সিপিএম নেতাকে কুপিয়ে খুন
বাড়ির অদূরেই কুপিয়ে খুন করা হল সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সদস্য কার্তিক মণ্ডলকে (৬৫)। রবিবার সন্ধ্যায় কাটোয়ায় গাজিপুরে দেয়াসিন গ্রামের ওই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বর্ধমানের সিপিএম নেতারা। তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এলাকায় প্রবল উত্তেজনা রয়েছে। রাত পর্যন্ত নিহতের দেহ আটকে চলছে বিক্ষোভ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে দলের কাজেই বর্ধমান শহরে গিয়েছিলেন কার্তিকবাবু। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সাইকেলে চালিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। আধ ঘণ্টা বাদে বাড়ি থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে ষষ্ঠীতলার পুকুরপাড়ে ঝোপঝাড়ে ভরা এলাকায় কার্তিকবাবুর ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের ধারণা, পাঁচ-ছ’জন মিলে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সিপিএমের বক্তব্য, ঘটনাস্থলের কাছেই একটি চায়ের দোকানে আড্ডা মারেন তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক। অন্য দিন রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকলেও এ দিন সন্ধ্যা ৭টাতেই সেই দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ঘটনাস্থলের আশপাশে বিদ্যুতের খুঁটির তারও কে বা কারা কেটে দিয়েছিল। ফলে রাস্তা ছিল ঘুটঘুটে অন্ধকার।
পড়ে রয়েছে কার্তিক মণ্ডলের রক্তাক্ত দেহ। ছবি: সৌমেন দত্ত।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিক, কাটোয়া জোনাল সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। অচিন্ত্যবাবু জানান, আজ, সোমবার কাটোয়ায় প্রতিবাদ মিছিল করবে সিপিএম। কাল, মঙ্গলবার কাটোয়া ২ ব্লক ধর্মঘট হবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কার্তিকবাবু ছিলেন কৃষকসভার কাটোয়া ২ ব্লক সম্পাদকও। তাঁর স্ত্রী সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা কমিটির সদস্য। ছেলে কিংশুক ডিওয়াইএফের লোকাল কমিটির সম্পাদক। সিপিএমের অভিযোগ, কার্তিকবাবুর পরিবার-সহ দেয়াসিন গ্রামের সিপিএম সমর্থক বেশ কিছু পরিবার বিধানসভা ভোটের পর থেকেই গ্রামছাড়া ছিল। এখনও তিনটি পরিবার ফিরতে পারেনি। কয়েক বছর আগে গ্রামে জমিজায়গা ও দেবোত্তর সম্পত্তিকে ঘিরে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তার পর থেকেই কার্তিকবাবু পরিবার তৃণমূলের লক্ষ্য ছিল বলে সিপিএমের অভিযোগ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যেই পড়ে রয়েছে দেহটি। গলা, পিঠ-সহ নানা জায়গায় কোপের চিহ্ন। পাশেই পড়ে তাঁর সাইকেল ও টর্চ। বুকের উপরে একটি নোটবুক। দেহ ঘিরে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, দুষ্কৃতীদের ধরা না পর্যন্ত দেহ তুলতে দেওয়া হবে না। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অঞ্জনবাবুর অভিযোগ, “এই গ্রামের ঘটনা পুলিশের নজরে বারবার নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদত না থাকলে এই ধরনের ঘটনা কিছুতেই ঘটত না।”
নিহত নেতার স্ত্রী মিনতিদেবীর দাবি, “তৃণমূল ভোটে জিতলেও আমার স্বামীর প্রভাব বাড়ছিল গ্রামে। তৃণমূলের একটি অংশও ওঁর কাছে নানা উপকারের জন্য আসছিল। দলে দলে লোক ওঁর কাছে আসছেন দেখে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মতো খুন করে চলে গেল।” বর্ধমানের এক পুলিশকর্তা বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। আমরা পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছি। দোষীদের নিশ্চয় গ্রেফতার করা হবে।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অবশ্য বলেন, “আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। ওই গ্রামে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে সিপিএমের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব ছিল। তার জেরেই এমন ঘটেছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.