আপনার সাহায্যে...

প্র: শুনছি বাইপাস এক বার করেও রক্ষে নেই। বছর দশেক পর আবার করতে হচ্ছে?
উ: কম বয়সে পায়ের বা হাতের শিরা বা ধমনি কেটে বাইপাস করা হলে আবার করতে হতে পারে। এগুলো বছর পনেরো পর ব্লক হয়ে যায়।

প্র: একবারেই বিশাল ধাক্কা। আবার হলে সাধারণ মানুষ সামলাবে কী করে?
উ: বয়স ষাটের বেশি হলে কিন্তু একবার বাইপাস করলেই বাকি জীবন চলে যাবে।

প্র: কম বয়স হলে, আবার?
উ: সে ক্ষেত্রে লিমা-রিমা করা হয়।

প্র: সেটা আবার কী ব্যাপার?
উ: লিমা আর রিমা বুকের পেছনের দুটো ধমনি। পায়ের শিরা না কেটে এ দুটো দিয়ে গ্র্যাফটিং করা হয়।

প্র: তাতে সুবিধে?
উ: লিমা আর রিমায় চট করে ব্লক হয় না। তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বছর পর্যন্ত কিছু করার দরকার পড়ে না। ধরুন পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে কারও লিমা রিমা করা হল। তিনি আশি বছর পর্যন্ত ভাল থাকবেন।

প্র: তবে এটা করলেই তো হয়।
উ: এটা জটিল পদ্ধতি। করতে খুব দক্ষতার দরকার হয়। যাঁদের কর্মক্ষমতা অনেক দিন থাকবে, তাঁদের জন্যই এটা করা হয়।


প্র: মানে শুধু কমবয়সিদের জন্যই?
উ: সে রকমই। কিন্তু তাই বলে বয়স কম হলেই চোখ বুজে সবার লিমা রিমা করা যায় না। কয়েকটি ব্যাপার দেখতে হয়। যেমন ৯০% এর কম ব্লক থাকলে লিমা রিমা করা হয় না।

প্র: ৬০% ব্লক থাকলে?
উ: করা হবে না। কম পরিমাণ ব্লকে লিমা রিমা ভাল কাজ করে না। তা ছাড়া কিডনি বা ফুসফুসের সমস্যা থাকলে বা হার্টের ইজেকশন ফ্র্যাকশন কম হলেও লিমা রিমা করা যাবে না।

প্র: ইজেকশন ফ্র্যাকশন কী ব্যাপার?
উ: হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা। এর স্বাভাবিক হার ৭০%। হার্ট অ্যাটাক হলে এটি কমে যায়। কমে ৪০% পর্যন্ত হলেও লিমা রিমা করা যাবে। তার কম হলে নয়।

প্র: জটিল পদ্ধতি। তার মানে সারতেও সময় লাগে?
উ: পাঁচ দিনের মধ্যে রোগী বাড়ি যেতে পারেন। এই অপারেশনে ইনফেকশনের সম্ভাবনাও খুব কম।

প্র: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে?
উ: এক জায়গায় বসে কাজ হলে দশ দিন। আর কায়িক পরিশ্রমের কাজ হলে তিন থেকে চার সপ্তাহ।

প্র: কিন্তু হার্টে ব্লক থাকলে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করলেই তো হয়।
উ: অপারেশন এড়াতে অনেককেই অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করে বেশ কয়েকটি স্টেন্ট বসিয়ে দেওয়া হয় তখনকার মতো। এটা কিন্তু পরে ক্ষতি করে।

প্র: তাই?
উ: সেই রোগীই তিন বছরের মধ্যে ফিরে আসেন, আরও বেশি অসুস্থ হয়ে। ইজেকশন ফ্র্যাকশন কমে যায়। বয়স কম হলেও তখন আর তাঁদের লিমা রিমা করা যায় না। ফলে এক বার বাইপাস করার বছর পনেরো পর আবার বাইপাস। আর স্টেন্ট বসালে নিয়ম করে ক্লোপিড্রিজেল জাতীয় রক্ত তরল রাখার ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। ওষুধ এক দিন বন্ধ করলে স্টেন্টও বন্ধ হতে পারে।

প্র: তবে কি অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা ঠিক নয়?
উ: একটা ব্লক থাকলে অ্যাঞ্জিয়ো করা যেতে পারে। কিন্তু অনেকগুলো স্টেন্ট বসালে হিতে বিপরীত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাইপাস করাই ভাল।

প্র: আগে অ্যাঞ্জিয়ো, পরে বাইপাস, ডাবল ধাক্কা। তবে তো প্রথমেই বাইপাস করিয়ে নিলে ভাল?
উ: না, কিছু ক্ষেত্রে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি ভাল কাজ করে। যেমন দুম করে যাঁদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তাঁদের জন্য তো বটেই। সেখানে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ক্যাথল্যাবে পৌঁছে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করে নিলে হার্ট মাসল মরে না।

প্র: হার্টের সমস্যায় প্রথম থেকে নিয়ম করে ওষুধ খেলেও কি কাটাছেঁড়া পর্যন্ত যেতে হবে?
উ: বুকে ব্যথা হলে ওষুধেই কাজ হয়। তবে ব্যাপারটা নির্ভর করে ইজেকশন ফ্র্যাকশনের ওপর। তিনটি ধমনি ব্লক অথচ ইজেকশন ফ্র্যাকশন ভাল, সে ক্ষেত্রে ওষুধেই কাজ হবে। কিন্তু ওষুধ খাওয়া সত্ত্বেও কারও কারও ইজেকশন ফ্র্যাকশন কমে যেতে পারে। যার ফলে জীবনযাত্রার মানও কমে যায়।

প্র: তখন?
উ: বাইপাস করে নিলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

যোগাযোগ- ৯৮০০৮৮১৭০১

হার্ট অ্যাটাক এড়াতে
• বাড়তি টেনশন বুঝলেই অন্য দিকে মনটাকে ঘুরিয়ে দিন।
• ফাস্টফুড আর তেলমশলাদার খাবার যতটা পারবেন কমিয়ে ফেলুন।
• প্রতি দিন ব্যস্ততার মধ্যেও ৪০ মিনিট হাঁটুন।
• ডায়বেটিস ও প্রেসার ধরা পড়লেই সেগুলোকে কড়া হাতে দমিয়ে রাখুন।
• বছরে এক বার কার্ডিয়োগ্রাম, ইসিজি, লিপিড প্রোফাইল এবং টিএমটি করে নিন নিজের জন্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.