|
|
|
|
বাগানে পুড়ে মৃত্যু প্রৌঢ়ের
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালবাজার |
বাড়িতে আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক চা শ্রমিকের। ডুয়ার্সের নাগরাকাটা থানার গ্রাসমোড় বাগানে শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ভিক্টর হেমব্রম (৫৯)। তিনি গ্রাসমোড় বাগানের স্থায়ী শ্রমিক। তিনি বাগানের চার নম্বর লাইনে নিজের উঁচু কাঠের বাড়িতে থাকতেন। শনিবার রাতে তিনি ছাড়া বাড়িতে ছিলেন স্ত্রী সুশীলা হেমব্রম, মেয়ে ইভারানী হেমব্রম, ইভারানীর দেড়বছরের মেয়ে আকৃতি। উঁচু বাড়ির নীচটা গুদামের কাজে ব্যবহার হত। সকলে ওপরে দুটি ঘরে শুয়ে ছিলেন। একটি ঘরে ভিক্টরবাবু একাই ছিলেন। পাশের ঘরে তার পরিবারের লোকজন ছিলেন। পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, বাড়িটিকে বিদ্যুৎ নেই। কেরোসিনের লন্ঠন, কুপি বাতি ব্যবহার হয়। ওই ঘরে কিছু কেরোসিন তেলও মজুত করা ছিল। সম্ভবত কুপি বা লন্ঠন থেকে আগুন লাগে। তা মজুত করা কেরোসিন তেলের মাধ্যমে বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। মালবাজারের এসডিপিও অরিন্দম সরকার বলেন, “তদন্ত শুরু করে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।” রাত ২টা নাগাদ ইভারানী বাড়িতে আগুন লেগেছে দেখেন। তিনি বলেন, “আগুন দেখতে পেয়েই মা বাবাকে চিৎকার করে ডাকতে থাকি। দুই জনই উঠে পড়েন। বাবা লাফিয়ে কাঠের সিড়ির দিকে চলে যান। কিন্তু সে দিকে আগুন বেশি থাকায় তাঁকে পাশের ঘরে এসে জানলা দিয়ে লাফ দিতে বলি। এর মধ্যে আমি ও মা আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে জানলা দিয়ে বেরিয়ে আসি। বাবা পারেনি।” আগুন দেখে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অমর তিরকি খবর পেয়ে ছুটে আসেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঠের ওই বাড়ি ছাই হয়ে যায়। অমরবাবু জানান, কিছু করার আগেই বাড়িটা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পুলিশে খবর দিই। দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে আগের আগেই সব শেষ হয়ে যায়। মৃতের প্রতিবেশী ওয়াল্টার তিরকি, রূপনা ওঁরাও জানান, আগুন নিভলে ভিক্টর হেমব্রমের দেহের হদিস মেলে। ওঁর শরীরের মাথা, গলা-সহ বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছিল। রবিবার ঘটনাস্থলে যান লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিষ্ণুলাল সুব্বা। তিনি পরিবারটিকে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে চাল, ত্রিপল দেওয়া হবে বলে জানান। বাগান সূত্রের খবর, মৃত ভিক্টর হেমব্রম দীর্ঘদিন গ্রাসমোড় চা বাগানের চৌকিদার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি চা বাগানের কারখানার কাজে যোগ দেন। তাঁর মৃত্যুতে বাগানে শোকের আবহ। বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে রূপক দেব জানান, ভিক্টর সৎ ও পরিশ্রমী কর্মী ছিলেন। শনিবার চা বাগানের সকলের সঙ্গে তিনিও বোনাস তোলেন। |
|
|
|
|
|