ওদের বাড়ি নেই। হোমের ঘরই ওদের সারাবছরের ঠিকানা। পুজোর কয়েক দিন ওদের ‘ভাল’ রাখতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। যার শুরু হল শুক্রবার মহালয়ার দিন থেকে। শুক্রবার সমাজকল্যাণ দফতর অধীন রায়গঞ্জে সুর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক হোমের বাসিন্দা ৯৫ জন মূক ও বধির আবাসিক কিশোর-কিশোরীকে বস্ত্র বিলি করা হয়। প্রশাসনের উদ্যোগে সামিল হন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক মধুসূদন রায় এবং তাঁর স্ত্রী মহারাজাহাট হাইস্কুলের শিক্ষিকা কল্পনাদেবী। এ দিন রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় হোম চত্বরে প্রশাসন এবং মধুসূদনবাবু ও কল্পনাদেবী পৃথক ভাবে মূক ও বধিরদের আবাসিক কিশোর কিশোরীদের মধ্যে নতুন জামা-কাপড়, জুতো, প্রসাধনী সামগ্রী এবং মিষ্টি বিলি করেন। আবাসিকদের দুপুরের খাওয়ারের ব্যবস্থাও করা হয় এদিন। এ দিনের অনুষ্ঠানের জন্য আবাসিকরাই হোম জুড়ে বেলুন লাগায়। হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথি দাস বলেন, “মূক ও বধিররা সারা বছর হোমে থাকে। ওদের একঘেয়েমি কাটিয়ে দুর্গাপুজোর আনন্দে সামিল করতেই আমরা এবং প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছি। মধূসুদনবাবু এবং কল্পনাদেবীকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।” |
অনাথ এবং ভবঘুরে মূক ও বধির শিশু কিশোরদের ওই হোমের দুটি পৃথক হস্টেলে ৪২ জন কিশোর ও ৫৩ জন কিশোরী রয়েছে। এ দিন প্রশাসনের তরফে আবাসিকদের জন্য বিশেষ মেনুর ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। মেনুতে ভাত, ফ্রায়েডরাইস, ডাল, সবজি, মাছ মাংস চাটনি, দই ও মিষ্টি ছিল। রাতে মেনুতে হোমের তরফে আবাসিকদের জন্য লুচি, ডিমের ডালনা এবং মিষ্টির আয়োজন রাখা হয়। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলাশাসক সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া, মহকুমাশাসক সৌর মণ্ডল, জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক অনুকূল সরকার সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা ছিলেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “আবাসিকদের আনন্দে সামিল করাটা আমাদের কর্তব্য। এই কাজে হোম কর্তৃপক্ষ, মধূসুদনবাবু ও কল্পনাদেবীর ভূমিকা প্রশংসনীয়। আবাসিকদের বাসে চাপিয়ে রায়গঞ্জের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে ঘোরানো হবে।” মধূসুদনবাবু ও কল্পনাদেবী বলেন, “ওদের পাশে দাঁড়াতে ভাল লাগছে। ভবিষ্যতেও ওদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।” |