পুরনো রাগেই দুষ্কৃতীরা বাবাকে খুন করেছে। নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে পুলিশের কাছে এই অভিযোগ জানালেন বর্ধমানের কাটোয়ায় নিহত সিপিএম নেতার ছেলে।
রবিবার সন্ধ্যায় সাইকেলে বাড়ি ফেরার সময়ে কুপিয়ে খুন করা হয় কাটোয়ার দেয়াসিন গ্রামের বাসিন্দা, বছর পঁয়ষট্টির কার্তিক মণ্ডলকে। সোমবার সকালে তাঁর ছেলে কিংশুক মণ্ডল কাটোয়া থানায় গ্রামেরই দশ জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তেরা সকলে এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এই খুনের প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার সিপিএম দাঁইহাট শহর ও কাটোয়া ২ ব্লকে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে। |
সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সদস্য ও কৃষকসভার কাটোয়া ২ ব্লক সম্পাদক ছিলেন কার্তিকবাবু। তাঁর ছেলে, ডিওয়াইএফের লোকাল সম্পাদক কিংশুকের অভিযোগ, তাঁর সামনেই বাবাকে রাস্তায় ফেলে বেশ কয়েক জন রড, রামদা, টাঙ্গি, চপার দিয়ে কোপায়। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের দাবি, “পরিকল্পিত ভাবেই তৃণমূল এই খুন করেছে।” বর্ধমানের এক পুলিশকর্তা অবশ্য জানান, রাজনীতির কোনও উল্লেখ কিংশুক তাঁর অভিযোগে করেননি। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় দেয়াসিন স্কুলের কাছ থেকে দলীয় মুখপত্র নিয়ে ফেরার সময়ে গ্রামের ষষ্ঠীতলায় খুন হন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে তাঁর বাড়ি প্রায় ৮০০ মিটার দূরে। দেহটি যেখানে পড়েছিল, সেই জায়গাটি ছিল অন্ধকার।
অভিযোগে কিংশুকবাবু অবশ্য জানান, ওই স্কুলে দলের গ্রামসভা সেরে ফিরছিলেন তাঁর বাবা। ওই সভায় তিনিও ছিলেন। বাবার পরেই কয়েক জন দলীয় কর্মীর সঙ্গে ফিরছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “হঠাৎ ‘বাঁচাও’ চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, গ্রামেরই কয়েক জন বাবাকে কোপাচ্ছে। আমরা যেতেই তারা গুলি ছুড়তে-ছুড়তে পালায়।” পুলিশ যদিও গুলি ছোড়ার কথা মানতে চায়নি।
এ দিন কাটোয়া হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে মৃতদেহ নিয়ে দলের কাটোয়া জোনাল অফিস পর্যন্ত মিছিল করে সিপিএম। তৃণমূলের দাবি, ২০০৭ সালে গ্রামে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে সিপিএমে কোন্দল হয়। কার্তিকবাবুরা বহিরাগত দুষ্কৃতীদের গ্রামে এনে অত্যাচার ও লুঠপাট চালিয়েছিলেন। তার জেরেই এই খুন। অমলবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “এর সঙ্গে দেবোত্তর সম্পত্তি ও জমিজায়গা সংক্রান্ত কোনও ব্যাপারের যোগ নেই। খুনের পিছনে পাকা মাথা রয়েছে।” |