গুলিতে জখম যুবকের চিকিৎসায় চাঁদা গ্রামের
রাত জেগে ক্লাবের মণ্ডপ তৈরির তত্ত্বাবধান করার সময় তাঁকে গুলি করেছিল দুষ্কৃতীরা। পুজোর বাজেট কমিয়ে আর স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে চাঁদা দিয়ে গুরুতর জখম ওই যুবককে বাঁচিয়ে তোলার লড়াই শুরু করেছেন এলাকার বাসিন্দা ও ক্লাবের সদস্যেরা। হাতে-পেটে গুলি নিয়ে হাওড়ার ফুলেশ্বরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যুঝছেন শ্রীমন্ত মিদ্যা নামে বছর চব্বিশের ওই যুবক।
ঘটনাটি বাগনানের নবাসন গ্রামের। ওই গ্রামে পুজো করছে স্থানীয় ‘ইয়ংস্টার’ ক্লাব। বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ শ্রীমন্ত-সহ ওই ক্লাবের পাঁচ সদস্য মণ্ডপের তত্ত্বাবধান করছিলেন। সেই সময় সেখানে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছিল সঞ্জয় জানা নামে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বাসিন্দা এক যুবক ও তার এক সঙ্গী। ক্লাব সদস্যদের অভিযোগ, পরিচয় জানতে চাইলে ওই দু’জন হাওড়া-খড়্গপুর শাখার ঘোড়াঘাটা স্টেশনের দিকে দৌড়তে শুরু করে। ক্লাবের সদস্যেরা তাদের তাড়া করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর তারা একটি সাইকেলের গ্যারাজের পিছনে লুকিয়ে পড়ে। সেখানকার কর্মচারীরা চিৎকার শুরু করে দেন।
জখম যুবকের জন্য চাঁদা তোলা হচ্ছে। ছবি: সুব্রত জানা।
ইতিমধ্যে ক্লাবের সদস্যেরাও সেখানে হাজির হন। গ্রামবাসীরাও বেরিয়ে পড়েন। অভিযোগ, এর পরেই পকেট থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে গ্রামবাসী ও ক্লাব সদস্যদের দিকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালাতে থাকে সঞ্জয় ও তার শাগরেদ। গুলি লাগে ক্লাবের সদস্য শ্রীমন্তর। কয়েক জন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। অন্যরা দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করে সঞ্জয়কে ধরে ফেলেন। অন্য জন পালিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, রামনগরে সঞ্জয়ের পোলট্রির ব্যবসা রয়েছে। তার কাছ থেকে একটি নাইনএমএম পিস্তল মিলেছে। পিস্তলের সব ক’টি গুলিই ছোড়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কেন সঞ্জয় নবাসন গ্রামে সশস্ত্র অবস্থায় এসেছিল, তদন্ত করা হচ্ছে। ধৃতের আর এক সঙ্গীকে খোঁজা হচ্ছে। গত ক’দিনে এলাকায় কয়েকটি দোকানের শাটার ভেঙে চুরি হয়েছে। ওই দু’জনও চুরি করতেই এসেছিল, দাবি বাসিন্দাদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীমন্তের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। পরিবারের আয় খুব বেশি নয়। তাই গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে চাঁদা তুলে তাঁর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করছেন ক্লাবের সদস্যেরাই। শুক্রবার সকাল থেকেই স্থানীয় দোকানদার, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। গ্রামবাসীরাও যতটা পারছেন, সাহায্য করছেন। ক্লাবের অন্যতম সদস্য মোহন সাঁতরা বলেন, “এ বার পুজোর বাজেট ছিল ২ লক্ষ টাকা। আমরা ঠিক করেছি, আড়ম্বর কমাব। সেই টাকা শ্রীমন্তর চিকিৎসায় খরচ করা হবে।” আহত যুবকের বাবা নিতাই মিদ্যার কথায়, “এ রকম বিপদ আসবে, ভাবতে পারিনি। গ্রামবাসীরা পাশে দাঁড়ানোয় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছি।” স্থানীয় ওড়ফুলি পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীকান্ত সরকার বলেন, “এলাকায় তিনটি পুজো হয়। প্রতিটি ক্লাব কমিটিকে ডেকে আলোচনা করছি, যাতে কিছু টাকা ওই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া যায়।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.