|
|
|
|
সাবেক ধাতু ব্যবহারের বার্তা শোনাচ্ছে মণ্ডপ
রানা সেনগুপ্ত • বর্ধমান |
দরজা-জানলা থেকে বাড়ির আসবাবপত্র, কাঠ দিয়ে সব তৈরি করতে কাটা পড়ছে গাছ। ব্যবহার বেড়েছে ফাইবারেরও। আর এ সবের দাপটে পিছু হঠেছে টিন-অ্যালুমিনিয়াম। সাবেক এই সব ধাতুর ব্যবহার ফেরানোর প্রচারের লক্ষ্যে এ বার এই দুই ধাতু দিয়ে মণ্ডপ গড়ছে বর্ধমানের বড়নীলপুরের লাল্টু স্মৃতি সঙ্ঘ।
জি টি রোডের পাশে এই ক্লাবের যে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে তার উপকরণের তালিকায় সামান্য কিছু বাঁশ বা কাঠ থাকলেও প্রধানত ব্যবহার হচ্ছে টিন এবং অ্যালুমিনিয়াম। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির হেরিয়াবাজারের শিল্পীরা টানা এক মাস ধরে বর্ধমানে টিন-অ্যালুমিনিয়ামের স্তূপকে একটু-একটু করে নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরের আদল দিচ্ছেন। এখানেই প্রথম নয়, এমন উপকরণ দিয়ে আগেও মণ্ডপ গড়েছেন বলে জানালেন তাঁরা। |
|
টিন আর অ্যলুমিনিয়াম দিয়ে সাজছে মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র। |
দুই প্রধান শিল্পী গৌরীশঙ্কর আর কালীশঙ্কর দাস বলেন, “গত বার এমন টিন-অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি মণ্ডপ দেখে তো গোটা হলদিয়া অবাক! তার পর থেকে যে পুজো কমিটি আসছে বরাত দিতে আসছে, আমরা তাদেরই টিন-অ্যালুমিনিয়ামের মন্দিরের কথা বলছি। খোদ পশুপতিনাথ মন্দিরও তো সে সব দিয়েই তৈরি।”
শিল্পী ও পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, মণ্ডপ তৈরিতে টিনের বিভিন্ন আকারের ৬০০টি টুকরো ও প্রায় দেড় কুইন্টাল অ্যালুমিনিয়াম লাগছে। পুজোর পরে এই বিপুল পরিমাণ টিন আর অ্যালুমিনিয়াম জি টি রোডের পাশে জঞ্জাল হয়ে পড়ে থাকবে না তো? পুজো উদ্যোক্তা তন্ময় সামন্ত অবশ্য বলেন, “কে বলেছে, এই টিন আর অ্যালুমিনিয়ামের টুকরো পড়ে থাকবে পথের পাশে? সব আমরা তুলে নিয়ে যাব। এই টিন ও অ্যালুমিনিয়াম তো চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী বা বারাসতে কালীপুজোয় দরকার হবে। এ সব দিয়ে সেখানে মণ্ডপ তৈরি হবে। তবে পুজোর আয়োজকেরা ইচ্ছে করলে সেগুলি বিক্রিও করতে পারেন।”
বড়নীলপুরের এই পুজো কমিটি প্রায় প্রতি বারই পরিত্যক্ত নানা জিনিসপত্র দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করেন। বছর কয়েক আগে মণ্ডপের ভিতরে ও বাইরের নকশায় তাঁরা ব্যবহার করেছিলেন ফ্লাই অ্যাশ। এ বার এত কিছু থাকতে টিন আর অ্যালুমিনিয়ামের মণ্ডপ কেন? তন্ময়বাবুরা বলছেন, “বাজারে এই দুই ধাতুর যথেষ্ট ভাল দাম রয়েছে। বিশেষত অ্যালুমিনিয়ামের। ওই দুই ধাতু থেকে নানা জিনিসপত্র তৈরির কারখানাও রয়েছে অনেক জায়গায়। সেখানে সে সব তৈরি হচ্ছে। কিন্তু মানুষ আগের তুলনায় এই ধাতু দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করা এখন কমিয়ে দিয়েছেন। আমরা মানুষকে শুধু এই কথাটা মনে করিয়ে দিতে চাই, হাল্কা অথচ মজবুত এই সব ধাতু ব্যবহার করলে সব দিক থেকেই উপকার হবে।” |
|
|
|
|
|