পুজোর সময় বিকেল থেকে রাজপথে অটোরিকশা চালানো যাবে না। গত বছরের মতো এ বারেও পঞ্চমী থেকে ত্রয়োদশী (১৭ অক্টোবর) পর্যন্ত এই নিয়ম বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। শনিবার মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র এই কথা জানিয়ে বলেন, “সকালের দিকে রাজপথে অটো চললে বিশেষ কিছু অসুবিধা হয় না। কিন্তু বিকেলে পুজো দর্শনার্থীদের ভিড়ের সময় অটো চললে যানজট সৃষ্টি হবে। তাই পরিবহণ দফতর বিকেলের পর থেকে অটো চালানো নিষিদ্ধ করছে।” পরিবহণ দফতরের এই সিদ্ধান্তের কথা কলকাতা পুলিশকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মদনবাবু জানান।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা ও তার লাগোয়া এলাকায় দিনে কমবেশি এক লক্ষ অটো চলাচল করে। সরকারের বক্তব্য, পুজোর ওই দিনগুলিতে সকালের মতো বিকেলেও অলি-গলিতে অটো চলতে পারে। লিঙ্ক রোডগুলিতেও অটো চালানো যাবে। কিন্তু রাজপথে নয়।
কিন্তু পুজোর সময় যাত্রী বাড়লে অটো-চালকদের তো কিছুটা বাড়তি আয়ও হয়। সরকারের কেন তাতে বাদ সাধছে? পরিবহণমন্ত্রী অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, “সারা দিন তো অটো চালানো বন্ধ থাকবে না। ফলে চালকদের আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কারণ নেই।”
বিকেলের পরে অটো বন্ধ থাকলে তো যাত্রীদেরও দুর্ভোগ বাড়বে? পরিবহণ মন্ত্রীর দাবি, “পুজোর দিনগুলিতে দিন-রাত রাস্তায় অঢেল সরকারি বাস চলবে। প্রতিটি ডিপোতে ১৫-২০টি করে বাস রিজার্ভে থাকবে। ফলে যাত্রীদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।” মদনবাবু বলেন, “সরকারি বাস পরিষেবায় যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য পরিবহণ কর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে।”
পুজোয় বিকেলের পর থেকে অটো চলাচল নিষিদ্ধ করাকে ‘সস্তা জনপ্রিয়তা’ পাওয়ার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন সিটুর অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “পুজোর সময় ভিড় হয় বড় বড় রাস্তায়। তখন শিয়ালদহ, মহম্মদ আলি পার্কের মতো এলাকায় এমনিতেই অটো চলতে পারে না ভিড়ের চোটে। তা হলে আবার নিষিদ্ধ করার মানে কী!”
মদনবাবু অবশ্য বলেন, “অটো যাত্রীদের কাছে অনিবার্য হয়ে উঠেছে। অটো আমাদের প্রয়োজন। কিন্তু পুজোর সময়ে দর্শনার্থীদের ভিড়কে জায়গা করে দিতে কিছু জায়গায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা অটো-চালকরা জানেন, প্রশাসনের কর্তারাও জানেন। আমি অটো-চালকদের অনুরোধ করব, সেই নিয়ম মেনে প্রতি বারের মতো এ বারেও তাঁরা মানুষকে পরিষেবা দিন, প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন।” |