|
|
|
|
আর্ট কলেজের পড়ুয়ারাই পুজোর ‘থিম মেকার’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কলকাতার দিকে চল রয়েছে। এখন হলদিয়া, মেদিনীপুর, খড়্গপুরের মতো জেলার শহরেও পুজোর ‘থিম মেকার’ হচ্ছেন আর্ট কলেজের পড়ুয়ারা। জৌলুসে টেক্কা দিতে এঁদের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তাই।
আজ, শুক্রবার মহালয়াস দেবীপক্ষের সূচনা। হাতে আর নামমাত্র সময়। ফলে, দম ফেলার ফুরসত নেই বিশ্বরঞ্জন রাজ, মিলন দাস, রাজনারায়ণ সাঁতরাদের। দিনরাত এক করে চলছে কাজ। কেউ থার্মোকলের কাজ করছেন, কেউ প্লাস্টার অফ প্যারিস। কেউ বা পট আঁকতে ব্যস্ত। বৃষ্টিতে আবার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে, আর্ট কলেজের চিন্তা বাড়ছে। রাজনারায়ণ বলছিলেন, “টানা বৃষ্টির জন্য বেশ সমস্যা হল। না হলে এতদিনে কাজ অনেকটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।” |
|
সিপাইবাজারে মণ্ডপ তৈরিতে ব্যস্ত আর্ট কলেজের ছাত্ররা।—নিজস্ব চিত্র। |
মেদিনীপুর আর্ট কলেজে ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনা করেছেন রাজনারায়ণ। বাড়ি হুগলির কামারপুরে। সঙ্গে রয়েছেন সোমনাথ দাস, প্রশান্ত সাঁতরা, অনল রায়। সোমনাথ, প্রশান্ত আর্ট কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। রাজনারায়ণরা এ বার মেদিনীপুর শহরের দু’টি পুজোর ‘থিমে’র দায়িত্ব পেয়েছেন। দেশবন্ধুনগর সর্বজনীন এবং খাপ্রেলবাজার উন্নয়ন কমিটি। দেশবন্ধুনগরে মণ্ডপ হচ্ছে রোমান প্যালেসের আদলে। আর খাপ্রেলবাজারে প্যাগোডা। সোমনাথ, প্রশান্তদের কথায়, “চেষ্টা করছি ভাল কিছু তুলে ধরার। আমাদের কাজ যদি দর্শকদের ভাল লাগে, সেটাই প্রাপ্তি।” আর্ট কলেজের পড়ুয়াদের দিয়ে মণ্ডপ তৈরির ভাবনা কেন? খাপ্রেলবাজারের পুজো উদ্যোক্তা বাদল গিরি, সঞ্জিত ভকতদের কথায়, “আমাদের ছোট বাজেটের পুজো। তার মধ্যেই নতুন কিছু তুলে ধরতে চাই। সেই থেকেই এই ভাবনা। আর্ট কলেজের ছাত্ররা ভাল কাজ করেন। ওঁদের ভাবনার মধ্যেও নতুনত্ব থাকে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিপাইবাজার বয়েজ ক্লাবের মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, থার্মোকল কেটে নকশা তৈরিতে ব্যস্ত মিলন দাস, সুব্রত বেরা। সুব্রত আর্ট কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। মিলন ওই কলেজের প্রাক্তনী। মেদিনীপুর ছাড়াও হলদিয়ার একটি পুজো মণ্ডপের দায়িত্ব পেয়েছেন সুব্রতরা। শালবনির গোবরুর একটি পুজো মণ্ডপও তৈরি হচ্ছে এঁদের ভাবনায়। সিপাইবাজারের মণ্ডপে থাকছে গ্রামবাংলার ছোঁয়া। সঙ্গে কালীঘাটের পট। মিলনের কথায়, “মণ্ডপ যাতে দর্শকদের ভাল লাগে, সকলে মিলে সেই চেষ্টাই করছি।” খড়্গপুর শহরের অভিযাত্রী ক্লাবের মণ্ডপেও রোমান প্যালেসের আদল। এখানে কাজ করছেন বিশ্বরঞ্জন রাজ। বাড়ি দাঁতনের মনোহরপুরে। তাঁকে সহযোগিতা করছেন শুভেন্দু দাস, সত্যজ্যোতি রাজরা। থার্মোকল, প্লাস্টার অব প্যারিস, ফাইবার দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা কারুকাজ। মেদিনীপুর আর্ট কলেজে ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনা করেছেন বিশ্বরঞ্জন। তাঁর কথায়, “হাতের কাজ করতে সব সময়ই ভাল লাগে। পুজোর সময়ে আরও বেশি করে সেই সুযোগ আসে।”
মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মতো শহরেও বেশ কিছু বিগ বাজেটের পুজো হয়। থিমের বাজারে চলে জাঁক-জৌলুসের লড়াই। সেই লড়াইয়ে টেক্কা দেওয়ার ইচ্ছে থেকেই আর্ট কলেজের পড়ুয়াদের হাতে মণ্ডপ তৈরির দায়িত্ব তুলে দিচ্ছে বেশ কিছু পুজো কমিটি। পড়ুয়াদের হাতের ছোঁয়াতেই কোথাও প্রাণ পাচ্ছে এক টুকরো রোম, কোথাও বা চিন। |
|
|
|
|
|