|
|
|
|
বাজার-নজরদারিতে এ বার মোবাইল |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
পুর-বাজারগুলির নজরদারির ক্ষেত্রে ফাঁকিবাজি নিয়ে হামেশাই অভিযোগ ওঠে। এ বার তা ধরতে উন্নত ধরনের মোবাইল পরিষেবার সাহায্য নিচ্ছে পুর-প্রশাসন। বাজারে নিরাপত্তারক্ষী ঠিক ভাবে কাজ করছেন কি না, বাজারের ভিতরে কেউ আগুন জ্বেলে রান্না করছেন কি না বা বাজারের দায়িত্বে থাকা সুপারিন্টেনডেন্ট সময়মতো বাজার পরিদর্শন করছেন কি না, সবই জানা যাবে মোবাইল থেকে। শনিবার নিউ মার্কেট নজরদারির কাজে ওই মোবাইল পরিষেবার ব্যবহার শুরু করল।
পুরসভার এক পদস্থ অফিসার জানান, ৩জি প্রযুক্তির এই মোবাইলে দু’টি ক্যামেরা রয়েছে ভিডিও কলের জন্য। একটির কাজ হল, যিনি ফোন করছেন তাঁর অবস্থান জানানো। অন্য ক্যামেরায় ধরা পড়বে যাঁকে ফোন করা হচ্ছে, তিনি কী করছেন, কোথায় আছেন এবং সেই ক্যামেরায় তিনি জানাতে পারবেন বাজারের অবস্থা।
এ দিন পুরসভার ৪৬টি বাজারের দায়িত্বে থাকা ৩২ জন সুপারের হাতে ওই মোবাইল তুলে দেয় পুর-প্রশাসন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট বাজারে গিয়ে বাজারের হাল-হকিকত জানাতে হবে বাজার দফতরের কর্তাদের। এক পুর-কর্তার অভিযোগ, সম্প্রতি বিভিন্ন পুর-বাজার ঘুরে দেখা যায়, অনেক জায়গায় যত নিরাপত্তাকর্মী থাকার কথা, তা নেই। এমনকী, অগ্নিসুরক্ষা নিয়ে বারংবার বলা সত্ত্বেও বাজারের ভিতরে দিব্যি আগুন জ্বালিয়ে চলছে রান্নার কাজ।
পুরসভার মেয়র পারিষদ তারক সিংহ জানান, প্রতিটি বাজারের সুপারিন্টেনডেন্টকে ২৪ ঘণ্টাই মোবাইল খুলে রাখতে বলা হয়েছে। পুর-বাজারের পদস্থ অফিসারেরা প্রয়োজন মতো বিভিন্ন বাজারের হাল জানতে ফোন করবেন। তখন সংশ্লিষ্ট বাজারের দায়িত্বে থাকা সুপারিন্টেনডেন্ট মোবাইল নিয়ে ওই অফিসারের নির্দেশ মতো বাজারের ভিতর ঘুরবেন। আর সেই মোবাইলে ওঠা ছবি দেখেই বাজারের পরিস্থিতি জানা যাবে। তারকবাবু বলেন, “যদি অভিযোগ আসে নিরাপত্তারক্ষী যত জন থাকার কথা তত সংখ্যক নেই, তখনই সুপারিন্টেনডেন্টকে বলা হবে সমস্ত নিরাপত্তারক্ষীকে তাঁর পাশে ডেকে নিতে। তাতেই আসল তথ্য মিলবে।”
পুর-বাজার দফতরের চিফ ম্যানেজার জানান, টেন্ডার ডেকেই তা কেনা হয়েছে। এক একটি মোবাইলের দাম ১৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে মোবাইল পিছু ৩জি সংযোগ এবং টক-টাইম বাবদ মাসিক খরচ হবে ৩৯০ টাকা। পুর-বাজার দফতরের এক অফিসারের বক্তব্য, “এই ধরনের মোবাইল পরিষেবা যাতে চালু করা না যায় তা নিয়ে জলঘোলাও হয়। একদল কর্মী চেয়েছিলেন পুরনো ব্যবস্থাই চালু থাকুক।” আসলে কাজে ফাঁকি দেওয়া রুখতে অনেক দিন ধরেই তৎপর পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ। এ নিয়ে একাধিক বার তিনি কয়েকটি পদক্ষেপও করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁকে পিছিয়েও আসতে হয়। এর মধ্যে সব চেয়ে বড় বিষয় ছিল নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগে লাগাম টানা। কিন্তু সেই কাজে এগিয়েও পিছিয়ে আসতে বাধ্য হন তিনি। প্রসঙ্গত, কলকাতার ৪৬টি পুর-বাজারে মোট ৪৯৮ জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রয়েছে। পুর-বাজার দফতরের এক আধিকারিকের মতে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। তারকবাবুদের আশা, নতুন এই ব্যবস্থার ফলে নিরাপত্তারক্ষী-সহ পুর-বাজারের কর্মীর উপস্থিতি এবং বাজারের হাল হকিকত সবই যে কোনও সময় ধরা যাবে। |
|
|
|
|
|