ঢুকে বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। সোমবার দুপুরে নিহতের ভাই রাজেশ পাল চুঁচুড়া থানায় পাঁচ জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
নিহতের বাবা রতনবাবু বলেন, “মা মরা ছেলেটা যে এ ভাবে খুন হবে, ভাবতে পারছি না। ও একটা মাঠ দখলের প্রতিবাদ করেছিল। মনে হয় সেই কারণেই ওকে খুন করা হল। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।” একই বক্তব্য নিহতের কাকা ঝুলনবাবুরও। তিনি বলেন, “ও অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করত। এলাকার ছোটদের জন্যই ও মাঠটা বাঁচাতে চাইছিল।’’ রাজকুমারের এক বন্ধু বলেন, “অনেক দিন ধরেই এখানে প্রোমোটার-রাজ চলছে। রাজকুমারের সঙ্গে আমরাও প্রতিবাদ করেছি। সেই কারণেই মনে হয় ও খুন হল। সব সময়ে বিপদে-আপদে আমরা ওকে পাশে পেতাম।” |