বাধা জয়ে দৃষ্টিহীনদের প্রশিক্ষণ মডেল দুনিয়ায়
দৃষ্টিহীনদের জীবন-পথ মসৃণ করতে উদ্যোগী হল হলদিয়ার চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম। যাঁদের দু’চোখে আঁধার, তাঁরাও যাতে অনায়াসে রপ্ত করতে পারেন ব্যবহারিক জীবনের খুঁটিনাটি, বুঝে নিতে পারেন বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ, সে জন্য গড়ে তোলা হয়েছে এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আশ্রম কর্তৃপক্ষ ও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে তৈরি ‘সুসংহত প্রতিবন্ধকতাহীন পরিবেশ ও উপস্থাপন কক্ষ’ নামে এই কেন্দ্রের উদ্বোধন হল শনিবার। উপস্থিত ছিলেন, সাংসদ তথা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী।
দেশের মধ্যে এ ধরনের উদ্যোগ প্রথম বলে দাবি আশ্রম কর্তৃপক্ষের। তাঁদের মতে, কোনও দৃষ্টিহীন মানুষ এখানে দু’মাস থাকলেই চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা জন্মাবে। মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী বিশ্বনাথানন্দের কথায়, “দৃষ্টিহীনদের স্বাভাবিক জীবন দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। হংকঙে এমন ব্যবস্থা রয়েছে। ভারতে এই উদ্যোগ প্রথম।” শুভেন্দুও এ দিন বলেন, “দৃষ্টিহীনদের জীবনের ছন্দে ফিরিয়ে আনার এই প্রচেষ্টা মহৎ। সব রাজ্যেরই উচিত এমন কেন্দ্র গড়ে তোলা। আমরাই সারা দেশে প্রথম পথ দেখালাম।”
দৃষ্টিহীনদের সঙ্গে নিয়ে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। রয়েছেন আশ্রমের মহারাজরাও। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।
বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমের চক্ষু হাসপাতাল লাগোয়া দু’একর জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে ‘মডেল দুনিয়া’। কী নেই সেখানে। মাটি, ইট, মোরাম, পাকা রাস্তা থেকে মাইল স্টোন, কাঠ ও কংক্রিটের সেতু, পুকুর ঘাটে বাঁধা নৌকা, নলকূপ, মাঠ, ডোবা সবই রয়েছে। কৃত্রিম ভাবে বানানো হয়েছে পাহাড়, ঝর্না, মন্দির। আছে অনুষ্ঠানের জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ। উপস্থাপন কক্ষ সাজাতে ব্যবহার করা হয়েছে হেলেন কেলার, হোমার, গ্যালিলিও, লুই ব্রেইলের মতো প্রতিবন্ধকতাজয়ী ব্যক্তিত্বদের ছবি ও জীবনী।
আশ্রম সূত্রে খবর, সকালে ঘুম ভাঙা থেকে রাতে বিছানায় যাওয়া পর্যন্ত একজন মানুষ যা যা করেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে নানা সরঞ্জাম ও মডেলের মাধ্যমে। এক সঙ্গে ৮০ জন এখানে থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। দু’মাসের জন্য মাথাপিছু খরচ হাজার খানেক টাকা। দুঃস্থ দৃষ্টিহীনকে নিখরচায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আশ্রমের তরফে স্বামী বিবেকাত্মানন্দ বলেন, “দৃষ্টিহীনদের মধ্যে সব ধরনের পরিবেশের অনুভূতি জাগিয়ে বাস্তব জীবনে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্যই এই আয়োজন।”
দৃষ্টিহীনদের কী ভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো যায়, তার প্রশিক্ষণ নিতে ২০০৬ সালে হংকং গিয়েছিলেন আশ্রমের চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক শুভ্রা শীল। তিনিই ফিরে এসে এমন কেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব দেন। বলেন, “হংকং জুড়ে ‘বেরিয়ার ফ্রি অ্যাকসেস’ নামে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে রাস্তা পারাপার থেকে বাজারে জিনিসপত্র কেনা প্রতিটি ক্ষেত্রেই দৃষ্টিহীনদের সাহায্য করা হয়। হংকংয়ের এই ব্যবস্থায় অনুপ্রাণিত হয়েই আশ্রম কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম।” শুভ্রাদেবী জানালেন, হংকঙে রাস্তা পেরনোর সিগন্যালে মিউজিক বাজে, বাজারে রয়েছে বিশেষ ধরনের সিঁড়ি, স্থানে স্থানে ব্রেইল পদ্ধতির ম্যাপও আছে।
দীর্ঘদিন ধরেই দৃষ্টিহীনদের জন্য কাজ করছে বিবেকানন্দ মিশন। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ৬ থেকে ২৩ বছর পর্যন্ত দৃষ্টিহীনদের লেখাপড়া ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে এখানে। তবে নতুন প্রশিক্ষণে বয়সের বিধিনিষেধ থাকছে না। স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষও এই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। স্বামী বিবেকাত্মানন্দ বলেন, “জন্মান্ধ নন, কিন্তু পরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বা স্বল্প দৃষ্টিশক্তি রয়েছে, এমন মানুষেরও স্বাবলম্বী হতে আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন। এই প্রশিক্ষণ সেটাই দেবে।”

তপন ফের পুলিশ হাজতে
তাঁকে জেরা করে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তাই আবার গড়বেতার সিপিএম নেতা তপন ঘোষকে হেফাজতে চাইল গোয়ালতোড় থানার পুলিশ। শনিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন। বিচারক সুজিতকুমার ঝাঁ ফের পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন তপনবাবুকে। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় আত্মসমর্পণের পর গোয়ালতোড়ের একটি কঙ্কাল মামলায় তপনবাবুকে অভিযুক্ত করা হয়। সেই মামলার সূত্রে তাঁকে জেরা করে গোয়ালতোড়ের পেরুয়াবাঁধের জঙ্গল থেকে দেশি পিস্তল বিদেশি কার্তুজ পাওয়া যায় বলে পুলিশের দাবি। যদিও অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী বিশ্বনাথ ঘোষ আদালতে লিখিত ভাবে দাবি করেন, “হেফাজতে থাকাকালীন আমার মক্কেল পুলিশকে এ বিষয়ে কিছুই বলেননি। পুলিশ কিছু জানতেও চায়নি। গোটাটাই সাজানো।” পুলিশ সূত্রে খবর, তপনবাবুকে জেরা করে এফআইআরে নেই, এমন কিছু নাম পাওয়া গিয়েছে। সেই তালিকায় ‘হেভিওয়েট’ সিপিএম নেতারাও আছেন বলে খবর।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.