বৃষ্টিতেও জমল পুজোর বাজার
পুজোর আর মাত্র দিন চারেক বাকি। বেশ কয়েকদিন ধরেই শরতের নীলাকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা, মাঝমধ্যেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টিতে পুজোর বাজার তেমন একটা জমেনি। রবিবারও ছিল অকাল বৃষ্টির ভ্রুকুটি। কিন্তু তার মধ্যেই তাই সকাল থেকে গাঁ-গঞ্জ ও মফসস্লের ক্রেতারা বাজার-হাটে ভিড় জমান। পাট বিক্রির টাকা হাতে চাষিরা, মাসমাইনের পর সরকারি চাকুরিজীবীরা হাত খুলে কেনাকাটা করেছেন। নদিয়ার বেথুয়াডহরির বস্ত্র ব্যবসায়ী সাধন দত্ত বলেন, “এমনিতেই প্রতি বছর পুজোর শেষ রবিবার বাজারে ক্রেতারা ভিড় জমান। তবে এ বার সেই সংখ্যাটা ছিল বেশি। চাষি থেকে চাকুরিজীবী সকলেই এ দিন দোকানের সামনে লাইন দিয়েছে।” এ দিন মুশির্দাবাদ ও নদিয়ার বাজারের এটাই ছিল চিত্র।
জল পেরিয়েই জমজমাট কেনাকাটা।—নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের বধিষ্ণু পরিবারের কর্তারাও কৃষ্ণনগরে পুজোর বাজার করতে রবিবার ভিড় জমান। জামা-কাপড় ও আনুষঙ্গিক কিছু কেনাকাটা করে হোটেলে দুপুরের খাবার সেরে তাঁরা বাড়ি গিয়েছেন। চাপড়ার বাসিন্দা সুকান্ত কর্মকার বলেন, “কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম পুজোর বাজার করতে কৃষ্ণনগরে যাব। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তা হয়ে উঠছিল না। রবিবার সকাল সকাল সপরিবারে চলে এলাম।” শহরের ব্যবসায়ীরা জানান, এ দিন মূলত শহরের আশপাশের লোকজনই ভিড় করেছেন। বেচাকেনাও বেশ ভালোই হল। বিকেল নাগাদ এক পশলা বৃষ্টি হলেও ক্রেতাদের উত্‌সাহে ভাটা পড়েনি। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেও ক্রেতারা দোকানের সামনে ভিড় জমিয়েছেন। তবে কৃষ্ণনাগরিকদেরও একাংশ এ দিন ছিলেন বাজারমুখী। শহরের এক রেডিমেড পোশাকের ব্যবসায়ী কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস বললেন, “শহরের মানুষ সিংহভাগ কেনাকাটাই আগেই সেরে ফেলেছেন। আজ শেষ মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ছোটখাটো কিছু কিনলেন।” ফি বছরের মত এ বারও মধুপর্ণা সামন্ত পুজোর বাজার করেছেন কলকাতায়। তিনি বলেন, “কলকাতা থেকে শাড়ি কিনেছি। আজ সামান্য কিছু কিনলাম।”
জামাকাপড়ের দোকানের পাশাপাশি চোখে ধরার মতো ভিড় ছিল প্রসাধন সামগ্রীর দোকানেও। মূলত অল্পবয়সী যুবতীরা সার দিয়ে ইমিটেশনের গয়নাগাটি কিনেছেন। ছুটির দিনে বাজারের এই চাঙ্গা হাল প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সহ সম্পাদক অক্ষয় ভট্টাচার্য বলেন, “কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে বিক্রিবাটা তেমন একটা জমেনি। বৃষ্টি না হওয়ায় রবিবার ক্রেতারা কেনাকাটা করায় ব্যবসায়ীরা খানিকটা হলেও খুশি।’’
অন্য দিকে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার কান্দি, বড়ঞা, ভরতপুর, খড়গ্রাম, সালারের বিভিন্ন বাজারগুলিতে এ দিন ছিল ক্রেতাদের জমজমাট ভিড়। বড়ঞার ডাকবাংলার হাটেও ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কৃষি প্রধান বড়ঞার মানুষই স্থানীয় হাটে চুটিয়ে কেনাকাটা করেছেন। হাটের এক ব্যবসায়ী ধীরেন প্রামাণিক বলেন, “সকাল থেকে আকাশ ছিল পরিষ্কার। তাই এ দিন ব্যবসাটা বেশ জমিয়েই হল।” শ্যামল ঘোষ নামে এক ক্রেতা জানালেন, এমনিতেই সারা বছর মাঠের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু পুজোর জন্য তো কিছু বাজার করতেই হয়। তাই এ দিন হাটে চলে এলাম। কান্দি শহরেও এ দিন ব্যাগ হাতে মূলত বিভিন্ন কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বাবু মিত্র বললেন, “এমনিতেই ছুটির দিন। তার উপর হাতে বোনাসের টাকাও এসেছে। তাই পুজোর বাজারটা সেরেই নিলাম।” কান্দি মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তারকনাথ প্রামাণিক বলেন, “এমনিতেই রবিবার ব্যবসা ভালো হয়। এটা শেষ রবিবার হওয়ায় বেচাকেনা বেশ জমল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.