|
|
|
|
কার্ফু উপেক্ষা করেই সংঘর্ষ বিজয়নগরমে
সংবাদ সংস্থা • হায়দরাবাদ |
ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে তেলঙ্গানা-বিরোধী আন্দোলন। সীমান্ধ্রের বিজয়নগরম, বিজয়ওয়াড়া-সহ বেশ কিছু এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন। বিজয়নগরমে কার্ফু, দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ উপেক্ষা করেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তার মধ্যেই আজ অনশনের দ্বিতীয় দিনে ওয়াইএসআর কংগ্রেস নেতা জগন্মোহন রেড্ডি জানিয়েছেন, অন্ধ্র বিভাজনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে কাল, সোমবার দিল্লিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দেখা করবেন তাঁর দলের নেতারা। জগনের মা তথা অন্ধ্রপ্রদেশের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী রাজশেখর রেড্ডির স্ত্রী বিজয়াম্মা। প্রসঙ্গত অন্ধ্রের বিভাজন রুখতে আগামিকাল থেকে নয়াদিল্লিতে অনশনে বসার কথা তেলুগু দেশম নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডুর।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই বিদ্যুৎ কর্মীদের ধর্মঘটের ধাক্কায় সীমান্ধ্রের বিস্তীর্ণ এলাকা অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে। বিদ্যুৎকর্মীদের যৌথ অ্যাকশন কমিটি রবিবার জানিয়েছে, সংযুক্ত অন্ধ্রের দাবিতে তাঁরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য ভাগের সিদ্ধান্ত রদ না করলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। |
|
বিজয়নগরমে বিক্ষোভকারীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আধাসেনা। রবিবার। ছবি: পিটিআই। |
তেলঙ্গানা-বিভাজন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিজয়নগরম-সহ সীমান্ধ্রের বিভিন্ন এলাকা। গত কালই ক্ষিপ্ত জনতা আক্রমণ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বি সত্যনারায়ণ-সহ বেশ কিছু কংগ্রেস নেতার বাড়ি ও দলীয় অফিস। বড় ধরনের অশান্তির আশঙ্কায় গত কাল রাতেই বিজয়নগরমে কার্ফুর পাশাপাশি দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ জারি করা হয়।
কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ থামেনি। কার্ফু এবং দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ উপেক্ষা করেই আজ ফের অশান্ত হয়ে ওঠে বিজয়নগরমের বিভিন্ন এলাকা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এক আত্মীয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে হামলা চালায় জনতা। এক জায়গায় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে রবার বুলেটও ছোড়ে পুলিশ। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় জনতার সঙ্গে ইতস্তত খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়েছে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই একটি ব্যাঙ্ক-সহ একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে জনতা। লুঠ করা হয়েছে দোকানপাটও। গত কাল রাতেই শেষ হয়েছে অন্ধ্রের নন-গেজেটেড সরকারি কর্মীদের ডাকা বন্ধ। বিজয়নগরমের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সত্ত্বেও মোটের উপরে সীমান্ধ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই দাবি করেছেন অন্ধ্র পুলিশের আইজি দ্বারকা তিরুমালা রাও।
এর মধ্যই প্রশাসন এবং আমজনতার দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বিদ্যুতের আকাল। বিদ্যুৎকর্মীদের ধর্মঘটের ধাক্কায় বিজয়ওয়াড়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাতটি ইউনিটের মধ্যে ছ’টিই এখনও বন্ধ। বিদ্যুৎকর্মীদের যৌথ অ্যাকশন কমিটি রবিবার জানিয়েছে, সীমান্ধ্রের ৩০ হাজার কর্মী এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন। অন্ধ্রে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট। তার মধ্যে বিজয়ওয়াড়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৭০০ মেগাওয়াট। এক ধাক্কায় ওই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে গোটা রাজ্য। বিশেষত সীমান্ধ্রের বহু গ্রাম, বিজয়ওয়াড়া ও তার আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ধাক্কা খেয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন-চলাচল। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে চেন্নাই সেন্ট্রাল-বিজয়ওয়াড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেন। বাতিল হয়েছে বেশ কিছু লোকাল ট্রেনও। মুখ্যমন্ত্রী কিরণকুমার রেড্ডির অনুরোধেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে রাজি হননি বিদ্যুৎকর্মীরা। হাসপাতাল, জল সরবরাহ ও কৃষির মতো ক্ষেত্রকেও ছাড় দিতে নারাজ তাঁরা।
বিদ্যুৎ-ধর্মঘট না উঠলে দু’-এক দিনের মধ্যে সীমান্ধ্রের ১৩টি জেলাই অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রাজ্য প্রশাসনের। সমস্যায় পড়বে হায়দরাবাদ-সহ তেলঙ্গানার বিভিন্ন অংশও। এখানেই শেষ নয়। সাদার্ন গ্রিডেও সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অন্ধ্রের পাশাপাশি দক্ষিণের আরও তিনটি জেলা কর্নাটক, কেরল এবং তামিলনাড়ুও বিপাকে পড়তে পারে। |
পুরনো খবর: অন্ধ্র ভাগের বিরুদ্ধে অনশন শুরু জগন্মোহনের |
|
|
|
|
|