পুণ্যার্থীদের সুরক্ষায় সামিল মাঝিরাও
র্পণ করতে এসে কেউ যাতে বিপদে না পড়েন, সে দিকে নজর রাখতে এ বার এগিয়ে এলেন মাঝিরা। পুলিশ, প্রশাসনের পাশাপাশি তাঁরাও গঙ্গার ঘাটে ঘাটে ঘুরে বেড়ালেন নৌকা নিয়ে। গঙ্গায় নামা মানুষকে সতর্ক করলেন বিপদ সম্পর্কে। শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত রোজগার বন্ধ রেখে এ ভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ালেন বেলুড় ও দক্ষিণেশ্বরের মাঝিরা।
বেলুড় মঠের পাশেই রয়েছে কাঠগোলা ঘাট। রোজ সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এখান থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দির পর্যন্ত ৪২টি মোটরচালিত নৌকা চলাচল করে। ১২৫ জন মাঝি সেই নৌকা পারাপারের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার মানুষ এই খেয়া পরিষেবা ব্যবহার করেন।
তর্পণের ঘাটে মাঝিদের নজরদারি। শুক্রবার, বেলুড়ে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
এ দিন ভোর ৫টায় বেলুড়ের ওই ঘাট থেকে নৌকা চলাচল শুরু হলেও সেগুলিতে কেউ পারাপার করেননি। ভোর থেকেই পাঁচটি নৌকায় চেপে মাঝির দল বেলুড় থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত প্রায় ১৫টি ঘাটে ঘুরে বেরিয়েছেন। নৌকায় রাখা ছিল দড়ি, টায়ার, টিউব। স্বপন গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক মাঝি বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতেই আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে স্থির করে নিয়েছিলাম, কোন নৌকায় কে কে থাকবে। প্রতিদিনের ডিউটির তালিকা যেমন করে তৈরি করা হয়, এ দিনও তাই হয়েছিল। সেই মতোই প্রতি ঘাটে ঘুরে মানুষকে সতর্ক করেছি।”
এমনিতেই কোনও উৎসবের দিন বেলুড় ও দক্ষিণেশ্বরে দর্শনার্থীর ভিড় অন্যান্য দিনের থেকে কয়েকগুণ বেশি থাকে। তাই বিগত বছরগুলিতে মহালয়ার দিন গঙ্গার ঘাটের ভিড় কাটিয়ে কয়েকটি নৌকায় যাত্রী পারাপারের কাজ চালু থাকত। কিন্তু বিভিন্ন দুর্ঘটনার পরে এ বছর মাঝিরা সমবেত ভাবে শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বেলুড়-দক্ষিণেশ্বর খেয়া পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি, এই সুরক্ষা ও সতর্ক করার কাজে উদ্যোগী হন।
ব্রহ্মতেজ... তর্পণের ভিড়ে যজমান ধরা নিয়ে দুই পুরোহিতের
নারদ-নারদ। শুক্রবার সকালে, বাবুঘাটে। ছবি: প্রদীপ আদক।
কী ভাবে চলল মানুষকে সতর্ক করার কাজ? মাঝিরা জানান, দীর্ঘ দিন নৌকা নিয়ে যাতায়াতের ফলে বেলুড় থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে কোন ঘাটে কী বিপদ, তা তাঁদের জানা। তাই এ দিন ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তাঁরা চলে গিয়েছিলেন বিভিন্ন ঘাটে। যেমন, বালির কেদারঘাটে বেশ কয়েকটি সিঁড়ি নামার পরেই একটি বড় গর্ত রয়েছে। বহু বার সেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দিন ওই ঘাটে যাঁরা স্নান করতে নেমেছিলেন, গঙ্গা থেকেই তাঁদের ওই গর্তের দিকে না যেতে সাবধান করছিলেন টহলদারি নৌকার মাঝিরা। সকালের দিকে ভাটা চললেও বেলার দিকে জোয়ার আসায় অনেক ঘাটেই জল খুব বেড়ে যায়। সেই ঘাটগুলিতেও বিশেষ নজরদারি চলেছে।
বেলুড় ও দক্ষিণেশ্বর ঘাটেও আপৎকালীন নৌকা নিয়ে তৈরি ছিলেন মাঝিরা। যাতে গঙ্গায় টহলদারি নৌকা থেকে কোনও খবর পেলেই সেখানে পৌঁছে যাওয়া যায়।
বেলুড়-দক্ষিণেশ্বর জলপথ পরিবহণ কর্মী সংগঠনের সভাপতি পল্টু বণিক বলেন, “ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত খেয়া পরিষেবা বন্ধ রাখায় প্রায় হাজার চারেক টাকা লোকসান হয়েছে। কিন্তু তাতে কী? মানুষদের সুরক্ষা তো দিতে পেরেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.