|
|
|
|
সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিপূরণ |
মহালয়ায় হাতে চেক, খুশি আমানতকারীরা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সারদা-কাণ্ডের চেক বিলি শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। শুক্রবার, মহালয়ার দিনই জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে ৬০০ জন ক্ষতিগ্রস্তকে এবং ঝাড়গ্রামে ১৬১ জনকে চেক দেওয়া হয়। মেদিনীপুরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুশান্ত চক্রবর্তী, দুই বিধায়ক মৃগেন মাইতি এবং শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। ছিলেন তৃণমূল নেতা প্রদ্যোৎ ঘোষ, প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, রমাপ্রসাদ গিরি প্রমুখ। প্রদ্যোৎবাবু জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। প্রসেনজিৎবাবু দলের যুব নেতা। রমাপ্রসাদবাবু ছাত্র নেতা। পরিচয় দিতে গিয়ে সঞ্চালক এঁদের রাজনৈতিক পরিচয় দেননি। সকলকেই ‘বিশিষ্ট সমাজসেবী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। |
|
ক্ষতিগ্রস্ত সারদার আমানতকারীদের হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন মন্ত্রী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বিরোধীরা। প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণার কটাক্ষ, “সবেতেই রাজনীতি হচ্ছে।” শাসকদলের নেতারা অবশ্য একে ‘কুৎসা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতির কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী কথা রেখেছেন। অনেক কুৎসা হয়েছিল। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু দমে যাওয়ার মানুষ নন। কোনও সমালোচনা তিনি পরোয়া করেন না।”
শ্যামল সেন কমিশন ঝাড়াই-বাছাই করে সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে জেলায়। পাঠানো হয়েছে তাঁদের নামের চেকও। ওই তালিকায় মোট ৬ হাজার ৫৯৭ জন আমানতকারীর নাম রয়েছে। এর মধ্যে ৬০০ জনকে এ দিন মেদিনীপুরে চেক দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এরপর ব্লকস্তরে চেক প্রদান হবে। তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের সকলকেই আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে চেক প্রদানের চেষ্টা চলছে। কারণ, রাজ্য সরকার চাইছে পুজোর আগেই ক্ষতিপূরণ দিতে। এ দিনের অনুষ্ঠানে জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানবিক মুখ দেখালেন। এটা তো (সারদা-কাণ্ড) বন্যা-সুনামির চেয়ে কম কিছু নয়। চরম বিপর্যয় হয়েছে। সত্যিই তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) সাহসিনী, তিনি বাঘিনী, তিনি সিংহী।” এ দিন যাঁরা চেক পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন টুম্পা সৎপতি, সুকান্ত বীর, অমিতকুমার বেরা প্রমুখ। মেদিনীপুরের বাসিন্দা টুম্পা সারদায় ৭ হাজার ৫০০ টাকা লগ্নি করেছিলেন। তাঁর কথায়, “টাকা ফেরত পাব, ভাবতে পারিনি। পুজোর আগে চেক পেলাম। ভাল লাগছে।” |
|
ঝাড়গ্রামে সারদার চেক বিলি। |
প্রথমে ঠিক ছিল ঝাড়গ্রামের দেবেন্দ্রমোহন হল থেকে এ দিন মহকুমার ৫টি ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত চারশো আমানতকারীকে চেক দেওয়া হবে। কিন্তু চেক পেয়েছেন ১৬১ জন। ঝাড়গ্রামে বিতরণকেন্দ্রও পরিবর্তন করা হয়। ঝাড়গ্রাম এসডিও প্রাঙ্গণে মঞ্চ তৈরি করে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল ১১টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের হাতে চেক তুলে দেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক এস অরুণপ্রসাদ, ঝাড়গ্রামের সহকারি পুলিশ সুপার (অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপার) অজিত সিংহ যাদব প্রমুখ।
এ দিন ঝাড়গ্রাম, জামবনি, বিনপুর-১, গোপীবল্লভপুর-১ ও গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের মোট ১৬১ জন আমানতকারীর হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন মন্ত্রী ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। প্রশাসনের উদ্যোগে আমানতকারীদের এসডিও অফিস প্রাঙ্গণের বিতরণকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া ও ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। ছিল জলযোগের ব্যবস্থাও। চেক পেয়ে উচ্ছ্বসিত ঝাড়গ্রামের অনুপকুমার মাইতি, জামবনির বিন্টু হাতি, গোপীবল্লভপুরের অজিত নন্দীদের বক্তব্য, “পুজোর আগে টাকা পেয়ে আমরা উপকৃত হয়েছি। মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আমরা টাকা ফেরত পেলাম।” |
|
|
|
|
|