|
|
|
|
সপ্তমীতে পালকি নিয়ে শোভাযাত্রা গোর্খাদের
উত্তম সাহা • শিলচর |
সপ্তমীর ভোরে পালকি (ঢুলি) নিয়ে শিলচরে শোভাযাত্রা বের করেন নেপালিরা। তা দেখার অপেক্ষায় থাকেন অন্যেরাও।
বরাক উপত্যকায় এখন হাজার দু’য়েক গোর্খা পরিবার। নিজেদের সংস্কার মেনে দুর্গাপুজো করেন তাঁরা। শিলচরের ঝালুপাড়া, উধারবন্দের হরিনগর এবং ধলাইয়ের গঙ্গানগরতিনটি পুজো হয় সেখানে। প্রতিমা, পুজোর নিয়ম একই।
তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে। ঝালুপাড়া নেপালি শিবমন্দিরের পুরোহিত গিরিরাজ বড়াল জানান, সপ্তমীর শোভাযাত্রার পালকিতে থাকে চালকুমড়ো। সামনে দুই রক্ষী। তাঁদের হাতে ‘কুকরি’। পিছনে নেপালি নারী-পুরুষ। সকলেই গানবাজনায় মেতে এগোন নদীর দিকে। সেখানে ফুল-বেলপাতার (ফুলপাতি) পুজো হয়। বলি দেওয়া হয় ওই চালকুমড়ো। ‘ফুলপাতি’-সহ শোভাযাত্রা মন্দিরে পৌঁছোলে শুরু হয় সপ্তমীর পুজো।
নেপালিদের দুর্গা-বন্দনা শুরু প্রতিপদে। সে দিন পঞ্চঘট স্থাপন করা হয়। পাঁচটি ঘটের সঙ্গে থাকে একটি ‘কুকরি’। পুরোহিত বড়ালের কথায়, “প্রতিদিন পঞ্চঘটের সঙ্গে অস্ত্রেরও পুজো করা হয়।”
কুমারী পুজোও স্বতন্ত্র। তিন থেকে এগারো বছরের ন’জন কুমারীর পুজো করা হয় মহানবমীতে। কুকরিরও বিশেষ পুজো হয় সে দিন। দশমীতে প্রতিমা নিয়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রা বেরোনোর আগে সবার কপালে চাল-মিশ্রিত সিঁদুরের টিকা দেওয়া হয়। কানে গোঁজা হয় ‘জমড়াগুচ্ছ’। ধান, যব ও ভুট্টার মিশ্রণ জমড়া। পুজোমণ্ডপেই এক জায়গায় রোপণ করা থাকে। ৯-১০ দিনে সেখানে কচিপাতা জন্মায়। সেটাই ‘জমড়াগুচ্ছ’।
বরাক উপত্যকা গোর্খা দুঃখ নিবারণ সমিতির সভাপতি শুভরাজ গুরুং বলেন, ‘‘শিলচরে নেপালি শিবমন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৩৬ সালে। দুর্গাপূজা শুরু দু’তিন বছর পর থেকে।’’ ঝালুপাড়ার শেখর দেবরায় বললেন, “সপ্তমীর ওই শোভাযাত্রার জন্য বাঙালিরাও অপেক্ষা করে থাকেন।” শুভরাজবাবুর বক্তব্য, “পুজোয় বাঙালি-নেপালি বিভেদ নেই। আমাদের তাঁরা চাঁদা দেন। তাঁদের অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ জানান। আমরাও পাড়ার অন্য পুজোয় চাঁদা দিই। যে কোনও প্রয়োজনে একে অপরের পাশে দাঁড়াই।” |
|
|
|
|
|