পুজো দোরগোড়ায়। দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও আকাশের মুখ ভার। প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েই চলেছে। টানা বৃষ্টিতে পুজোর বাজার কিংবা প্রতিমা তৈরিতে যেমন সমস্যা হচ্ছে তেমনই সমস্যা হচ্ছে চাষাবাদেও। সব্জি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কালনা মহকুমার কৃষি আধিকারিকেরা।
স্থানীয় ও কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সব্জির চাষের উপরই নির্ভর করে স্থানীয় বাজারগুলিতে সব্জির দাম। পুজোর সময় এমনিতেই সব্জির চাহিদা রয়েছে। এ বছর রবি মরসুমে কালনা মহকুমার প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সব্জির চাষ হয়েছে। এর বেশির ভাগটাই পূর্বস্থলী ১ ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকে। গ্রাম-বাংলার অনেক বাড়ির পুজো ও বারোয়ারি পুজোতেই ভোগ খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। বাজারের দিকে লক্ষ্য রেখেই কালনার চাষিরা ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিট, গাজরের মত সব্জির চাষ করেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু চাষিদের সমস্যায় ফেলেছে বৃষ্টি।
|
মহকুমা কৃষি দফতর ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ চাষের জমিতে জল জমে গিয়েছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কাঁকরাইল, বাবুইডাঙা, লক্ষীপুর-সহ কিছু এলাকার চাষিরা জমি থেকে জল বের করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতেও কাটছে না উদ্বেগ। ফুলকপি চাষি রমেন সাঁতরা বলেন, “টানা বৃষ্টিতে জমিতে এখনও যে ভাবে জল জমে রয়েছে তাতে ফলন মার খাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।”
কৃষি বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, চাষের জমির গোড়ায় জল জমে যাওয়ায় সব্জির খেতে ছত্রাকজনিত গোড়াপচা রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে। কালনা মহকুমা কৃষি দফতরের সহঅধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “চাষিরা এখন নতুন করে সব্জির খেত তৈরি করতে পারবেন না। যেখানে ইতিমধ্যেই চাষ হয়ে গিয়েছে সেখানেও ছত্রাকের আক্রমণে গাছ হলুদ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থেকে যাচ্ছে।” তাঁর আশঙ্কা এর ফলে পুজোয় স্বাভাবিক জোগানে ঘাটতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
তবে, এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মহকুমা কৃষি আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ছত্রাকজনিত রোগ হলে প্রতিষেধক হিসেবে ম্যাঙ্কোজেব নামক ছত্রাকনাশক স্প্রে আড়াই গ্রাম প্রতি লিটার জলে, অথবা কার্বেন ডাজিম নামক ছত্রাকনাশক স্প্রে ১ গ্রাম প্রতি লিটার জলে অথবা মেটালক্সিল এবং ম্যাঙ্কোজেব এই দুই ছত্রাকনাশক স্প্রের মিশ্রণ ১ গ্রাম প্রতি লিটার জলে স্প্রে করলে উপকার পাবেন চাষিরা। |