পুজোর চেনা মেজাজে বাদকুল্লা
গদ্ধাত্রী পুজোয় মেতে ওঠে কৃষ্ণনগর। কালীপুজোয় ধুবুলিয়া। তবে নদিয়ায় নজরকাড়া দুর্গাপুজো মানে বাদকুল্লা। ছোট্ট জনপদে দুই কিলোমিটারের মধ্যে ফি বছর খান দশেক বড় বাজেটের পুজো দেখতে ষষ্ঠী থেকে নবমী কয়েক লক্ষ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। চোখ জুড়ানো মণ্ডপ, মন মাতানো আলোকসজ্জা দেখতে শুধু নদিয়া নয়, পড়শি জেলাগুলি থেকেও অনেকে ভিড় জমান বাদকুল্লায়। কলকাতার মতোই দর্শকরা রাত জাগা চোখে এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে সার দিয়ে পুজো দেখেন।
বাদকুল্লায় দুর্গার আরাধনার ইতিহাস বেশ পুরনো। ষাটের দশক থেকেই বিভিন্ন ক্লাব দুর্গা পুজো করে আসছে। ১৯৬৬ সাল থেকে বাদকুল্লার অনামি ক্লাবের পুজো শুরু হয়। প্রায় সমসাময়িক কালেই উদয়ন সংঘ, ইউনাইটেড ক্লাব বারোয়ারি পুজোর আয়োজন শুরু করে। তখনকার পুজোয় অবশ্য তেমন আড়ম্বরের ছোঁয়া ছিল না। আশপাশ এলাকার বাসিন্দারাই আসতেন মণ্ডপে। আটের দশকের শেষ ভাগ থেকেই পুজোয় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে।
পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, বছর দশেক ধরে ভিড় হচ্ছে মাত্রাছাড়া। গত তিন বছর তা রেকর্ড করেছে। অনামি ক্লাবের সম্পাদক অশোক সরকার বলেন, “গত বছর ভিড় সামলাতে আমাদের রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল।”
চাকদহের স্কুল শিক্ষক সঞ্জয় হালদার বলেন, “ফি বছর নিয়ম করে নবমীর দিনে সপরিবার বাদকুল্লায় যাই। ওখানকার পুজোয় আড়ম্বরই আমাকে টানে। শহর কলকাতার পুজো দেখার স্বাদ অনেকটাই মেটে বাদকুল্লার মণ্ডপগুলি ঘুরলে।” পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের গোপালপুরের বাসিন্দা রাজীব ঘোষ, শক্রুঘ্ন মণ্ডলরা বলেন, “আমাদের এলাকায় তেমন বড় পুজো হয় না। তাই বন্ধুবান্ধব জুটিয়ে পুজোর যে কোনও একদিন বাদকুল্লায় যাই। অনেকটা রাত জেগে পুজো দেখে ভোরের ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরি।”
উদ্যোক্তাদের আশা, প্রতিবারের মতো এ বারও মানুষের ঢল নামবে পুজো প্রাঙ্গণে। অনামি ক্লাবের এ বারের আকর্ষণ, দিল্লির লালকেল্লার অনুকরণে মণ্ডপ এবং পাট ও তালপাতা দিয়ে তৈরি প্রতিমা আর কৃষ্ণের জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় অবলম্বনে চন্দননগরের আলোকসজ্জা। উদয়ন সঙ্ঘের বিশেষ আকর্ষণ রাশিয়ার সেন্ট বেসিল চার্চ-এর অনুকরণে মণ্ডপ। থাকছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, ভূত বাংলো ও কার্টুন চরিত্রের উপর আলোকসজ্জা। বাদকুল্লা ইউনাইটেড ক্লাবের সভাপতি রামকৃষ্ণ জোয়ারদার জানাচ্ছেন, তাঁদের এ বারের মণ্ডপ হচ্ছে ডিজনিল্যান্ডের একটা অংশের অনুকরণে। ফ্রেন্ডস ক্লাবের মণ্ডপ সেজে উঠেছে রাজস্থানের হাওয়া মহলের আদলে। নবীন সঙ্ঘের রানিগঞ্জের কয়লাখনির অনুকরণে মণ্ডপ দর্শকদের টানবে। এ ছাড়াও পূর্ব বাদকুল্লা বারোয়ারি, পল্লিশ্রী, নবশ্রী, এনবিসি, ভ্রাতৃশ্রী, যুবকসঙ্ঘ, জয়শ্রী প্রভৃতি পুজোমণ্ডপগুলো দর্শক টানবে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা।
কার্যত স্পনসরহীন এই পুজোগুলো নির্ভর করে সদস্য ও আশপাশ গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা চাঁদার উপর। আর পুজোর চারদিন মণ্ডপের সামনে হাজির থাকা দোকানদারদের থেকে সংগ্রহ করা স্বল্প অর্থ। বড় পুজোগুলির উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পাশের প্রায় ৩০-৪০টা গ্রাম থেকে চাঁদা তোলা হয়। যদিও এ বছর বর্ষার প্রলম্বিত ইনিংসে সে কাজে খানিকটা ব্যাঘাত ঘটেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.