পাক-আফগান সীমান্তবর্তী শরণার্থী শিবিরের কঠিনতম জীবনযুদ্ধ পেরিয়ে ক্রিকেট মাঠে আসা নওরোজ খান মঙ্গলের।
মহম্মদ শাহজাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠাও সেই পেশোয়ারে, আফগান শিবিরে। ক্রিকেট শুরু কলোনির অলি-গলিতে।
এ বছরই মে মাসে মহম্মদ নবির বাবা খোবাই ইসাখেলকে তালিবান জঙ্গিরা তুলে নিয়ে গিয়েছিল তাদের ডেরায়। বহু উদ্বেগের দিন কাটার পর নবির বাবা ফেরেন বটে, কিন্তু দীর্ঘ অত্যাচারে জীর্ণ ও অসুস্থ হয়ে।
এমন ইতিহাস আফগানিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যদের অনেকের জীবনেই আছে। বারুদের গন্ধ ওঁদের রক্তে মিশে। স্বচক্ষে দেখা হত্যা, অমানুষিক অত্যাচারের দৃশ্য ওঁদের স্মৃতিতে। সেই স্মৃতি সঙ্গে নিয়েই ওঁরা মাঠে নামেন। শরণার্থী শিবিরের সেই কঠিন লড়াই থেকেই ক্রিকেট মাঠে আগ্রাসী হয়ে ওঠার রসদ পান। প্রায় পাঁচশো দিন পর শুরু হতে চলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও যে জীবনযুদ্ধের এই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগবে তাঁদের, তা স্বীকার করে নিয়েই এ দিন জয়ের পর আফগানিস্তানের অধিনায়ক নবি বলেন, “জীবন অনেক কিছু শিখিয়েছে আমাদের। ক্রিকেট মাঠের লড়াইও আমরা শিখেছি জীবন দিয়েই। বিশ্বকাপেও তা কাজে লাগবে আমাদের।” |
গত বছর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এ বার ৫০ ওভার ক্রিকেটের বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিলেন মহম্মদ নবিরা। শুক্রবার শারজায় আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ চ্যাম্পিয়নশিপে কেনিয়াকে সাত উইকেটে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার টিকিট জিতে নিলেন আফগানরা। কেনিয়াকে ৯৩ রানে অল আউট করে দিয়ে মাত্র ২০.৫ ওভারেই সেই রান তুলে ফেলে আফগানিস্তান। ১৪টির মধ্যে ন’টি ম্যাচ জিতে বিশ্ব ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশের ক্রিকেটাররা। বাছাই পর্ব থেকে ওঠা আর এক দল আয়ার্ল্যান্ড। আরও দু’টি দল মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করবে আগামী বছর নিউজিল্যান্ডে এক টুর্নামেন্ট থেকে। পুল ‘এ’-তে অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে থাকবে তারা।
২০০১-এ জাতীয় ফেডারেশন গড়ে আইসিসি-র সদস্য হয় আফগানিস্তান। ২০০৭-এ তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য এসিসি টি টোয়েন্টি কাপজয়। ২০১১-র বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ছ’নম্বরে থাকায় সে যাত্রা সফল হতে না পারলেও এত দিনে স্বপ্ন পূরণ হল আফগানদের। |