এত দিন তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের ছায়ার সঙ্গে। বিপক্ষ কোচেদের সঙ্গে। এ বার ডেভিড মোয়েসের সামনে নতুন এক প্রতিপক্ষ।
নাম? লরেন মোয়েস। পরিচয়? ডেভিড মোয়েসের মেয়ে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে নড়িয়ে দিয়েছে এক নতুন বিতর্ক। মোয়েসের ১৯ বছরের মেয়ের প্রেমে নাকি মজেছেন ম্যাঞ্চেস্টারের ২০ বছর বয়সি তরুণ উইঙ্গার উইলফ্রেড জাহা। ঘনিষ্টতা এমনই পর্যায়ে গিয়েছে যে দু’জনকে এক ঘরে রাত কাটাতেও দেখা গিয়েছে। এটা যদি বিতর্কের প্রথম অংশ হয়, দ্বিতীয়টাও কম চাঞ্চল্যকর নয়। মেয়ের সঙ্গে জাহার প্রেম দেখে এতটাই রেগে গিয়েছেন মোয়েস, যে জাহাকে ম্যাচে খেলার সুযোগই দিচ্ছেন না। এমনকী কয়েক মাসের মধ্যে লোনে এই ফুটবলারকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নাকি নিয়ে ফেলেছেন ম্যান ইউ কোচ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সোশাল সাইট মারফত লরেন-কেলেঙ্কারি এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে বাধ্য হয়ে দু’পক্ষকেই মুখ খুলতে হয়েছে। লরেন আর মোয়েস গোটা ব্যাপারটাই অস্বীকার করার পর জাহাও টুইট করেন, “বোকা বোকা সব গুজব। শিশুসুলভ আচরণ ছাড়া আর কী বলব!”
মেয়ের জন্য মোয়েসকে এর আগেও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। সুয়ারেজকে তাঁর বাবা কেন কিনতে পারেননি, তা নিয়ে টুইটারে প্রশ্ন তুলেছিলেন লরেন। যথারীতি যা নিয়ে বড় বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। পরে অবশ্য সেই টুইট মুছে ফেলে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন লরেন। |
কিন্তু এ বারের বিতর্ক কি এত সহজে মুছে ফেলা যাবে? এমনিতেই পরিসংখ্যান বলছে, ম্যানেজার হিসেবে স্যর অ্যালেক্সের শেষ সই করানো ফুটবলারকে মোয়েস এখনও একটা ম্যাচেও মাঠে নামাননি। প্রিমিয়ার লিগে সোয়ানসি আর ক্রিস্টাল প্যালেসের বিরুদ্ধে, ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে লিভারপুল ম্যাচে প্রাথমিক দলে জাহার নাম ঘোষণাই সার। ওয়ার্ম আপ করারও সুযোগ ঘটেনি তাঁর। এ বার তো জাহাকে ছেড়েও দিতে চাইছেন মোয়েস। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, লরেন বিতর্কের রোষের বলিই হলেন না তো জাহা?
নিজেও হয়তো ব্যাপারটা কিছুটা আঁচ করেছেন জাহা। দু’বার ইংল্যান্ডের জার্সি পড়া অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবলার জানেন বিশ্বকাপে রয় হজসনের টিমে জায়গা পেতে হলে তাঁর নিয়মিত প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে নামাটা কতটা জরুরি। লোনে অন্য ক্লাবে যাওয়ার ব্যাপারেও তাই আপত্তি নেই জাহার। শুধু তাই নয়, শোনা যাচ্ছে জাহার পুরনো ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেস তো বটেই, সোয়ানসি, ওয়েস্ট ব্রম, স্টোক আর নিউক্যাসেলও ম্যান ইউয়ের তরুণ তুর্কিকে টিমে নেওয়ার ব্যপারে আগ্রহ রয়েছে। মাঠের পারফরম্যান্স আর মাঠের বাইরের বিতর্ক। দুইয়ের চাপে মোয়েস কতটা বেসামাল হয়ে পড়ছেন, তা তাঁর কথাবার্তাতেই ধরা পড়ছে। নিজের ঢাক নিজেই পিটিয়ে দেশজ মিডিয়ায় মোয়েস শুক্রবার বলে দেন, “ম্যান ইউ ভাল ক্লাব। আর ম্যাঞ্চেস্টারকে নেতৃত্ব দেওয়ার আমিই সবচেয়ে যোগ্য লোক। আমি নিশ্চিত ঠিক লোককেই ওরা বেছে নিয়েছে (ম্যানেজার হিসেবে)। স্যর অ্যালেক্সেরও তো সায় ছিল এই সিদ্ধান্তে।”
শনিবার সান্ডারল্যান্ডের বিরুদ্ধে মোয়েসের অগ্নিপরীক্ষা। ইপিএলে টানা তৃতীয় ম্যাচ হারের হাত থেকে টিমকে রক্ষা করার চ্যালেঞ্জ। গত ১২ বছরে ম্যান ইউয়ের যে রেকর্ড নেই। ব্যর্থ হলে মোয়েসের ভাগ্যে কী অপেক্ষা করে থাকবে, সেটা সময়ই বলবে। |